নেইমার নেই, গোলও নেই

নেইমার জুনিয়র আজ নেই কোনো খবরে। খবরে না থাকলেও, তাঁকে ঘিরে আক্ষেপটা আজো আছে। কারণ, নেইমারের মত প্রোলিফিক এক গোল স্কোরার যে ব্রাজিল আজো খুঁজে পায়নি।

নেইমার জুনিয়র আজ নেই কোনো খবরে। খবরে না থাকলেও, তাঁকে ঘিরে আক্ষেপটা আজো আছে। কারণ, নেইমারের মত প্রোলিফিক এক গোল স্কোরার যে ব্রাজিল আজো খুঁজে পায়নি।

গোল স্কোরার তৈরি হবে কোথা থেকে, কার্যত ব্রাজিলে কোনো মিডফিল্ডই নেই। উইঙ্গারের মধ্যে বল চালাচালি হয়ে বল হারিয়ে যায় অ্যাটাকিং থার্ডে। জোগো বনিতো বা সুন্দর ফুটবলের জয়োগান গেয়ে বিশ্ব ফুটবলে দাপিয়ে বেড়ানো সেলেসাও দলটা আজ বড্ডো ছন্নছাড়া।

তাঁদের মাঠের খেলায়, ৯০ মিনিট ধরে মনোযোগ ধরে রাখাটাই কঠিন। সেখানে শৈল্পিক ছোয়া তো দূরের কথা। আর গোল করা তো দূর আকাশের স্বপ্ন। ইকুয়েডেরের সাথে কোনোক্রমে একটা গোল পেয়ে তিন পয়েন্ট পেয়েছে ব্রাজিল। কোচ ডোরিভাল জুনিয়রের পরিকল্পনা তিনি নিজেও কতটা বোঝেন, তা তিনিই ভাল বলতে পারবেন।

এই যখন অবস্থা তখন নেইমারের অভাবটা বারবার পোড়াচ্ছে ব্রাজিলকে। নেইমার জাতীয় দলে খেলছেন না ১১ মাস হল। অথচ, ২০২৬ বিশ্বকাপ ফুটবলের বাছাইপর্বে তিনিই এখন পর্যন্ত ব্রাজিলের সেরা তারকা।

এখন অবধি দু’টি গোল করেছেন, অ্যাসিস্ট আছে তিনটি। ব্রাজিলের একালের তারকা ভিনিসিয়াস জুনিয়র কিংবা রদ্রিগোরা পৌঁছাতে পারছেন না তাঁর ধারের কাছেও। ভিনিসিয়াস হয়তো চাইলে ব্যালন ডি’অরও জিতে যেতে পারবেন, কিন্তু নেইমার কি আদৌ হতে পারবেন?

নেইমারের প্রতিভা বা স্কিল নিয়ে কোনো সন্দেহ কোনো কালেই ছিল না। ব্রাজিল ফুটবলের দু:খী রাজকুমার তিনি। ২০১০ সাল থেকে শুরু করে সবগুলো বিশ্বকাপেই খেলেছেন নেইমার। গোল করেছেন, গোল করিয়েছেন।

২০১৪ সালে দেশের মাটিতে সেমিফাইনাল পর্যন্ত নিয়ে গিয়েছিলেন। কিন্তু, কোয়ার্টার ফাইনালের সেই মারাত্মক কোমড়ের ইনজুরি, এরপর সেমিফাইনালে জার্মান দু:স্বপ্ন। ব্রাজিল এরপর আর মাথা তুলে দাঁড়াতেই পারেনি।

পরের দু’টো বিশ্বকাপে কোয়ার্টার ফাইনালেই শেষ হয় ব্রাজিলের যাত্রা। বিশ্বকাপে নিজের শেষ ম্যাচেও ক্রোয়েশিয়ার বিপক্ষে একদম অন্তিম মুহূর্তে অস্বাভাবিক এক গোল করেছিলেন, কিন্তু সেটা আর ধরে রাখা হয়নি ব্রাজিলের। এই যেন ব্রাজিলের নিয়তি, তাঁদের মিডফিল্ড ভেদ করা আজকাল ছেলের হাতের মোয়া। যে কোনো সময় যে কেউ তাঁদের বিপক্ষে গোল পেয়ে যেতে পারে।

আর গোল করার জন্য নেইমারও নেই। ইনজুরি তাঁর নিত্য সঙ্গী। ক্লাব ক্যারিয়ারেরও কোনো আগা-মাথা আর নেই। ইউরোপে হয়তো আর ফেরাও হবে না। ব্রাজিলের কি আর সুদিনে ফিরবে? প্রশ্নটির উত্তর কেবল এখন ভাগ্য-বিধাতাই জানেন!

 

লেখক পরিচিতি

সম্পাদক

Share via
Copy link