শেষ চার দেখায় তিন জয়। সাম্প্রতিক সফলতা বাংলাদেশের পক্ষেই। তবুও বাংলাদেশ দল যে নেই খুব একটা স্বস্তিতে। ভারতের বিপক্ষে গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচের আগে খানিকটা ব্যাকফুটেই থাকছে টাইগাররা। প্রথমত অধিনায়ক সাকিব আল হাসানের ইনজুরি, দ্বিতীয়ত টানা দুই ম্যাচে বাজে হার। এসব কিছুই বাংলাদেশকে একটু পিছিয়ে রাখছে।
বাংলাদেশ-ভারত দ্বৈরথ। ভারত নিজেদের প্রথম তিন ম্যাচের সবগুলো জিতে রয়েছে ফুরফুরে মেজাজে। তবে সাকিবের দল টুর্নামেন্টের শুরুটা ভাল করলেও খেই হারিয়ে ফেলেছে। এই দুই দলের মুখোমুখিতে তাই স্বাভাবিকভাবেই এগিয়ে থাকছে ভারত।
তবুও বাংলাদেশ লড়াই অন্তত করতে চাইবে ভারতের বিপক্ষে। ভাগ্য সহায় হলে জয়টাও তো অধরা নয়। সেই লড়াইয়ে বাংলাদেশের প্রধান চিন্তার কারণ সাকিব আল হাসানের একাদশে অন্তর্ভুক্ত হওয়া। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে হ্যামস্ট্রিংয়ের ইনজুরিতে পড়েছিলেন বাংলাদেশের দলনেতা।
গ্রেড ওয়ান টিয়ারের সেই ইনজুরি সেরে উঠতে সময় লাগার কথা সপ্তাহ খানেক। তবে বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার ভারতের বিপক্ষে ম্যাচ খেলার জন্য রয়েছেন মুখিয়ে। তাইতো ইনজুরি তোয়াক্কা না করেই হাই ইন্টেন্সিটিতে অনুশীলন করেছেন। তবে ম্যাচের আগের দিন অবধি সাকিবের একাদশে থাকার নিশ্চয়তা নেই। ম্যাচের দিন সকালে আসবে সাকিবের আরও একটি স্ক্যানের রিপোর্ট। সেটা এলেই আসলে নিশ্চিত হবে বাংলাদেশের একাদশ।
তবে সম্ভাবনা প্রবল সাকিবের একাদশে থাকার। সেদিক বিবেচনায় প্রায় অপরিবর্তিত একাদশ নিয়েই মাঠে নামবে বাংলাদেশ দল। সম্ভাবনা রয়েছে একটি পরিবর্তনের। বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যকার ম্যাচটি অনুষ্ঠিত হবে পুনের মহারাষ্ট্র ক্রিকেট এসোসিয়েশন স্টেডিয়ামে। এবারের বিশ্বকাপের এটি এই ভেন্যুর প্রথম ম্যাচ।
স্বাভাবিকভাবেই উইকেট রয়েছে অক্ষুণ্ণ। আর পুনের এই মাঠ খুব একটা প্রশস্ত নয়। উইকেটও ব্যাটারদের পক্ষেই থাকে। তাইতো এই মাঠে হওয়া ৭ ওয়ানডে ম্যাচের ৮ ইনিংসেই ৩০০ রান পেরিয়েছে। সেদিক থেকেও বাংলাদেশ একটু দুশ্চিন্তাতেই থাকবে হয়ত। একাদশে অতিরিক্ত একজন ব্যাটারকে নিয়ে নামতে হবে বাংলাদেশকে।
কারণটা স্পষ্ট। বাংলাদেশের ব্যাটিং লাইনআপ আলো ছড়াতেন হচ্ছেন ব্যর্থ। সেদিক থেকে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের একাদশ থেকে বাদ পড়ার কোন সম্ভাবনা নেই। অন্যদিকে, শুরুর সাত ব্যাটারদের মধ্য থেকে পরিবর্তন আসার সম্ভাবনাও প্রায় শূন্যের কাছাকাছি। যদিও তানজিদ হাসান তামিমকে বসিয়ে মেহেদী হাসান মিরাজকে দিয়ে করানো হতে পারে ওপেনিং।
আর তাসকিন আহমেদের নেতৃত্বাধীন পেস আক্রমণেও বদল আসার কোন ইঙ্গিত মেলেনি। কিন্তু হাসান মাহমুদকে একাদশে দেখা গেলে খুব একটা অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না। কেননা বাংলাদেশের পেস আক্রমণ আশানুরুপ পারফর্ম করতে পারেনি।
বাংলাদেশের একাদশে স্রেফ একটা জায়গা নিয়েই এখনও সংশয় রয়েছে। সেটি সাকিব আল হাসানের সংযুক্তি। যদি সাকিব না খেলেন, তবে একাদশে নিশ্চিতরুপেই সুযোগ মিলবে নাসুম আহমেদের। তবে খানিকটা ভরকে দিতে নাসুম, সাকিব দু’জনকেই হয়ত একাদশে দেখা যেতে পারে।
কেননা ভারতের ব্যাটিং লাইনআপের শুরু ৬জন ব্যাটারই ডানহাতি। ইশান কিষাণ একাদশে সুযোগ পাবেন না, যেহেতু জ্বর কাটিয়ে শুভমান গিল ফিরেছেন। শ্রেয়াস আইয়ারও তার ধারার ব্যাটিংটা করছেন নিয়ম করেই। সেদিক থেকে বাংলাদেশ নাসুমকে একাদশে ফিট করবার একটা সুযোগ হয়ত নিতে পারে। তবে সেটার সম্ভাবনা বেশ অল্পই। কারণ যথারীতি বাংলাদেশের ব্যাটিং কলাপ্স।
তবে ভারতের ব্যাটিং অর্ডারের কথা চিন্তা করে বাংলাদেশ একজন অতিরিক্ত বোলার নিয়ে খেলার ঝুঁকিটা নিতে হবে। সেদিক থেকে শেখ মেহেদীও অন্তর্ভুক্ত হতে পারেন একাদশে। টসের পরেই আসলে বাংলাদেশের একাদশ নিশ্চিত হবে।
অন্যদিকে, ভারতের একাদশও থাকতে পারে অপরিবর্তীত। একটি পরিবর্তন হলে সেখানে রবিচন্দ্রন অশ্বিনকে দেখা যাবে ভারতের একাদশে। শার্দুল ঠাকুরকে ছেড়ে দিতে হতে পারে নিজের জায়গা। একাদশ যেমনই হোক লড়াইটা জম্পেশ হবে সেটাই প্রত্যাশিত।
- বাংলাদেশের সম্ভাব্য একাদশ
লিটন কুমার দাস, মেহেদী হাসান মিরাজ, নাজমুল হোসেন শান্ত, সাকিব আল হাসান (অধিনায়ক), মুশফিকুর রহিম, তাওহীদ হৃদয়, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, নাসুম আহমেদ, তাসকিন আহমেদ, মুস্তাফিজুর রহমান, হাসান মাহমুদ।
- ভারতের সম্ভাব্য একাদশ
রোহিত শর্মা (অধিনায়ক), শুভমান গিল, বিরাট কোহলি, লোকেশ রাহুল, শ্রেয়াস আইয়ার, হার্দিক পান্ডিয়া, রবীন্দ্র জাদেজা, রবিচন্দ্রন অশ্বিন, জাসপ্রিত বুমরাহ, কুলদ্বীপ যাদব, মোহাম্মদ সিরাজ।