‘মুস্তাফিজকে আমি সারাজীবনই চাইবো আমার টিমে’ – কোনরকম রাগঢাক না রেখেই এই কথাগুলোই বলেছেন কুমিল্লার কোচ মোহাম্মদ সালাউদ্দিন। তার দলে মুস্তাফিজুর রহমান যে ঠিক কতটা গুরুত্বপূর্ণ- তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। চোট কাটিয়ে মুস্তাফিজ ফিরেছেন অনুশীলন। ফাইনালের মঞ্চে তাই কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স তাদের তুরুপের তাসকে পাচ্ছে দলে।
চট্টগ্রাম পর্বে সতীর্থের ব্যাট থেকে আসা বলে গুরুতর আহত হয়েছিলেন মুস্তাফিজুর রহমান। অস্ত্রপচার, নিবিড় পর্যবেক্ষণের সময়টা পার করেছেন তিনি। তবুও খেলা হয়ে ওঠেনি তিনটি গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচ। প্রথম কোয়ালিফায়ারে অন্ততপক্ষে তার অনুপস্থিতি দারুণ ভুগিয়েছে দলকে। মিরপুরের উইকেটে মুস্তাফিজ ঠিক কতটুকু কার্য্যকর- তার আর বলার অপেক্ষা রাখে না।
আফসোস আর অন্ততপক্ষে করতে হচ্ছে না কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সকে। তিনি ফিরছেন ফাইনালেই। কোচ সালাউদ্দিন তার ফেরা সম্পর্কে বলেন, ‘হ্যা ইনশাআল্লাহ সে (মুস্তাফিজ) খেলবে।’ এতটা নির্ভার হয়ে বলার কারণও পরিলক্ষিত হয়েছে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের অনুশীলনে। কেননা নিজের চেনা ছন্দেই যে মুস্তাফিজ অনুশীলন করে গেছেন।
ইয়োর্কার লেন্থে বল ফেলেছেন বেশ কয়েকবার। গুড লেন্থের মার্কারও উড়িয়েছেন তিনি বল হাতে। এসবই আসলে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের জন্যে স্বস্তির কারণ। কেননা স্বরুপে মুস্তাফিজ শিরোপা জয়ের অন্যতম চাবিকাঠি। তাছাড়া এবারের বিপিএলে মুস্তাফিজ যে অন্যতম উইকেট শিকারি।
কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের হয়ে নয় ম্যাচে মাঠে নেমেছেন বা-হাতি এই বোলার। ১১টি উইকেট নিয়েছেন তিনি দলের পক্ষে। কুমিল্লার দ্বিতীয় সর্বোচ্চ উইকেট শিকারি। অভিজ্ঞতায় পূর্ণ মুস্তাফিজ বল হাতে কুমিল্লাকে নির্ভারই রাখবে। কেননা চার বারের চ্যাম্পিয়ন দলটির এবারের পেস আক্রমণ যথেষ্ট তরুণ।
তরুণ মুশফিক হাসান ও সদ্য অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ খেলে আসা রোহানাত দৌল্লা বর্ষণরা একেবারেই যে নিরাশ করেছেন তা নয়। তবে যেকোন ফাইনালই বেশ স্নায়ুচাপের জন্ম দেয়। মুশফিক-বর্ষণরা সেই চাপ সামলে নেওয়ার জন্যে যথেষ্ট প্রস্তুত নন।
সেদিক বিবেচনায় মুস্তাফিজের ফেরাটা কুমিল্লা ফ্রাঞ্চাইজির জন্যে দারুণ স্বস্তির। দিনশেষে যেকোন দলই চাইবে শিরোপা জিততে। শিরোপা জেতার জন্যে নিজেদের কাছে থাকা সেরা অস্ত্রকেও তো ব্যবহার করা চাই। ফরচুন বরিশাল যে অন্যদিকে ডেভিড মিলারকেও রেখে দিয়েছেন। তারাও যে শিরোপা জিততে মড়িয়া।
এখন দেখবার পালা শেষ অবধি জয়ের পাল্লা ভারি হয় কোন দলের। এর আগে একবারও শিরোপার স্বাদ পায়নি ফরচুন বরিশাল। অন্যদিকে দলে থাকা তামিম ইকবাল, মুশফিকুর রহিমরাও শিরোপা ছুঁয়ে দেখেননি। তাদেরকে হতাশায় ডুবিয়ে পঞ্চমবারের মত শিরোপা উল্লাস করতে চায় কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স।
তাদের কোচ সালাউদ্দিন বলেন, ‘দুইটা টিমের সবাই তো ট্রফি চাইবে। আমি কি মুশফিকদের বলব, যাও মুশফিক ট্রফিটা নিয়ে নাও? সবাই তো ট্রফি জিততে এসেছে। সবাই তো ট্রফির জন্যে খেলতে এসেছে, আমরাও এসেছি। কেউ কাওকে ছাড় দেবে না এখানে।’