রাজীব গান্ধী আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে সানরাইজার্স হায়দ্রাবাদ ঝড় তুলবে, তান্ডব চালাবে এটাই স্বাভাবিক রুটিন হয়ে উঠেছে গত আইপিএল থেকে। তবে এবার সানরাইজার্স হায়দ্রাবাদকেই দর্শক বানিয়ে টর্নেডো বইয়ে দিলেন নিকোলাস পুরান। তাঁর ব্যাট রীতিমতো কচুকাটা করেছিল স্বাগতিক বোলারদের, একের পর এক বাউন্ডারিতে তিনি খেলেছেন স্মরণ কালের অন্যতম বিধ্বংসী ইনিংস।
এই ক্যারিবিয়ান উইকেটে ছিলেন মোটামুটি সাত ওভার, এর মধ্যে ২৬ বল নিজে খেলেছেন। তাতেই যা করার করে ফেলেছেন তিনি, পাঁচ ছয় এবং পাঁচ চারের মারে আদায় করেছেন ৭০ রান – স্ট্রাইক রেট ২৭০! দুই দলের মধ্যকার চল্লিশ ওভারের লড়াইটা আসলে শেষ হয়ে গিয়েছিল এখানেই।
পাওয়ার হিটিংয়ের জন্য পুরানের সুখ্যাতি বহু আগের, আইপিএলেও সেই ঝলক তিনি দেখিয়েছেন অনেকবার। তবে চলতি আসরে তাঁকে অতীতের যেকোনো সময়ের চেয়ে বেশিই ভয়ঙ্কর ঠেকছে; যেন তিনি পণ করেছেন লখনৌকে একাই সাত সাগর পার করাবেন।
প্রথম ম্যাচে দিল্লি ক্যাপিটালসের বিপক্ষে প্রায় একই ঘরানার ইনিংস খেলেছিলেন এই বাঁ-হাতি। ছয় চার এবং সাত ছক্কার সাহায্যে মাত্র ৩০ বলে ৭৫ রান এসেছিল তাঁর ব্যাট থেকে আর স্ট্রাইক রেট ছিল ২৫০। লখনৌ সেদিন জিতলে নির্ঘাত ম্যাচসেরা হতেন তিনি, কিন্তু শেষবেলায় আশুতোষ শর্মার বীরত্বের কাছে ম্লান হয়ে গিয়েছিলেন।
হায়দ্রাবাদ ম্যাচে তাই কোন ছাড় দেননি, উল্টো তীব্রতা বাড়িয়েছেন। আগের ম্যাচে এই তারকার ২৪ বল লেগেছিল ব্যক্তিগত হাফসেঞ্চুরি পূর্ণ করতে, আর এদিন ১৮ বলেই মাইলফলক ছুঁয়ে ফেলেন তিনি, যা কি না এবারের আসরের দ্রুততম হাফসেঞ্চুরির রেকর্ড। নিজেকে ছাড়িয়ে যাওয়ার যে আপ্রাণ চেষ্টা সেটাই অনন্য করে তুলেছে তাঁকে।
ধারাবাহিক, পরিপক্ব নিকোলাস পুরানের ওপর টিম ম্যানেজম্যান্ট শুরু থেকেই ভরসা রেখেছিল। মিডল অর্ডার বা ফিনিশার হিসেবে লম্বা একটা সময় খেলার পর এবার পুরোদস্তুর টপ অর্ডার ব্যাটার হিসেবে খেলানো হচ্ছে তাঁকে। তিনি সেই সুযোগের সদ্ব্যবহারটাই করছেন; এভাবে এগুতে থাকলে চলতি আইপিএলে রাজ করবেন টি-টোয়েন্টির এই ফেরিওয়ালা।