মাত্রই আউট হয়ে প্যাভিলিয়নে ফেরত আসলেন ব্যাটসম্যান। খানিক পরেই আবার উইকেট পড়ল, আরও একবার উল্লাসে মেতে উঠল ফিল্ডিং দল। দুঃখ ভারাক্রান্ত মন নিয়ে ড্রেসিংরুমের পথে হাঁটা ধরলেন সদ্য আউট হওয়া ব্যাটসম্যান। এদিকে দর্শকদের মনে কৌতুহল, আরে এই লোকটাই না আউট হলো একটু আগে!
ব্যাটসম্যান একজন, কিন্তু আউট হলেন দুবার! একই ব্যাটসম্যান পরপর দুবার আউট হন কীভাবে?
অবিশ্বাস্য লাগছে? অবিশ্বাস্য মনে হলেও এমনটাই ঘটেছিল ১৯১১ সালের সিডনি টেস্টে। টেস্ট ক্রিকেটে একই ব্যাটসম্যানের পরপর দুইবার আউট হওয়ার সর্বপ্রথম ঘটনা এটি।
১৯১১ সালের সিডনি টেস্টের দ্বিতীয় দিন। অস্ট্রেলিয়ার প্রথম ইনিংসে করা ৩৬৪ রানের জবাবে ধুঁকতে থাকা দক্ষিণ আফ্রিকা অলআউট মাত্র ১৬০ রানে। দিনের খেলা শেষ হতে তখনও বাকি ৯ ওভার।
জানিয়ে রাখা ভাল, প্রথম ইনিংসে দশ নম্বরে ব্যাট করতে নেমেছিলেন প্রোটিয়া অধিনায়ক পার্সি শেরওয়েল। মাত্র ৫ রান করে ‘শেষ ব্যাটসম্যান’ হিসেবে আউট হন তিনি।
ফলোঅনে পড়ে ওইদিনই আবার ব্যাটিংয়ে নামতে হল সফরকারীদের। ফলোঅনে পড়া দলকে বাঁচাতেই কি না, ‘ওপেন’ করতে নেমে গেলেন দক্ষিণ আফ্রিকার অধিনায়ক ও উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান পার্সি শেরওয়েল! কিন্তু ভাগ্যের কী নির্মম পরিহাস! মাত্র ১১ মিনিটের ব্যবধানে দ্বিতীয়বার আউট হবার লজ্জায় পড়তে হল তাঁকে!
ওই ম্যাচে আরেকটা মজার ঘটনা ঘটেছিল। দক্ষিণ আফ্রিকা দলের খেলোয়াড় অমি পিয়ার্স প্রথম ইনিংসে নেমেছিলেন ওপেনিংয়ে আর দ্বিতীয় ইনিংসে নেমেছিলেন এগারো নম্বরে!
পুনশ্চ: একই টেস্টে পরপর দুবার আউট হওয়ার আরও একটি ঘটনা রয়েছে। ১৯৫৯ সালে অ্যাডিলেড টেস্টে; যেখানে প্রতিপক্ষ আবারও সেই অস্ট্রেলিয়া!
ইংল্যান্ডের প্রথম ইনিংসে আউট হওয়া শেষ ব্যাটসম্যানের নাম ছিল উইলি ওয়াটসন। তারপর ইংল্যান্ড পড়ল ফলোঅনে, ওয়াটসন নামলেন ওপেনিংয়ে। নতুন পজিশনে অবশ্য খারাপ করেননি তিনি, ৮৯ রানের ওপেনিং জুটিতে ওয়াটসনের অবদান ছিল ৪০। জুটিটাও ভেঙেছিল ওয়াটসনের আউটে।
পার্সি শেরওয়াল ক্যারিয়ারে ১৩ টা টেস্ট খেলেছিলেন। তাতে করেছেন এক সেঞ্চুরি আর এক হাফ সেঞ্চুরি। তাঁর ভাই বেন শেরওয়ালও ক্রিকেটার ছিলেন, তিনি ইংলিশ কাউন্টিতে ৩৬ টি প্রথম শ্রেণির ম্যাচ খেলেন।