এশিয়া কাপে খেলার উদ্দেশ্যে ইতোমধ্যে উড়াল দিয়েছে বাংলাদেশ দল। সেই সাথে আকাশ ডানা মেলেছে কিছু স্বপ্ন আর প্রত্যাশা। অবশ্য ইনজুরির কারনে শঙ্কার মেঘও জমা হয়েছে। কেননা ইনজুরির কারনে বেশ কয়েকজন গুরুত্বপূর্ণ সদস্য দলে জায়গা পাননি। বাদ পড়া ক্রিকেটারদের মধ্যে আছেন ইনফর্ম নুরুল হাসান সোহানও। বাংলাদেশের দুর্বলতা ফিনিশিংয়ে, আর এই জায়গাতে কিছুটা হলেও ভরসা দিয়েছিলেন তিনি।
যদিও এশিয়া কাপে লড়তে হবে না নুরুল হাসান সোহানকে, তবে তাকে অদৃশ্য প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে যুদ্ধে নামতে হবে। ফিট হয়ে উঠার লড়াই, ব্যাটিং আর উইকেট কিপিংয়ের ছন্দ ধরে রাখার লড়াই।
টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশের নড়বড়ে পারফরম্যান্সের কারণে স্কোয়াডে পরিবর্তনের একটা দাবি সবসময়ই ছিল। সর্বশেষ জিম্বাবুয়ে সফর উপলক্ষে তাই সিনিয়রদের সবাইকে বাদ দিয়ে নতুন অধিনায়কের নেতৃত্ব তারুণ্য নির্ভর দল তৈরি করেন নির্বাচকরা। আর নতুন অধিনায়ক করা হয়েছিল নুরুল হাসান সোহানকে।
সাহসী ক্রিকেট খেলার কথা দিয়েছিলেন বাংলাদেশের নতুন টি-টোয়েন্টি অধিনায়ক নুরুল হাসান সোহান। প্রতিজ্ঞা ভঙ্গ করেননি তিনি । স্বাগতিকদের বিপক্ষে প্রথম টি-টোয়েন্টিতে পরাজয় নিশ্চিত হওয়ার আগ পর্যন্ত আক্রমণ করেছেন বোলিং লাইন আপের উপর। বলা যায়, ক্যাপ্টেন লিডিং ফ্রম দ্য ফ্রন্ট।
এরপরের ম্যাচে দল জিতে যাওয়ায় আর ব্যাটিংয়ে নামতে হয়নি সোহানের। ভাগ্যের কি নির্মম পরিহাস, সে-ই ম্যাচেই হাসান মাহমুদের বলে কিপিং করতে গিয়ে হাতে আঘাত পান তিনি। আর এরই সাথে ছিটকে যান ক্রিকেট থেকে। যেতে হয় ছুরি-কাঁচির নিচে। শুরুতে হালকা চোট মনে হলেও প্রায় একমাসের বিশ্রামে যেতে হয়েছে এই ডানহাতিকে। স্বাভাবিকভাবেই তাই বাদ পড়েছেন এশিয়া কাপের দল থেকে।
অথচ টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে আয়োজিত এবারের এশিয়া কাপে বাংলাদেশের অন্যতম ভরসা ছিলেন নুরুল হাসান সোহান। তাঁর আগ্রাসন আর দারুণ ফিনিশিং সামর্থ্য তাকে টি-টোয়েন্টি দলে প্রায় অটো চয়েজ সদস্যে পরিণত করেছিল৷ কিন্তু ইনজুরির কারনে বাদ পড়ায় আবার শুরু করতে হবে শূণ্য থেকে।
ঢাকা প্রিমিয়ার লিগের (ডিপিএল) এবারের আসরে দুর্দান্ত পারফরম্যান্স করেছিলেন নুরুল হাসান সোহান। সুপার সিক্সে বেশ কয়েকটি ম্যাচে শেখ জামালকে একা হাতে ম্যাচ জিতিয়েছিলেন তিনি। তারই পুরস্কার হিসেবে ফিরেছিলেন জাতীয় দলে, আর হিসেবের মারপ্যাচে কাপ্তানির দায়িত্বও পেয়েছিলেন।
কিন্তু অতীতে তাকানোর সময় কোথায়, সোহানকে ব্যস্ত থাকতে হচ্ছে পুনর্বাসন প্রক্রিয়ায়। সতীর্থরা যখন মহাদেশীয় মঞ্চে লাল-সবুজের জার্সি গায়ে ম্যাচ খেলবেন, সোহানকে তখন থাকতে হবে জিমে। কবে নাগাদ পুরোপুরি ফিট হয়ে উঠতে পারবেন সেটা এখনো জানা যায়নি। তাছাড়া ইনজুরি কাটিয়ে ফেরার পর ব্যাটিংয়ে আগের সেই ধার থাকবে কি না সেটাও বড় প্রশ্ন।
নুরুল হাসান সোহানকে তাই জাতীয় দলের ফেরার প্রক্রিয়া আবার প্রথম থেকে শুরু করতে হবে। রানিং আর হালকা ব্যায়ামের মাধ্যমে ফিট হওয়ার পাশাপাশি ব্যাটে মরচে ধরা ঠেকাতে হবে তাকে। এক্ষেত্রে অবশ্য সোহানের সঙ্গী হতে পারেন লিটন দাস। বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে টেকনিক্যালি সবচেয়ে সেরা ব্যাটার লিটন দাস, তিনিও আছেন পুনর্বাসন প্রক্রিয়ার মাঝে। তাই দুই উইকেট কিপার ব্যাটসম্যান একে অপরকে সাহায্য করলে হয়তো বিরক্তিকর এই ভিন্নধর্মী সংগ্রামের পথ পাড়ি দেয়া সহজ হবে।
এশিয়া কাপের পরেই আছে পাকিস্তান এবং নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি ত্রিদেশীয় সিরিজ। এরপর আবার বিশ্বকাপ – এসব বড় বড় টুর্নামেন্টে নুরুল হাসান সোহানের উপর আস্থা রাখতে চায় টিম ম্যানেজমেন্ট আর ভক্ত-সমর্থকরা। সোহান নিজেও সেটা জানেন, তাই দ্রুতই বাইশ গজে ফিরতে উন্মুখ এই ক্রিকেটার।