ফুটবলের জগতে, তিনজন প্রতিভাবান ম্যানেজার—হ্যান্সি ফ্লিক, পেপ গার্দিওলা, এবং লুইস এনরিকে। এই তিনজন প্রতিভাবান ম্যানেজারের মধ্যে হানসি ফ্লিক এবং লুইস এনরিকে ইতোমধ্যে জাতীয় দল ম্যানেজ করার সুযোগ পেয়েছেন।
হ্যান্সি ফ্লিক জার্মানিতে বায়ার্ন মিউনিখের আক্রমণাত্মক এবং শক্তিশালী স্টাইল প্রতিষ্ঠা করেন। এরপর তিনটি শিরোপা জিতেছিলেন, যা খুব কম ম্যানেজারই করতে পারেন। এরপর তাকে জার্মান জাতীয় দলকে পুনরুজ্জীবিত করার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল, একাধিক হতাশাজনক টুর্নামেন্টের পর। তবে তিনি দ্রুত বুঝতে পারলেন যে জাতীয় দল পরিচালনা করা ক্লাব পরিচালনার মতো নয়।
জটিল কৌশল শেখানোর জন্য সময়ের অভাব ছিল, আর দল গঠনের ক্ষেত্রে নিজের মত খেলোয়াড় নির্বাচন করার সুযোগও ছিল না। জার্মান খেলোয়াড়রা বিভিন্ন ক্লাবের ভিন্ন কৌশল থেকে আসতেন। ফলে ফ্লিকের জন্য একত্রিত করে একটি সুশৃঙ্খল দল তৈরি করা কঠিন হয়ে পড়ে।
অন্যদিকে লুইস এনরিকে, বার্সেলোনায় যিনি পজিশনাল এবং হাই প্রেস খেলার জন্য পরিচিত ছিলেন, স্পেন জাতীয় দলের দায়িত্বে ছিলেন। কিন্তু বর্তমান স্প্যানিশ প্রজন্ম সেই স্বর্ণযুগের খেলোয়াড়দের মতন অভিজ্ঞতা বা দক্ষতা অর্জন করেনি।
এনরিকের কৌশলে আস্থা এবং অভিজ্ঞতার প্রয়োজন ছিল—একটি গতি নির্ধারণ, কখন প্রেস করতে হবে এবং কখন আক্রমণে যেতে হবে। তবে বিভিন্ন কৌশল থেকে আসা খেলোয়াড়দের নিয়ে এই অভিন্নতার অভাবে, তার হাই প্রেস এবং পজিশানাল পরিকল্পনাগুলো ভেঙে পড়ছিল।
শেষ পর্যন্ত, এই দুই ম্যানেজার একই বিষয়ে উপলব্ধি করলেন: ক্লাবের সাফল্য গড়ে ওঠে নিরন্তর প্রশিক্ষণ, নির্দিষ্ট একটি রোস্টার, এবং একটি নির্দিষ্ট খেলার ছন্দের ওপর। কিন্তু জাতীয় দলগুলোর ক্ষেত্রে কৌশলগুলোকে সহজে মানিয়ে নিতে হয়, কারণ খেলোয়াড়রা অল্প সময়ের জন্যই একত্রে থাকে। তাদের মতো এমন কঠোর এবং কৌশলী ম্যানেজারদের দরকার সময় এবং ধৈর্যশীলতা।
তাদের কিছু নির্দিষ্ট ধরণের খেলোয়াড় এবং দলের মধ্যে সামঞ্জস্যতা খুবই প্রয়োজন। তারা চায় দলটিকে একটি পরিবারের মতো সাজিয়ে নিতে। দুই ম্যানেজারই বুঝলেন যে জাতীয় দলে সাফল্য পাওয়া মানে ক্লাবের সফলতাকে কেবল পুনরাবৃত্তি করা নয়; এটি এক নতুন কৌশল, ধৈর্য, এবং মনের ভাবনার প্রয়োজন।
সম্প্রতি ব্রাজিলের ম্যানেজার হিসেবে পেপ গার্দিওলাকে নিয়ে প্রচুর শোরগোল চলছে। তার মতাদর্শও অন্য দুইজন ম্যানেজারের মতই। তিনিও পছন্দ করেন তার নিজের মতাদর্শে নিজের দলকে তৈরি করে নিতে। তার কৌশলে নিজের খেলোয়াড়দের পারদর্শী করে তুলতে। কিন্তু এই প্রক্রিয়াটি তিনি কোনো জাতীয় দলে খাটাতে পারবেন না। জাতীয় দলে সে ক্লাব লেভেলের মতো প্রয়োজনীয় সময় এবং পর্যাপ্ত সম্পদ পাবেন না তার দল গঠন করার জন্য।
গার্দিওলাও যদি কখনো জাতীয় দলে আসেন, তারও কি একই দশা হবে! নাকি সবাইকে বুড়ো আংগুল দেখিয়ে লিখবেন কোনো নতুন ইতিহাস?