নূর-ই-আইপিএল

বাংলাদেশ তাকিয়ে দেখবে, আর মনে মনে ভাববে ক’দিন আগেও আন্তর্জাতিক মঞ্চে পাত্তা না পাওয়া আফগানদের কেন এত কদর আইপিএল মঞ্চে!

বাঁ-হাতি রশিদ খান নামেই তাঁকে সবাই চিনে। অথচ, নূর আহমেদের কাগজে কলমে বয়স মাত্র ১৯ বছর। এই বয়সেই তিনি দেখলেন তাকে নিয়ে লড়াই হতে। জেদ্দায় আইপিএল নিলামের অনেকটা ‘নূর’ই কাড়লেন তিনি।

বিশ্বের সেরা ফ্রাঞ্চাইজি ক্রিকেট টুর্নামেন্টে নিলামে লড়াই শেষ তিনি পেলেন ১০ কোটি রুপি। আইপিএলের ইতিহাসের সেরা দুই দল তাঁকে নিয়ে লড়াই করল। মুম্বাই ইন্ডিয়ান্সকে হারিয়ে শেষ হাসি হাসল চেন্নাই সুপার কিংস। আফগানিস্তানের যুদ্ধ-বিধ্বস্ত দেশে যখন নূর ওই চর্ম গোলক হাতে নিয়েছিলেন, তখনও কি স্বপ্নে এমন দিনের কথা ভেবেছিলেন? সম্ভবত না।

চেন্নাই সুপার কিংস অভিজ্ঞ মাহিশ থিকসানাকে দলে নেওয়ার প্রচেষ্টাই করল না। বরং তাদের হোমওয়ার্কের খাতায় নুর আহমেদের নামটা প্রাধান্য পেয়েছে। তাইতো তরুণ এই চায়নাম্যানের জন্যে দশ কোটি রুপি খরচ করতেও দ্বিধা করেনি দলটি।

চেন্নাইয়ের ইতিহাস ঘেটে দেখলে হয়ত বিষয়টির গভীরতা আরও পরিষ্কার হবে। চেন্নাই সুপার কিংস বরাবরই অভিজ্ঞ খেলোয়াড়দের দিকে হাত বাড়িয়েছে। কিন্তু অপেক্ষাকৃত তরুণদেরও পরিচর্যা করে বিশ্বসেরা বানিয়েছে। তারা যখন একজন ১৯ বছরের খেলোয়াড়ের জন্যে এত বিপুল অর্থ ব্যয় করে, তখন নুরের গুরুত্বটা বুঝতে আর বাকি থাকে না।

আধুনিক ক্রিকেটে একজন লেগ স্পিনারের প্রয়োজনীয়তা নিয়ে প্রতিদিনই আলোচনা হয়। খোদ বাংলাদেশ ক্রিকেটেও একজন কার্যকর লেগ স্পিনারের অভাব নিয়ে আক্ষেপের নদী বয়ে যায়। কিন্তু বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে একজন লেগস্পিনারকে সাইড বেঞ্চে বসে কাটাতে হয়। অন্যদিকে আইপিএল একজন তরুণ লেগির দর ছুঁয়ে ফেলে আকাশ।

বাংলাদেশের লেগ স্পিনাররা যেখানে সুযোগের অপেক্ষায় হা-হুতাশ করছে, তখন একজন তরুণ রেকর্ড গড়ছেন। এখন অবধি আইপিএল খেলা আফগানিস্তানি খেলোয়াড়দের মধ্যে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ পারিশ্রমিক পেয়েছেন নূর আহমেদ। প্রত্যাশাও বেড়ে গেছে। তিনি পূরণের আপ্রাণ চেষ্টাও নিশ্চয়ই করবেন। বাংলাদেশ তাকিয়ে দেখবে, আর মনে মনে ভাববে ক’দিন আগেও আন্তর্জাতিক মঞ্চে পাত্তা না পাওয়া আফগানদের কেন এত কদর আইপিএল মঞ্চে!

Share via
Copy link