অভাগা যেদিকে যায়, নদী শুকিয়ে যায়। এই প্রবাদের জলজ্যান্ত উদাহরণ মুশফিকুর রহিম। ছন্দে ফেরার পথেই ছিলেন। কিন্তু দুর্ভাগা মুশফিককে ফিরতে হয়েছে রানআউটে কাঁটা পড়ে। বহুদিন বাদে বড় ইনিংস খেলার পথে হোঁচট খেলেন তিনি। কোন কিছুই যেন পক্ষে নেই তার। যদিও এভাবে আউট হওয়ার সিদ্ধান্তও ছিল তারই।
১৪ ইনিংস ধরে মুশফিকুর রহিমের ব্যাটে নেই কোন অর্ধশতক। দেশের অন্যতম সেরা ব্যাটার তিনি- সে বিষয়ে সন্দেহ নেই। তার পরিশ্রম নিয়েও প্রশ্ন তোলার বিন্দুমাত্র অবকাশ নেই। তবে সাম্প্রতিক সময়ে ব্যাট হাতে ভীষণ ধুকছিলেন অভিজ্ঞ এই ব্যাটার। টেস্ট ক্রিকেটে একেবারেই ধূসর হয়ে গিয়েছিল তার পারফরমেন্স।
সে ধূসরতা কাটিয়ে রঙিন ভুবনে ফেরার আভাস দিচ্ছিলেন জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে চট্টগ্রাম টেস্টে। ১৫ তম ইনিংসে এসে তার ব্যক্তিগত সংগ্রহ ছুঁয়েছে ৪০ রানের গণ্ডি। বেশ সাবলীলভাবেই তিনি ব্যাটিং করে যাচ্ছিলেন, শুরু থেকেই। এমনকি বলের মেরিট বুঝে ছক্কা হাকাতেও দেখা গেছে তাকে।
বেশ আত্মবিশ্বাস নিয়ে, কর্তৃত্বের সাথে ব্যাটিংটা করছিলেন মুশফিক। কিন্তু হুট করেই তিনি একটা ঝুঁকিপূর্ণ রান নেওয়ার জন্যে ছুট লাগান। কিন্তু শেষ অবধি আর তিনি পপিং ক্রিজের সাদা লাইন টপকাতে পারেননি। দারুণ এক ডাইরেক্ট থ্রো-তে আউট হয়ে ফেরেন মুশফিক।
এক্ষেত্রে খানিকটা অভাগাই বলা যেতে পারে। বহুদিন বাদে সেই ফাইন টাচটা ফেরত এসেছিল। উইকেটের চারিদিকে শট খেলছিলেন তিনি। লেট কাট থেকে শুরু করে সুইপ শট- প্রায় সবকিছুই বাস্তবায়িত হচ্ছিল দারুণভাবে। অন্তত মনেই হচ্ছিল এই ইনিংসটি বেশ খানিকটা লম্বা করতে চলেছেন মুশফিক। কিন্তু শেষ অবধি আর হল না তা।
তবে তার এই সাবলীল ব্যাটিং একটু হলেও স্বস্তির সঞ্চার ঘটাচ্ছে। বাংলাদেশের টেস্ট দলে মুশফিকুর রহিম ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ। তার ব্যাটে বড় রান সবসময়ই প্রত্যাশিত। সেই রানগুলো বাংলাদেশকে নিজেদের পক্ষে ফলাফল নিয়ে আসতেও সহয়তা করে।
বাকি দুই ফরম্যাট ছেড়েছেন, এখন শুধু টেস্টটাই খেলছেন। বাকি থাকা দিনগুলোতে তার সেরা সার্ভিস যেমন বাংলাদেশ দল চায়, ঠিক তেমনি দর্শকরাও উন্মুখ হয়ে রয়েছে অপেক্ষায়। গোধূলি লগ্নে আরও বর্ণিল ও দৃষ্টিনন্দন হবেন মুশফিক, তেমন কামনা সকলের।