ট্যাক্সি ড্রাইভারের ঘরে জন্ম, পরিবারের খরচ সামলাতেই বাবা হিমশিম খায়; তবু মুকেশ কুমারের স্বপ্ন দেখা থেমে যায়নি। চামড়ার গোলক হাতে আকাশে উড়তে চেয়েছিলেন, সাত সাগর আর তেরো নদী পেরিয়ে সেই স্বপ্ন পূরণ করেছেন তিনি। এখন তো ভারতীয় দলেও তাঁর নিয়মিত আনাগোনা দেখা যায়, তাঁকে ঘিরে বোলিং আক্রমণ সাজান কোচ।
সবশেষ জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে পঞ্চম টি-টোয়েন্টিতে ভারতীয় বোলিং বিভাগকে নেতৃত্ব দিয়েছেন এই পেসার। সবমিলিয়ে তিন ওভার তিন বল করেই চার উইকেট শিকার করেছেন তিনি, বিনিময়ে খরচ করেছেন মাত্র ২২ রান।
এদিন নিজের প্রথম ওভারেই ওয়েসলে মাধেভেরের উইকেট তুলে নেন এই ডানহাতি; জিম্বাবুইয়ান ওপেনারের স্ট্যাম্প উপড়ে ফেলেন। এরপর ব্রায়ান বেন্নেট কাউন্টার অ্যাটাকের পথ বেছে নিয়েছিলেন, কিন্তু তাঁকেও টিকতে দেননি তিনি। দুই ওভারে দুই উইকেট তুলে নেয়ার পর তৃতীয় ওভারেও উদযাপনের উপলক্ষ চলে এসেছিল তাঁর কাছে, কিন্তু নো-বল হওয়ায় সেই যাত্রায় বেঁচে যান মারুমানি।
ব্যক্তিগত শেষ ওভারে আরো বিধ্বংসী এই বোলার, পর পর দুই বলে ফারাজ আকরাম এবং রিচার্ড এনগারাভাকে সাজঘরের পথ দেখান। তাতেই বড় জয় নিশ্চিত হয় ভারতের।
ছোটবেলা থেকে ক্রিকেট বলের সাথে বন্ধুত্ব গড়ে তোলা মুকেশ অবশ্য এত সহজে প্রতিযোগিতামূলক ক্রিকেটে পা রাখতে পারেননি। প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে তিনি টিকতে পারবেন না এমন মন্তব্য শুনতে হয়েছিল। কিন্তু আজীবন দারিদ্র্যের সাথে লড়ে আসার পর এতটুকুতেই থেমে গেলে সেটা তাঁকে মানাতো না। তাই কঠিন পরিশ্রম করে সব প্রতিকূলতা জয় করেছেন; কয়েক বছরের ব্যবধানে রাজ্য দল আর ভারত এ দলের গুরুত্বপূর্ণ সদস্য হয়ে উঠেন।
আইপিএলে সাড়ে পাঁচ কোটি রুপিতে দিল্লি ক্যাপিটালস যখন এই তারকাকে দলে ভেড়ায় তখন প্রথমবারের মত লাইমলাইটে আসেন তিনি। এরপর আর তাঁকে পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। বয়সটা একটু বেশিই, ক্যারিয়ারের আর খুব বেশি বাকি নেই। তবু শেষ সময়ে নিজের সর্বোচ্চ উজাড় করেই খেলতে চাইবেন নিশ্চয়ই।