শূন্যের মেলায় হারানো অধিনায়ক

অধিনায়ক, দলপতি, দলনেতা শব্দগুলো একে অপরের সমার্থক শব্দ। ভাবার্থ যিনি একটি দলকে নেতৃত্ব প্রধান করেন। ক্রিকেটে একজন অধিনায়কের কাঁধে থাকে বিপুল পরিমাণ দায়িত্ব। দলকে নেতৃত্ব দিতে যেমন তাঁর মধ্যে যোগাযোগ করার দক্ষতা থাকতে হয়। ঠিক তেমনি থাকতে হয় খেলোয়াড়দের সামর্থ্য বোঝার ক্ষমতা। দলে থাকা প্রত্যেক খেলোয়াড়দের সেরাটা বের করে আনা ছাড়াও ম্যাচের গুরুত্বপূর্ণ সময়ে সঠিক সিধান্ত নিতে পারার সক্ষমতাও থাকতে হয় একজন অধিনায়কের।

অধিনায়ক, দলপতি, দলনেতা শব্দগুলো একে অপরের সমার্থক শব্দ। ভাবার্থ যিনি একটি দলকে নেতৃত্ব প্রধান করেন। ক্রিকেটে একজন অধিনায়কের কাঁধে থাকে বিপুল পরিমাণ দায়িত্ব। দলকে নেতৃত্ব দিতে যেমন তাঁর মধ্যে যোগাযোগ করার দক্ষতা থাকতে হয়। ঠিক তেমনি থাকতে হয় খেলোয়াড়দের সামর্থ্য বোঝার ক্ষমতা। দলে থাকা প্রত্যেক খেলোয়াড়দের সেরাটা বের করে আনা ছাড়াও ম্যাচের গুরুত্বপূর্ণ সময়ে সঠিক সিধান্ত নিতে পারার সক্ষমতাও থাকতে হয় একজন অধিনায়কের।

সর্বোপরি একজন অধিনায়ক একজন খেলোয়াড়। সুতরাং তাঁকে তাঁর নিজের পারফর্মেন্স দিয়েও দলের জয়ে অবদান রাখা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সাধারণত ক্রিকেটের ইতিহাসে অধিকাংশ সফল কিংবা বিফল অধিনায়কেরা ছিলেন ব্যাটার। তাঁরা যেমন দলের জন্যে ব্যাট হাতে বড়সড় ইনিংস খেলে অবদান রেখেছেন ঠিক তাঁর উল্টো চিত্রের অবতারণাও ঘটিয়েছেন শূন্য রানে সাজঘরে ফিরে। আজকে টেস্ট ক্রিকেটে সর্বোচ্চ বার শূন্য রানে সাজঘরে ফেরা অধিনায়কদের পসরা নিয়ে হাজির খেলা ৭১।

  • মহেন্দ্র সিং ধোনি (ভারত)

ভারতীয় ক্রিকেট ইতিহাসে সবচেয়ে সফল অধিনায়ক নির্দ্বিধায় নাম আসবে মহেন্দ্র সিং ধোনির। ২০০৭ সালে যাত্রা শুরু করা প্রথম টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ শিরোপা জয়ের পরে ভারতকে ২০১১ ওয়ানডে বিশ্বকাপও এনে দিয়েছিলেন ধোনি। তাছাড়া ২০১৩তে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিটাও তো এনে দিয়েছিলেন মহেন্দ্র সিং ধোনি।

তবে ধোনি সাদা বলে যতটা না সফল ঠিক তেমন সফলতার দেখা তিনি লাল বলে পাননি। ২০১৪ সালের ৩০ ডিসেম্বর আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে বিদায় জানানো ধোনি টেস্ট ক্রিকেটে আটবার শূন্যরানে আউট হয়েছিলেন। তিনি খেলেছিলেন ৯০টি টেস্ট ম্যাচ এবং একজন উইকেট কিপার ব্যাটার হিসেবে তাঁর রান সংখ্যা ৪৮৭৬। গড় ৩৮.১।

  • হ্যান্সি ক্রনিয়ে (দক্ষিণ আফ্রিকা)

হ্যান্সি ক্রনিয়েকে দক্ষিণ আফ্রিকান এ যাবৎকালে খেলা সকল খেলোয়াড়দের মধ্যে সেরাদের একজন। নিজের ধারাবাহিক পারফর্মেন্স দিয়ে তিনি জায়গা করে নিয়েছিলেন দক্ষিণ আফ্রিকান টেস্ট ও ওয়ানডে দলে। তারপর অতি দ্রুতই তিনি দলের অধিনায়কের দায়িত্ব পেয়ে বনে যান দক্ষিণ আফ্রিকান দ্বিতীয় সর্বকনিষ্ঠ টেস্ট অধিনায়ক।

১৯৯৩-৯৪ এ সময়ে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে খেলা এক টেস্ট সিরিজের তৃতীয় টেস্টে হ্যান্সি ক্রনিয়েকে টেস্ট অধিনায়কের পদ প্রদান করে দক্ষিণ আফ্রিকান ক্রিকেট বোর্ড। তারপর ক্রনিয়ে ৫৩টি টেস্টে অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করে ২৭টি টেস্টে জয়ে এনে দেন প্রোটিয়াদের। একজন সফল অধিনায়ক হিসেবে তাঁকে বিবেচনা করা যথার্থই বটে। ব্যাট হাতেও উজ্জ্বল ছিলেন ক্রনিয়ে। নিজের খেলা ৬৮ টেস্টে তাঁর গড় ৩৬ এর একটু বেশি এবং রানের সংখ্যা ৩৭১৪। তবে টেস্ট ক্যারিয়ারের মোট আটবার তিনি সাজঘরে ফিরেছিলেন কোন রান না করেই।

  • মাইকেল আথারটন (ইংল্যান্ড)

নব্বইয়ের দশকে ইংল্যান্ড টেস্ট ক্রিকেট দলের মেরুদণ্ড ছিলেন সে সময়ের অধিনায়ক মাইকেল আথারটন। তিনি খেলেছিলেন মোট ১১৫টি টেস্ট। কিন্তু দলের ব্যাটিং এর মেরুদণ্ড এই ব্যাটার দ্রুতই অবসরে চলে গিয়েছিলেন নিজের মেরুদণ্ডের সমস্যার জন্যে। আয়রোনিকাল! তবে তাঁর আগে অবশ্য তিনি ৫৪ টেস্টে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন ইংল্যান্ডকে।

নিজের ব্যাটিং ক্যারিয়ারের ১১৫ ম্যাচে তিনি ১৬টি শতক এবং ৪৬টি অর্ধশতক হাঁকিয়েছেন। অধিনায়ক হিসেবে সামনে থেকে নেতৃত্ব দেওয়ার এক যথাযথ উদাহরণ। প্রায় ৩৮ ছুঁইছুঁই গড়ে তিনি রান করেছেন ৭৭২৮ রান। তবে তাঁর টেস্ট ক্যারিয়ারে মাঝেসাঝে উঁকি দেয় আট বার শূন্য রানে আউট হবার পরিসংখ্যান।

  • গ্রায়েম স্মিথ (দক্ষিণ আফ্রিকা)

ক্রিকেট ইতিহাসে সর্বাধিকবার টেস্টে অধিনায়কত্ব করার রেকর্ডের মালিক গ্রায়াম স্মিথ। তিনি দক্ষিণ আফ্রিকান ক্রিকেট দলের অধিনায়কের দায়িত্ব পান অতি অল্প বয়সেই। নিজের মানসিক দৃঢ়তা ও ব্যাটিং স্কিলের উপর ভর করে তিনি নিজের খেলা ১১৭ টেস্টের মধ্যে ১০৯টি ম্যাচে অধিনায়কত্ব করেছেন।

তিনি দক্ষিণ আফ্রিকার ৫৩ টেস্ট জয়ের নেতৃত্ব দিয়েছেন সামনে থেকে। তাঁর ব্যাটিং গড় ছিল ৪৮.২। ১১৯ টেস্টে প্রায় দশ হাজার রান করেছিলেন বা-হাতি এই ব্যাটার। এত অর্জনের মাঝে টেস্টে অধিনায়ক হিসেবে সর্বোচ্চ ডাক মারাদের তালিকায় তিনি রয়ছে তিন নম্বর স্থানে। দশবার তিনি সাজঘরের পথ ধরছিলেন রানে খাতা সাদা রেখে।

  • বিরাট কোহলি (ভারত)

এ সময়ের সেরা ব্যাটারদের একজন বিরাট কোহলি। ধারণা করা হতো তিনিই একমাত্র ব্যাটার যিনি কিনা ভাঙ্গতে পারবেন শচীন টেন্ডুলকারের শতকের শতক হাঁকানোর রেকর্ড। নানন্দিক এই ব্যাটার এখনও দায়িত্ব পালন করছেন ভারত টেস্ট অধিনায়ক হিসেবে। তবে দ্বিতীয় সর্বোচ্চবার ডাক মারা ব্যাটার বিরাট কোহলি। মোট দশবার টেস্টে ডাক মেরেছেন তিনি।

২০১৯ সাল থেকে এখন অবধি শতক খরায় ভুগছেন বিরাট কোহলি। শীঘ্রই তিনি রানে ফিরবেন এমনটাই প্রত্যাশা করে দর্শক সমর্থকেরা। কেননা তাঁর মতো ব্যাটারের শতক খরা ঠিক মানায় না। ৫১ গড়ে তাঁর রান সংখ্যা ৭৭৬৫। এখন পর্যন্ত তাঁর শতকের সংখ্যা ৭০টি।

  • স্টিফেন ফ্লেমিং (নিউজিল্যান্ড)

নিউজিল্যান্ডের সর্বকালের সেরা ব্যাটারদের মধ্যে একজন হিসেবে গণ্য করা হয় স্টিফেন ফ্লেমিং-কে। তিনি ছিলেন ব্ল্যাকক্যাপসদের অধিনায়ক। এ সময়ে তিনি সর্বাধিকবার ডাক মেরে জায়গা করে নিয়েছেন তালিকার শীর্ষে। নিউজিল্যান্ডের হয়ে ১১১ টেস্ট খেলা ফ্লেমিং রান করেছেন ৭০০০। তাঁর গড় ৪০.০৬।

তাঁর নেতৃত্ব নিউজিল্যান্ড ২৮টি টেস্ট জিতেছে। তাই তাঁকে নিউজিল্যান্ডের সবচেয়ে সফল অধিনায়ক হিসেবে বিবেচনা করা হয়। তবে সর্বাধিক তেরবার শূন্যরানে ড্রেসিং রুমে ফেরার রেকর্ড তাঁর দখলেই রয়েছে।

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...