সব বদলে যায়। সময় এগোয়, পরিবেশ পাল্টায়, বদলে যায় দেশও। বদলান না কেবল একজনই – মুশফিকুর রহিম। বাংলাদেশ ক্রিকেটের সবচেয়ে অভিজ্ঞ মানুষটার একাগ্রতা আর পারফরম্যান্সে কোনো ভাঁটা আসে না।
সেঞ্চুরি করে বাতাসের মাঝে ব্যাট ঝাকিয়ে তিনি যে উদযাপনটা করলেন তাতেই তো সবটা বোঝা যায়। বোঝা যায় আজও তিনি কতটা ক্ষুদার্থ। ৮৯ তম টেস্টে এসে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ মুশফিক পেয়ে গেলেন ক্যারিয়ারের একাদশ সেঞ্চুরি।
পাকিস্তানের বিপক্ষে এটাই তাঁর প্রথম সেঞ্চুুরি। রাওয়ালপিন্ডির পরিপূর্ণ ব্যাটিং উইকেটের শতভাগ কাজে লাগিয়ে তিনি পৌঁছে গেলেন আরেকটা স্বপ্নের মাইলফলকে। এই যাত্রায় তাঁর সঙ্গী হয়েছে মাত্র ১২ টা বাউন্ডারি। দেশের বাইরে পাঁচটি সেঞ্চুরি করা একমাত্র বাংলাদেশি ব্যাটার তিনি।
বাকিটা রান মুশফিক নিয়েছেন দৌঁড়ে। মানে বয়স যাই হোক, তিনি আজো দলের সবচেয়ে ফিট ক্রিকেটার। একদিন আগেই আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ১৫ হাজার রানের ক্লাবে নাম লেখানো মুশফিকের রান করায় কোনো ক্লান্তি নেই। ৩৭ বছর বয়সে এসেও ক্রিকেটের প্রতি এতটা নিষ্ঠা দেখাতে পারেন ক’জন!
বাংলাদেশ ক্রিকেটে সিনিয়র ক্রিকেটারদের নিয়ে আলোচনা সমালোচনার শেষ নেই। কেউ রাজনীতিতে জড়িয়ে ক্রিকেটকে গৌণ করে দেন। বাইশ গজ নাকি বোর্ড – এমন দ্বিধায় ভোগেন কেউ কেউ, কারও আবার ফিটনেস ইস্যুতে দলে জায়গা নিয়ে ওঠে প্রশ্ন। কিন্তু, এই সব কিছু থেকে দূরে মুশফিক।
বাইশ গজই যে তাঁর পারফর্ম করার সেরা মঞ্চ – সেটাই তিনি বুঝিয়ে দিয়ে যান বারবার। পারফরম্যান্সের জন্য, প্রতিটা রানের জন্য মুশফিকের এই তাড়নাই তো তাঁকে অনন্য করে তুলেছে।
তবে, যত যাই হোক – নক্ষত্রেরও তো শেষ আছে। তাই মুশফিকও হয়তো আর খুব বেশিদিন খেলতে পারবেন না আন্তর্জাতিক ক্রিকেট। এর মধ্যেই অবশ্য তিনি সাতটি ভিন্ন টেস্ট প্রতিপক্ষের বিপক্ষে সেঞ্চুরি করে ফেলেছেন। বাকি রয়েছে কেবল – অস্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ড, দক্ষিণ আফ্রিকা ও আফগানিস্তান।
কে জানে, হয়তো এই আক্ষেপটা নিয়েই একদিন সাদা পোশাককে বিদায় বলে দেবেন মুশফিক। তবে, যাওয়ার আগে আক্ষেপ যতটা কমাতে পারেন – ততই বাংলাদেশ ক্রিকেটের মঙ্গল।