বাবার পথেই হাঁটছেন মিসবাহ উল হকের ছেলে ফাহাম উল হক। বাবার ব্যাটিং পরিচয় ছাপিয়ে নিজে হয়ে উঠছেন পুরোদস্তর অলরাউন্ডার। মাত্র ২০ বছর বয়সেই ব্যাটে–বলে নিজের সামর্থ্যের জানান দিচ্ছেন তিনি। প্রেসিডেন্টস কাপের চলতি আসরে টানা তৃতীয়বারের মতো ৫০ ছাড়ানো ইনিংস খেলেই আলোচনায় উঠে এসেছেন ফাহাম।
পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড (পিসিবি) প্রেসিডেন্টস কাপে এখন পর্যন্ত পাঁচ ম্যাচে ২৫৩ রান করার পাশাপাশি শিকার করেছেন সাতটি উইকেট। অলরাউন্ড পারফরম্যান্সে টুর্নামেন্টে নিজের ছাপ স্পষ্ট করে তুলেছেন এই তরুণ।
এর আগে কায়েদে আজম ট্রফি দিয়ে ঘরোয়া মৌসুম শুরু করেছিলেন ফাহাম। ফয়সালাবাদের হয়ে পেশাদার ক্রিকেটে নিজের প্রথম হাফ সেঞ্চুরি হাঁকান শিয়ালকোটের বিপক্ষে। পরের ম্যাচে খেলেন ৭৮ রানের দুর্দান্ত ইনিংস, যেখানে ফয়সালাবাদ ইনিংস ব্যবধানে জয় পায়। মাঝখানে মুলতান ম্যাচটি মিস করলেও এরপর আরও ধারালো হয়ে ওঠেন বাঁহাতি এই ব্যাটার।

পরবর্তী তিন ম্যাচে দুটি সেঞ্চুরি করে পুরো টুর্নামেন্ট শেষ করেন ১৩ ইনিংসে ৫৫৬ রান নিয়ে, গড় ছিল ৪৫.৯৮। সেখানেই ইঙ্গিত মিলেছিল, সামনে আরও বড় কিছু অপেক্ষা করছে।
সেই ধারাবাহিকতা বজায় রেখেছেন প্রেসিডেন্টস কাপেও। লিস্ট ‘এ’ এই টুর্নামেন্টে সাহির অ্যাসোসিয়েটসের হয়ে খেলছেন ফাহাম। উদ্বোধনী ম্যাচে স্টেট ব্যাংক অব পাকিস্তানের বিপক্ষে মিডল অর্ডারে নেমে ২ বলে ১ রান করে রানআউট হলেও পরের ম্যাচ থেকেই ঘুরে দাঁড়ান। ওপেনিংয়ে ফিরে ২৭ বলে ২৬ করার পর পাকিস্তান টেলিভিশনের বিপক্ষে তুলে নেন নিজের প্রথম লিস্ট ‘এ’ সেঞ্চুরি।
এরপর ওয়াপদার বিপক্ষে ৮৭ রানের জয়ে করেন ৬৬ রান। সর্বশেষ ম্যাচেও করেন ৬০। পাঁচ ম্যাচ শেষে তার রান ২৫৩, গড় ৬৩.২৫ এবং স্ট্রাইক রেট ৮০.৩১—যা যেকোনো তরুণ ব্যাটারের জন্যই চোখে পড়ার মতো।

ব্যাটিংয়ের পাশাপাশি বল হাতেও অবদান রাখছেন ফাহাম। প্রেসিডেন্টস কাপে নিয়মিত বোলিং করে ইতোমধ্যে নিয়েছেন সাতটি উইকেট। ওয়াপদার বিপক্ষে ক্যারিয়ারসেরা ৪ উইকেট ৩০ রানের স্পেল ছিল বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। এর আগে কায়েদে আজম ট্রফিতে করাচি ব্লুজের বিপক্ষে প্রথম ইনিংসেই নিয়েছিলেন তিন উইকেট।
সব মিলিয়ে মিসবাহ উল হকের উত্তরসূরি হিসেবে ফাহাম উল হক ধীরে ধীরে নিজের পরিচয় গড়ে তুলছেন। পারফরম্যান্সের এই ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে পারলে পাকিস্তান ক্রিকেটে তার নাম আরও জোরালোভাবে উচ্চারিত হওয়াটা এখন শুধু সময়ের অপেক্ষা।










