উইল জ্যাকস, নিখুঁত ও নির্দয়

তখনো ইংল্যান্ড জাতীয় দলে সুযোগ পাওয়া হয়নি উইল জ্যাকসের, ঘরোয়া ক্রিকেট থেকেই তাঁর প্রতিভার সন্ধান পেয়েছিল বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স। এরপর বিপিএল খেলার সুবাদে বদলে গিয়েছে তাঁর বাস্তবতা। জাতীয় দল পেরিয়ে ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগেও (আইপিএল) জায়গা করে নিয়েছেন তিনি; শুধু তাই নয়, পারফরম করছেন দারুণভাবে।

রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালুরু নিলাম থেকে স্কোয়াডে ভিড়িয়েছিলকে জ্যাকসকে। কিন্তু টুর্নামেন্টের শুরুর দিকে তাঁকে খেলানোর কথা ভাবেইনি টিম ম্যানেজম্যান্ট। যদিও দীর্ঘ অপেক্ষা শেষে একাদশে রাখা হয়, আর প্রথম সুযোগেই বাজিমাত করেন তিনি। তবে গুজরাট টাইটান্সের বিপক্ষে প্রত্যাশাকে ছাপিয়ে গিয়েছে তাঁর পারফরম্যান্স।

এদিন ম্যাচ জেতানো এক সেঞ্চুরি উপহার দিয়েছেন এই ব্যাটার, মাত্র ৪১ বলে খেলেছেন অপরাজিত ১০০ রানর ইনিংস। শতক হাঁকানোর পথে পাঁচটি চারের বিপরীতে দশ দশটি ছক্কা মেরেছেন তিনি – অর্থাৎ বাউন্ডারির সাহায্যে কেবল ১৫ বল থেকেই ৮০ রান আদায় করেছেন। বিস্ময়কর ব্যাপার, তাঁর এমন ব্যাটিংয়ে ম্লান হয়েছেন স্বয়ং বিরাট কোহলি নিজেই।

গুজরাটের ছুঁড়ে দেয়া ২০১ রানের টার্গেট তাড়া করতে নেমে চতুর্থ ওভারেই অধিনায়ক ডু প্লেসিসের উইকেট হারায় ব্যাঙ্গালুরু। সেটাই অবশ্য আশীর্বাদ হয়ে আসে তাঁদের জন্য, তিন নম্বরে নামা ইংলিশ তারকা এরপর তুলোধুনো করেছিলেন বোলারদের। প্রথম দিকে ততবেশি আগ্রাসী ছিলেন না তিনি, তবে সময়ের সাথে পাল্লা দিয়ে রানের গতি বাড়ান।

মোহিত শর্মার পনেরোতম ওভারে প্রথম দুই বলে এক চার ও এক ছয় মারেন ডানহাতি, এর মধ্য দিয়ে ফিফটির মাইলফলক স্পর্শ করেন। সাথে সাথেই ভয়ঙ্কর হয়ে উঠেন তিনি, চোখের পলকে পৌঁছে যান সেঞ্চুরির দ্বারপ্রান্তে। পরের ওভারের শেষ বলে আসে সেই মাহেন্দ্রক্ষণ, রশিদ খানকে ডিপ মিড উইকেটের ওপর দিয়ে উড়িয়ে মেরে তিন অঙ্কের ঘরে প্রবেশ করেন তিনি।

৩২ বলে হাফসেঞ্চুরি, ৪১ বলে সেঞ্চুরি – অতিমানবীয় বলা যায় এটিকে। বিধ্বংসী ব্যাটিংয়ের সবচেয়ে নিষ্ঠুরতম রূপ এদিন দেখিয়েছেন এই তরুণ। নিজের খেলা শেষ ১২ বল থেকেই ৫৬ রান তুলেছিলেন তিনি। প্লে-অফের দৌড় থেকে অনেকটা পিছিয়ে পড়লেও তাঁর এমন ব্যাটিং নিঃসন্দেহে সন্তুষ্ট করবে চ্যালেঞ্জার্স পরিবারকে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link