প্রথমবারের মত দেশের বাইরে অনুষ্ঠিত হয়েছে আইপিএলের নিলাম। অন্য অনেক তরুণের মত চোখে স্বপ্ন আর মনে আশা নিয়ে সেখানে নিজের নাম দিয়েছিলেন কুমার কুশাগ্রা। এরপর বুম! তাঁকে নিয়ে রীতিমতো যুদ্ধ হয়েছে ফ্রাঞ্চাইজিগুলোর মধ্যে, শেষপর্যন্ত ৭.২০ কোটি রুপির বিনিময়ে দিল্লি ক্যাপিটালস জিতেছে সেই যুদ্ধে।
কে এই কুমার কুশাগ্রা এর উত্তর খুঁজতে গেলে প্রথমেই কানে আসবে ‘নেক্সট’ মহেন্দ্র সিং ধোনি। মাত্র ১৯ বছর বয়সে পাওয়ার হিটিং আর টেকনিকের অপূর্ব সমন্বয় দেখা গিয়েছে তাঁর ব্যাটিংয়ে। আর সেজন্যই ভারতের অন্যতম সেরা অধিনায়কের সঙ্গে উচ্চারিত হচ্ছে এই নামটা।
জামশেদপুর থেকে উঠে আসা এই ক্রিকেটারের প্রথম কোচ অবশ্য বাইরের কেউ নন, তাঁর বাবা শশীকান্তই ছেলেকে প্রথম ব্যাট বলের দীক্ষা দিয়েছিলেন। ছেলের ক্রিকেটের উন্নয়নে তিনি নিজের সর্বোচ্চ নিংড়ে দিয়েছেন, এমনকি বব উলমারের ‘ক্রিকেটের শিল্প ও বিজ্ঞান’ বইটির সাহায্য নিয়ে প্রশিক্ষণ দিয়েছেন কুমারকে।
তবে তারকা খ্যাতির শুরুটা হয়েছিল এই বছরের শুরুতে; সৈয়দ মুশতাক আলী ট্রফিতে ধারাবাহিক পারফরম্যান্স করে লাইমলাইটে উঠে আসেন কুশাগ্রা। সেই আসরে ঝাড়খন্ড রাজ্য দলের হয়ে ম্যাচ পরিস্থিতি অনুযায়ী দারুণ ব্যাটিং করেছিলেন তিনি; এরপর বিজয় হাজারে ট্রফিতেও বড় রানের দেখা পান, যা তাঁকে প্রতিভাবান ব্যাটার হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করে।
এখন পর্যন্ত ১১টি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলা এই তরুণের অর্জন ১৪০ রান, সেটাও আবার ১১৭.৬৪ স্ট্রাইক রেটে। আদতে সাদামাটা পরিসংখ্যান হলেও খেলা দেখা প্রতিটা চোখ জানে তাঁর ব্যাটিংয়ে কতটা পরিপক্বতা রয়েছে – সবমিলিয়ে তাই বড় অংকের পারিশ্রমিক যৌক্তিক বটে।
তাঁর সামর্থ্যে সৌরভ গাঙ্গুলি এতটাই মুগ্ধ হয়েছিলেন যে, দশ কোটি রুপির বেশি হলেও দিল্লি ক্যাপিটালস দলে নিবে তাঁকে এমন প্রতিজ্ঞা করেন। ধোনির সঙ্গে এই উদীয়মান তারকার তুলনা যে এমনি এমনি দেয়া হয়নি, সেটাই প্রমাণ করেছে গাঙ্গুলির অগাধ ভরসা।
অবশ্য প্রাইজ ট্যাগ আর ভরসার ভারে নুয়ে পড়বেন কি না সেটা দেখার বিষয়। তবে দিল্লি নিশ্চয়ই তাঁকে সময় দিবে, সেরাটা বের করে আনবে। সেক্ষেত্রে হয়তো সুরিয়াকুমার, রিংকু সিংদের মত নতুন আরেকজন টি-টোয়েন্টি স্টার পাবে ভারত।