বুড়ো হলেও বনের রাজা সিংহ

কিন্তু তিন অঙ্কের সেই ঝলমলে আলো এদিন বাড়ির চৌকাঠের বাইরেই রয়ে গেল। কিন্তু তাতে কি আর যায় আসে?

প্রতিটি সিঙ্গেল যখন উদযাপিত হয় বাতাস কাঁপানো চিৎকারে, তখনই বোঝা যায় কিংবদন্তি হওয়ার মানে। রোহিত শর্মা আরও একবার দেখালেন ঝলক- ঠিক কেমন করে তিনি এতটা পথ পাড়ি দিয়েছেন, জায়গা করে নিয়েছেন কোটি কোটি হৃদয়ের গহীনে। রোহিতকে নিয়ে যাদের এখনও হয় সংশয়- তাদের চোখের সামনে এই ইনিংস দিব্যি দাঁড় করানো যায়।

দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে সিরিজের তৃতীয় ওয়ানডে ম্যাচ। ১-১ সমতার সিরিজের শেষ ম্যাচের গুরুত্ব ইঞ্চিটেপে মাপা বড় দায়। এমন এক ম্যাচে রোহিত শর্মার ব্যাট হবে ক্ষুরধার তরবারী- সেটা ভাবা মোটেও নয় বাড়াবাড়ি। প্রোটিয়া বোলারদের পরিকল্পনার পাকা ধানে মই দিয়ে আপন ঢঙে চলতে থাকল রোহিতের ব্যাট।

দুর্ধর্ষ সব ডেলিভারিও যখন স্ট্যাম্প ছোঁয় না, তখন ভাগ্যের সহায় বলে দেওয়া যায়। কিন্তু ভাগ্য তো সাহসীদেরই পক্ষ নেয়। রোহিত সেই সাহসীদের একজন। ফিটনেস নেই, বুড়িয়ে গেছেন- এমন সব তীর্যক সমালোচনা এড়িয়ে তিনি দৃঢ়চেতা চিবুক নিয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছেন। নিজের সামর্থ্য প্রমাণ করে যাচ্ছেন।

দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজে দু’টো হাফসেঞ্চুরিই বরং বলে দিচ্ছে, ফুরিয়ে যাওয়ার সমস্ত তত্ত্ব মিথ্যে। রোহিতের বাহু জুড়ে এখনো অদম্য শক্তি ছোটাছুটি করে। চাইলেই তিনি দৃপ্ত পায়ে অবিসংবাদিত মহানায়ক বনে যেতে পারেন যেকোন মুহূর্তে। ৭৫ রানে আউট হয়ে আক্ষেপের শূন্য বোয়ামে এক ছটাক ধূসরতা অবশ্য ছড়িয়েছেন রোহিত।

মঞ্চটা যে প্রস্তুত ছিল, ৩৪ তম সেঞ্চুরিটা আরেকটু হলে হয়েই যেত। কিন্তু তিন অঙ্কের সেই ঝলমলে আলো এদিন বাড়ির চৌকাঠের বাইরেই রয়ে গেল। কিন্তু তাতে কি আর যায় আসে? ডুবন্ত সূর্যও যে জ্বালাতে পারে মশালের আলো- সে বার্তায় নিন্দুকের চোখ ঝলসালো।

লেখক পরিচিতি

রাকিব হোসেন রুম্মান

কর্পোরেট কেরানি না হয়ে, সৃষ্টি সুখের উল্লাসে ভাসতে চেয়েছিলাম..

Share via
Copy link