ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো, রেকর্ড বইয়ে তিনি ঝড় তোলেন কথাটা বড্ড সেকেলে। তিনি নিজেই জলজ্যান্ত একটা বই, যেখানে প্রতিনিয়ত লেখা হচ্ছে একের পর এক রেকর্ড। সবশেষ স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে ২০০তম ম্যাচে শুরুর একাদশে থাকার মাইলফলক পূর্ণ হয় তাঁর। যদিও মাইলফলক ছোঁয়ার রাতে তাঁকে মাঠ ছাড়তে হয়েছে হতাশা নিয়েই।
রোনালদো নিজে গোল পাননি, চারটা শট নিয়েও পরাস্ত করতে পারেননি স্কটিশ গোলরক্ষক ক্রেইগ গর্ডনকে। অবশ্য করবেন ই বা কিভাবে, গর্ডন এদিন তো অতিমানব হয়ে উঠেছিলেন। অলৌকিক কোন জাদুবলে তিনি দেয়াল হয়েছিলেন গোলপোস্টের সামনে। অনেকটাই শাওলিন সকার মুভির সেই গোলরক্ষকের মতই।
৮৭ মিনিটের সেই সেভটার কথাই ধরা যাক, চোখে এখনো বোধহয় ধাঁধা লেগে আছে দর্শকদের। লেফট উইংয়ে পায়ের কারিকুরি দেখিয়ে ডি বক্সে ঢুকে যান রাফায়েল লিও, তারপর কাটব্যাক করে বল দেন ব্রুনো ফার্নান্দেজকে। ব্রুনো ছাড় দেননি, একদম কাছ থেকেই জোরালো শট নিয়েছিলেন। তবু গোলরক্ষককে ফাঁকি দেয়া সম্ভব হয়নি। ঠিক কিভাবে নিশ্চিত গোলটা আটকে দিয়েছেন সেটা রহস্য হয়েই আছে।
কেবল শেষ মুহূর্তের নয়, পুরো ম্যাচের হাইলাইটস আসলে এমনই। পর্তুগাল একের পর এক আক্রমণ নিয়ে স্কটিশ দূর্গের সামনে এসেছে, এরপর ব্যর্থ হয়ে আবার ফিরে গিয়েছে। কেবল গোলরক্ষক নয়, স্কটিশ ডিফেন্ডাররাও এদিন পুরাদস্তুর দেয়াল হয়ে ছিলেন। যত যাই হোক, গোল দিতে দিব না এই প্রতিজ্ঞায় অসম্ভব দৃঢ়তা দেখিয়েছেন তাঁরা।
রবার্তো মার্টিনেজ দায়িত্ব নেয়ার পর টানা বারো ম্যাচ গোল করেছিল রোনালদোর দল। অথচ সবশেষ সাত ম্যাচের চারটিতেই জালের দেখা পায়নি তাঁরা। তাছাড়া এ ম্যাচে মাত্র ১৪ বার গোল মুখে শট নিতে পেরেছে দলটি, যা কিনা চলতি নেশন্স লিগে এক ম্যাচে তাঁদের সর্বনিন্ম প্রচেষ্টা।
অবশ্য স্কটল্যান্ডের জন্য গল্পটা অন্যরকম, মাত্র ৩০ শতাংশ পজেশন আর চারটা শটের বিনিময়ে এক পয়েন্ট পেয়েছে তাঁরা। টুর্নামেন্টে এবারই পয়েন্টের খাতা খুলতে পেরেছে তাঁর। যদিও এতে পর্তুগালের খুব একটা সমস্যা হওয়ার কথা নয়, দশ পয়েন্ট নিয়ে টেবিল টপার তাঁরা। কোয়ার্টার ফাইনাল তাই খুব একটা দূরে নয়।