ফখরের কান্নায় ভাঙল পাকিস্তানের স্বপ্ন

বাঁ-হাতি ব্যাটার ফখর জামান চোখের জল ধরে রাখতে পারেননি। পারার কথাও নয়। তাঁর না থাকাটা মানেই পাকিস্তানের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির স্বপ্ন শেষ হয়ে যাওয়া। তিনি সেটা জানেন, বোঝেন— তাই তো ড্রেসিংরুমে ফিরে আর নিজেকে আটকে রাখতে পারেননি। মাথা নিচু করে অঝোরে কাঁদলেন ফখর।

বাঁ-হাতি ব্যাটার ফখর জামান চোখের জল ধরে রাখতে পারেননি। পারার কথাও নয়। তাঁর না থাকাটা মানেই পাকিস্তানের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির স্বপ্ন শেষ হয়ে যাওয়া। তিনি সেটা জানেন, বোঝেন— তাই তো ড্রেসিংরুমে ফিরে আর নিজেকে আটকে রাখতে পারেননি। মাথা নিচু করে অঝোরে কাঁদলেন ফখর।

২০১৭ সালের সেই ঐতিহাসিক ফাইনাল— ভারতের বিপক্ষে ওভালে তাঁর ১১৪ রানের মহাকাব্যিক ইনিংসই পাকিস্তানকে প্রথমবারের মতো চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির শিরোপা এনে দিয়েছিল। ছয়-সাত বছর পর আবার সেই চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতেই তাঁকে কাঁদতে হলো! কিন্তু এবার চোখের জল পাকিস্তানের ট্রফিজয়ী আনন্দের জন্য নয়, বরং স্বপ্নভঙ্গের হতাশায় ভেজা।

পাকিস্তান দলে টপ অর্ডারে আর আছেন বাবর আজম ও সৌদ শাকিল। কিন্তু তাঁরা কেউই ফর্মে নেই। বাবর আজম নিজের ছায়া হয়ে আছেন, ফায়ার আপ করতে পারছেন না। সৌদ শাকিলও বড় মঞ্চে নিজেকে মেলে ধরতে ব্যর্থ হচ্ছেন। ফখরের জায়গায় নেওয়া হয়েছে ইমাম উল হককে, যিনি কার্যত রঙিন পোশাকে মানিয়ে নিতে পারেন না। একমাত্র ঝড়ো ব্যাটিং করতে পারার ক্ষমতা আছে উসমান খানের, কিন্তু ওয়ানডেতে তিনি এখনো পরীক্ষিত নন, অভিজ্ঞতা নেই বললেই চলে।

এই মুহূর্তে পাকিস্তান দলে এমন একজনও নেই, যাকে টপ অর্ডারে রেখে নির্ভর করা যায়। ক্লাসিক সব ব্যাটার এক সময় পাকিস্তানের ছিল, যাদের ক্যারিশমায় ম্যাচ বের করা যেত। সেই সাঈদ আনোয়ার, ইনজামাম উল হকদের যুগ হয়েছে বাসি। এখন আর কেউ জয়ের গ্যারান্টি দেওয়ার ব্যাটিং করতে জানেন না। পাকিস্তানকে এখন চাইলেই গুড়িয়ে দেওয়া যায়। উড়িয়ে দেওয়া যায, পাকিস্তান এখন প্রেডিক্টেবল। তাঁদের পরাজয়ই এখন ধ্রুব প্রেডিকশন।

এমন এক দলে, যেখানে উইকেটের মূল্য বোঝার মতো ব্যাটার নেই, যারা প্রয়োজনের সময় ভরসা দিতে পারে না, সেখানে ফখর জামানই ছিলেন একমাত্র ব্যতিক্রম। এখন তিনিও নেই! তাই শুধু ফখরের কান্নাই নয়, গোটা পাকিস্তানেরও কাঁদা উচিত।

এবারের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে পাকিস্তানের সেমিফাইনালে ওঠার স্বপ্ন শুধু কঠিন নয়, প্রায় অসম্ভব। একে তো ব্যাটিং ইউনিট নড়বড়ে, তার ওপর অভিজ্ঞতা ও ধারাবাহিকতার অভাব। ফখর জামান ছিলেন এমন একজন, যিনি যেকোনো দিনে একাই ম্যাচ জেতাতে পারতেন, প্রতিপক্ষের পরিকল্পনা গুঁড়িয়ে দিতে পারতেন। তাঁর অনুপস্থিতিতে পাকিস্তানের ব্যাটিংয়ের নড়বড়ে অবস্থা এখন পুরোদমে উন্মুক্ত হয়ে গেছে। বোলিং আক্রমণও ধার হারিয়েছে। শাহীন শাহ আফ্রিদি, নাসিম শাহ কিংবা হারিস রউফরা নিজেদের নামের প্রতি সুবিচার করতে পারছে না।

তাই তো, ফখরের ব্যক্তিগত বেদনার সঙ্গে পাকিস্তানের ক্রিকেটের হতাশাও মিশে গেছে। প্রতিপক্ষদের চোখে চোখ রেখে লড়াই করার মতো ব্যাটার নেই, পরিকল্পনা নেই, আত্মবিশ্বাসও নেই। পাকিস্তানের আইসিসি ইভেন্টে সাফল্যের শেষ চিহ্নটুকুও যেন মাটিচাপা পড়ে গেল ফখর জামানের কান্নার সঙ্গেই। ক্রিকেট খুবই নিষ্ঠুর। নিয়তিও বড্ড নিষ্ঠুর।

Share via
Copy link