অবিশ্বাস্য, অতিমানবীয় কিংবা অলৌকিক – আফগানিস্তানের বিপক্ষে পাথুম নিশাঙ্কার পারফরম্যান্সকে আপনি চাইলে যেকোনো বিশেষণে বিশেষায়িত করতে পারেন। আফগানদের বিপক্ষে প্রথম ওয়ানডেতে বলতে গেলে পুরো বিশ্বকে চমকে দিয়েছেন তিনি, ক্যারিয়ারের প্রথম ডাবল হান্ড্রেডের দেখা পেয়েছেন। এর আগে কখনোই কোন লঙ্কান ব্যাটার পারেননি এই কীর্তি অর্জন করতে।
এদিন ওপেনিংয়ে নেমে শেষপর্যন্ত অপরাজিত ছিলেন নিশাঙ্কা। এসময় ১৩৯ বল খেলে ২১০ রান করেছেন তিনি। বিশটি চারের সাথে আটটি বিশাল ছক্কায় সাজানো এই ইনিংসে তাঁর স্ট্রাইক রেট ছিল ১৫০ এর বেশি। এমন ব্যাটিংয়ের কল্যাণেই নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৩৮১ রানের পাহাড়সম পুঁজি পেয়েছে স্বাগতিক লঙ্কা।
উদ্বোধন জুটিতে আভিস্কা ফার্নান্দোকে সঙ্গে নিয়ে পাওয়ার প্লেতেই ৯০ রান তুলেছিলেন এই তরুণ। পাওয়ার প্লের পর পরই হাফসেঞ্চুরি পূর্ন করেন তিনি, এতে তাঁর লেগেছিল কেবল ৩২ বল। ফিফটি করেও থামার কোন লক্ষণ দেখা যায়নি একটুও। আক্রমণাত্মক ব্যাটিংয়েই ৮৮ বলে তিন অঙ্কের ম্যাজিক ফিগার ছুঁয়ে ফেলেন এই ওপেনার।
সেঞ্চুরি করে আরো আগ্রাসী হয়ে উঠেন তিনি। নিয়মিত বাউন্ডারি হাঁকিয়ে রান তুলতে থাকেন বিদ্যুৎ গতিতে। শেষপর্যন্ত আসে সেই মাহেন্দ্রক্ষণ, ১৩৬ বলে ব্যক্তিগত ২০০ রানের গন্ডিতে প্রবেশ করেন। অপরাজিত থেকে মাঠ ছাড়ার সময় তাঁর নামের পাশে জ্বলজ্বল করছিল ১৩৯ বলে ২১০ রান, অর্থাৎ শেষ ৫১ বলে ১১০ রান নিয়েছেন এই তারকা।
প্রায় দুই যুগ আগে ১৮৯ রানের ইনিংস খেলেছিলেন সনাথ জয়াসুরিয়া। ওয়ানডেতে এটিই ছিল শ্রীলঙ্কানদের সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত রানের রেকর্ড – কিন্তু এবার সেই রেকর্ড ভেঙ্গে দিলেন তিনি আফগানিস্তানের বিপক্ষে অতিমানবীয় ব্যাটিং পারফরম্যান্সের কল্যাণে মর্যাদার এই কীর্তি গড়েছেন।
আগে কেউ যা করতে পারেনি, করার কথা ভাবেনি সেটাই করেছেন পাথুম নিশাঙ্কা। মাহেলা জয়াবর্ধনে, কুমার সাঙ্গাকারার মত কিংবদন্তিরা যেই জায়গায় পৌঁছুতে পারেননি, শ্রীলঙ্কার ইতিহাসে সেই অনন্য জায়গায় নিজের নাম লিখেছেন তিনি। যতদিন দেশটিতে ক্রিকেট থাকবে ততদিনই তাই মনে রাখতে হবে তাঁকে; মনে রাখতে হবে তাঁর এই ইনিংসকে।