খেলার চেয়ে ধুলা বেশি

সাকিব আল হাসান ব্যাট করতে নামলেন চার নাম্বারে। ১৩ বলে ১৭ রান করে এবাদত হোসেনের বলে আউট হয়ে ফিরলেন সাকিব। তবে আমি যদি আপনাকে বলি ম্যাচ শেষে সাকিবের ব্যাট থেকে এসেছে ৫৩ রান সেটাও আবার ভুল হবে না। আপনি হয়তো ভাবছেন ১৭ রানেই আউট হয়ে যাওয়া সাকিবের নামের পাশে ৫৩ রান থাকে কী করে!

আসলে নিজেদের মধ্যে খেলা প্রস্তুতি ম্যাচে সাকিব ব্যাট করতে নেমেছিলেন দু’বার। প্রথমবার ১৭ রানে আউট হবার পর দ্বিতীয়বার ব্যাট করতে নেমেছেন আবার দলের ৭ উইকেট পড়ে যাবার পরে। এবার অবশ্য সাকিব ব্যাট করতে নেমে পুরো প্রস্তুতিটাই সেরেছেন। এবার আর সাকিবকে আউট করতে পারেননি এবাদতরা। শেষ পর্যন্ত অপরাজিত ছিলেন ২৪ বলে ৩৬ রানের ইনিংস খেলে।

এছাড়া সাকিবের সাথে দারুণ একটা জুটি গড়ে তুলেছিলেন মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত। তার ব্যাট থেকে এসেছে ১৭ বলে ৩০ রানের ক্যামিও। তবে মুশফিকুর রহিম, মাহমুদউল্লাউ রিয়াদ কিংবা এনামুক হক বিজয় কারো ব্যাট থেকেই আজও টি-টোয়েন্টি সুলভ ইনিংসের দেখা পাওয়া যায়নি। এরপরও শেষে সাকিব, মোসাদ্দেকের ব্যাটে চড়ে ১৬৫ রানের লড়াকু ইনিংসই গড়েছিল সাকিবরা।

ওদিকে সবুজ দলের হয়েও মেহেদী হাসান মিরাজ ও মাহফিজুল রবিন দারুণ শুরু করেছিলেন। দুজনে মিলে এনে দিয়েছিলেন ৫৪ রানের ওপেনিং জুটি। যদিও পরে দুজনের কেউই নিজেদের ইনিংস বড় করতে পারেননি। যদিও পরে নজর কেড়েছে শেখ মেহেদীর ব্যাটিং। ১৬ বলে ৩১ রানের ঝড়ো ইনিংস ইনিংস আসে তার ব্যাট থেকে। তিনি অবশ্য আজ দুই দলের হয়েই ব্যাটিং করেছেন। এতেই বোঝা যায় এশিয়া কাপে ব্যাটার শেখ মেহেদীকে ব্যবহার করতে চায় বাংলাদেশ।

আর সবুজ দলের অধিনায়ক আফিফ হোসেন দুবার ব্যাট করতে নামলেও কোনবারই বড় ইনিংস খেলতে পারেননি। সবমিলিয়ে প্রস্তুতি ম্যাচটা প্রস্তুতি ম্যাচের মত করেই খেলেছেন সাকিবরা। তবে আজ হোম অব ক্রিকেটে মাঠের ক্রিকেটের চেয়ে মাঠের বাইরের ঘটনা নিয়েই আলোচনা বেশি।

এশিয়া কাপের আগে হাতে সময় বাকি নেই এক সপ্তাহও। তবুও মাঠের বাইরের নানা আলোচনায় উত্তপ্ত ক্রিকেটপাড়া। একদিকে যখন সাকিবরা ব্যাট বল হাতে নিজেদের ঝালিয়ে নিচ্ছিলেন তখন মাঠে প্রবেশ করেন নতুন নিয়োগ পাওয়া টি-টোয়েন্টি পরামর্শক শ্রীধরন শ্রীরাম। বিমানবন্দর থেকে সরাসরি চলে আসেন প্রস্তুতি ম্যাচ দেখতে।

ম্যাচ শেষে ক্রিকেটার ও কোচদের সাথে বেশ খানিকক্ষণ আলোচনা করতে দেখা যায় তাকে। অনন্যা কোচদের সাথে যেন পরিচয় পর্বটাই সেরে নিলেন। ফলে ক্রিকেটের চেয়ে আজ তাকে নিয়েই বেশি ব্যস্ত ছিল মিরপুর। সবার মনে একটাই প্রশ্ন তাহলে তার হাতেই নির্ভর করছে বাংলাদেশের টি-টোয়েন্টি ভাগ্য?

এছাড়া রাসেল ডোমিঙ্গ আর টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের সাথে থাকছেন না সেটাও মোটামুটি নিশ্চিতই বলা যায়। আজ হোম প্রস্তুতি ম্যাচের সময়ও মাঠে দেখা যায়নি তাকে। ফলে টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটের পুরো দায়িত্ব শ্রীধরন শ্রীরামের হাতেই উঠতে চলেছে বলে ধারণা করা যায়। এই বিষয়েই আগামীকাল বৈঠকে বসার কথা বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপনের।

এশিয়া কাপ মাঠে গড়াবে ২৭ তারিখ থেকে। আর বাংলাদেশ দল দেশ ছাড়বে ২৩ তারিখ। ফলে এই দুইদিন আলোচনা হওয়ার কথা ছিল শুধুই মাঠের ক্রিকেট নিয়ে। তবে মিরপুরে এখনো খেলার চেয়ে ধুলোই বেশি উড়ছে।

লেখক পরিচিতি

আমার ডায়েরির প্রতিটা পৃষ্ঠাই আমার বাইশ গজ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link