পাকিস্তানি ক্রিকেটাররাই যেন শেষ ভরসা। যত দিন গড়িয়েছে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) মান নিয়ে তত প্রশ্নই ঘনিভূত হয়েছে। দশম বিপিএলের সময়কালেই শুরু হয়েছে আরো বেশ কয়েকটি ফ্রাঞ্চাইজি ক্রিকেট টুর্নামেন্ট। সে কারণেই মানসম্মত বিদেশী খেলোয়াড়দের অভাব দেখা দিয়েছে। তবে সে ঘাটতি পূরণে দলগুলোর আস্থা পাকিস্তানের ক্রিকেটাররা।
ইতোমধ্যে পাকিস্তানের ক্রিকেটাররা বিপিএলের দলগুলোর সাথে যুক্ত হতে শুরু করেছেন। পাকিস্তান ক্রিকেটের বাদশাহ বাবর আজম রংপুর রাইডার্সের জার্সি গায়ে জয়ের নায়ক বনে গেছেন প্রথম ম্যাচেই। অন্যদিকে মোহাম্মদ রিজওয়ান প্রচেষ্টা চালিয়েছিলেন কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের হয়ে। তবে বেশি লম্বা হয়নি তার ইনিংস।
তাছাড়া পাকিস্তানের অভিজ্ঞ ক্রিকেটার শোয়েব মালিক ফরচুন বরিশালের ডেরায় ছিলেন একেবারে শুরু থেকেই। যদিও তিনি মাঝপথেই উড়াল দিয়েছেন দুবাইতে। ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়েই তিনি আপাতত ছেড়েছেন বরিশালের ড্রেসিং রুম।
প্রতিবারের মত এবারেও প্রতিটা দলে বিদেশি খেলোয়াড়দের মধ্যে পাকিস্তানি ক্রিকেটারদের আধিক্য বেশি। কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের কথাই ধরা যেতে পারে। তাদের দলে খুশদিল শাহ প্রথম থেকেই ছিলেন। তাছাড়া রিজওয়ান তো রয়েছেনই। এছাড়াও নাসিম শাহ ও ইফতেখার আহমেদের মত খেলোয়াড়দের দেখা যাবে ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়নদের জার্সিতে।
আরও বেশ কিছু পাকিস্তানি ক্রিকেটাররা যুক্ত হবেন এবারের বিপিএলে। তবে সমস্যা বাঁধছে অনাপত্তিপত্র। পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের নিয়মানুসারে, বছরে সর্বোচ্চ দুইটি ভিনদেশী ফ্রাঞ্চাইজি টুর্নামেন্ট খেলতে পারবেন খেলোয়াড়রা। সে নিয়মের গ্যাড়াকলে আটক পড়েছেন ফখর জামান, হারিস রউফের মত খেলোয়াড়রা।
তবে বিপিএলের ফ্রাঞ্চাইজিরা বেশ আশাবাদী পাকিস্তানি ক্রিকেটারদের নিয়ে। তারা প্রত্যাশা করছেন পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড অনাপত্তিপত্র নিয়ে সৃষ্টি হওয়া জটিলতার সমাধান করবে অতিদ্রুতই। তাহলে হয়ত এক ঝাঁক তারকা ক্রিকেটারদের মিলনমেলায় পরিণত হবে বিপিএলের দশম আসর।
সেটাই যেন একমাত্র প্রত্যাশার জায়গা ভক্ত-সমর্থকদের। বিপিএলে একেবারেই জৌলুস নেই সে কথা বলা যাবে না। মঙ্গলবার দিনের দ্বিতীয় ম্যাচের আগে মিরপুর স্টেডিয়ামের বাইরে রীতিমত হাতাহাতি হয়েছে টিকিটের জন্যে। মানসম্মত খেলা উপহার দিতে পারলে নিশ্চিতভাবেই দর্শকরা ফিরবেন মাঠে। তাদের আগ্রহ বাড়বে। তবে সীমাবদ্ধতাও যে রয়েছে অনেক।
সেই সীমাবদ্ধতার একটা সমাধান হয়েই যেন বাংলাদেশে আসছেন পাকিস্তানি ক্রিকেটাররা। এনওসি জটিলতায় যারা আসতে পারছেন না, তাদেরকে দলে অন্তর্ভুক্ত করার ক্ষেত্রে বিসিবিও স্বপ্রণোদিত হয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারে। তাতে করে আসলে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের হারানো জৌলুশ, মাঠ ভর্তি দর্শকদের দিন ফিরলেও ফিরতে পারে।
দিনশেষে প্রতিটা দর্শকই চান, জম্পেশ বিনোদনের সঙ্গী হতে। দেশের খেলোয়াড়দের পাশাপাশি ভিনদেশী তারকাদের পারফরমেন্স সামনে থেকে উপভোগ করবার ইচ্ছে নিতান্তই ফেলনা নয়। ফ্রাঞ্চাইজিগুলো অন্ততপক্ষে প্রচেষ্টা চালাচ্ছেন দর্শকদের ইচ্ছের কথা মাথায় রেখে। এখন বাকিটা সময়ের হাতে বন্দী।