আরে, এই ছেলে তো ময়না পাখির মত কথা বলে! – সেই কোন কালে বিকেএসপির দিনগুলোতে সাকিব আল হাসানকে দেখে কথাগুলো বলেছিলেন নাঈম ইসলাম। সাকিবের নাম সেই থেকেই ময়না। সেই ময়না পাখির সুরেলা গান গেল ১৭-১৮ বছর জুড়েই শোনা গেছে, গান শুনে মুগ্ধ হয়েছে পুরো বিশ্ব।
সেই মুগ্ধতা এতটাই যে, যে তামিম ইকবালের সাথে তাঁর একদমই বনিবনা হয় না, তিনিও ধারাভাষ্য কক্ষে বসে বলে দেন, সাকিব সর্বকালের সেরা পাঁচ অলরাউন্ডারের একজন। সাকিব এমনই, তাঁকে তাঁর সবচেয়ে বড় সমালোচকও অগ্রাহ্য করার সাহস দেখান না।
সাকিবের আর কোনোদিনও টেস্ট খেলা হবে না। বাংলাদেশ ক্রিকেটের সাম্প্রতিক সময়ের খবর রাখলে এই বাক্যটা সঠিক না মনে করার বিষয়ে কারও কোনো যুক্তিও নেই। মিরপুরে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে টেস্ট খেলে শেষ করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু, সাকিবের জন্য সার্বিক নিরাপত্তা দেওয়া সম্ভব নয়।
তাই, দুইয়ে দুইয়ে চার মিলিয়ে সাকিবের টেস্ট ক্যারিয়ারে ফুলস্টপ পড়ে যাচ্ছে এই কানপুরেই। আর কেবল একটা মাত্র দিন। তারপরেই সব শেষ। কে জানে, সাকিব আর আদৌ ওয়ানডে খেলতে পারবেন কি না – বোর্ডের চাওয়া অনুযায়ী দেশে ফিরে খেলতে অস্বীকৃতি জানালে সাকিবকে আদৌ আর ৫০ ওভারের ক্রিকেটে বিবেচনা করা হবে কি না – তা নিয়ে আছে বিস্তর সন্দেহ।
তবে, সেটা হোক কিংবা নাই হোক – টেস্টের আকাশে নিভেই যাচ্ছেন সাকিব। সেই নিভে যাওয়ার আগে দু’টো দিন আবার উবে গেল বৃষ্টি আর কানপুরের অব্যবস্থাপনায়। ময়না পাখির গান গাওয়ার সময় আরও খানিকটা কমে গেল।
কিন্তু, যতটুকু সময় পেলেন তাতেই সাকিব হয়ে উঠলেন অনন্য। কানপুরের চতুর্থ দিনের পঞ্চম বেলায় পেলেন চারটা উইকেট। এর মধ্যে বোল্ড করেন বিরাট কোহলিকে। ভারতের টি-টোয়েন্টি সুলভ ব্যাটিংয়ের বিরুদ্ধে গিয়ে তিনি উইকেট পান। ভারতের নয় উইকেট থাকতেই রোহিত শর্মা ইনিংস ঘোষণা করে দেন। সেটা না হলে হয়তো ক্যারিয়ারে ২০ তম বারের মত পাঁচ উইকেট তুলে নিতে পারতেন।
সেটা হয়নি, আরেকবার পাঁচ উইকেট নেওয়ার সুযোগ হয়তো সাকিব কানপুরের পঞ্চম দিনেই পাবেন, কিংবা পাবেন না। না পেলে আরেকটা আক্ষেপ নিয়েই শেষ হবে সাকিবের টেস্ট ক্যারিয়ার। এমন হাজারো আক্ষেপ তো তাঁর নিত্য সঙ্গী, বাংলাদেশ ক্রিকেটেরও।