মুশফিকুর রহিম, ছয় নাকি চার?

ইয়ন মরগ্যান, এবিডি ভিলিয়ার্স, জো রুটের মত ব্যাটাররাও তালিকায় তাঁর পিছনে অবস্থান করছে।

ক্যারিয়ারের শুরুর দিকে বিভিন্ন পজিশনে ব্যাটিং করার পর মুশফিকুর রহিম শেষমেশ স্থায়ী হয়েছিলেন চার নম্বরে। আর এরপরই বাংলাদেশ পেয়েছে সময়ের অন্যতম সেরা এক ব্যাটারকে; গত এক দশকের বেশি সময় ধরে দলের মিডল অর্ডার সামলেছেন তিনি। অন্তত চার নম্বরে মুশফিকের চেয়ে ভাল করেছেন এমন ব্যাটার হাতেগোনা কয়েকজন।

রানের হিসেবে এই উইকেটরক্ষকের ওপরে আছে কেবল রস টেইলর। এই পজিশনে ১১৫ ইনিংসে পাঁচ হাজারের বেশি রান করেছেন কিউই তারকা; অন্যদিকে, ৯৫ ইনিংস খেলা মুশির রান ৩৭৫৭। ইয়ন মরগ্যান, এবিডি ভিলিয়ার্স, জো রুটের মত ব্যাটাররাও তালিকায় তাঁর পিছনে অবস্থান করছে।

স্ট্রাইক রেট, গড় কিংবা ইম্প্যাক্ট সবকিছু বিবেচনা করলে বাংলাদেশের ইতিহাসেরই সেরা মিডল অর্ডার ব্যাটার বলা যায় মুশফিককে। কিন্তু, হঠাৎ করেই ২০২৩ সালের শুরুতে ফিনিশারের দায়িত্ব দেয়া হয় তাঁকে।

সেই চ্যালেঞ্জ নিতে ভয় পাননি তিনি, দারুণভাবে মানিয়েও নিয়েছেন। আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথমবার নতুন পরিচয়ে মাঠে নেমে করেছিলেন বাংলাদেশিদের মাঝে ওয়ানডের দ্রুততম সেঞ্চুরি।

এই ডানহাতির ব্যাটিং পজিশনে পরিবর্তনের ব্যাপারে হাবিবুল বাশার বলেন, ‘পরিকল্পনা ছিল তাওহীদ হৃদয় চারে ব্যাট করবে, সে ভাল স্ট্রাইক রেটে রান করতে পারে। এবং মুশফিক ছয়ে নামবে কারণ তাঁর ফিনিশারের ভূমিকা পালন করার সামর্থ্য আছে এমনটা মনে হয়েছিল।’

তিনি আরও যোগ করেন, ‘সে (মুশি) ভালো করছে এবং তাঁর নতুন পজিশনে ভালোভাবে মানিয়ে নিয়েছে, এটি নিয়ে কোনো সমস্যাও হচ্ছে না তাঁর।’

আসলেই তাই, নতুন পরিচয়ে দারুণ সফল মুশফিক। এখন পর্যন্ত ছয় নম্বরে বছরের সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক তিনি। ৬১.৩৩ গড়ে ৫৫২ রান করে ডেভিড মিলার, হার্দিক পান্ডিয়াদের পিছনে ফেলেছেন এই টাইগার তারকা।

কিন্তু মুশফিক নিচের দিকে চলে যাওয়ায় মিডল অর্ডার নিয়ে সমস্যায় পড়েছে পুরো দল। টপ অর্ডারের নড়বড়ে অবস্থার চাপ নিতে পারছে না মিডল অর্ডার, যার প্রভাব পড়ছে ম্যাচের ফলাফলে। ২০২৩ সালে বাংলাদেশের ওপরের চার ব্যাটারের গড় ২৮.৮৩ যা কি না বিশ্বকাপে অংশগ্রহণকারী দেশগুলোর মধ্যে সর্বনিম্ন।

সেজন্য চাইলে মুশফিককে আবারো চার নম্বরে খেলাতে পারে টিম ম্যানেজম্যান্ট ৷ তিনি থাকলে নি:সন্দেহে আরো শক্তিশালী হবে মিডল অর্ডার। কিন্তু নির্বাচক হাবিবুল বাশার তেমনটা চান না। সাবেক এই ক্রিকেটারের মতে, মুশি ফিনিশারের ভূমিকাতে দুর্দান্ত পারফর্ম করছেন, তাই পুনরায় তাঁর ব্যাটিং অর্ডার পরিবর্তনের প্রয়োজন নেই।

একই মনোভাব টিম ডিরেক্টর খালেদ মাহমুদ সুজনেরও। তিনি বলেন, ‘আমাদের এমন খেলোয়াড় কমই আছে যারা মুশফিকের মত শট খেলতে পারে। কেউই তাঁর মতো ফাস্ট বোলারদের বিরুদ্ধে স্কুপ শট করতে পারে না। সে ইয়র্কার এবং স্লোয়ার বলের বিরুদ্ধেও চমৎকার, তাই ছয় নম্বরে থাকা মুশফিক খুবই গুরুত্বপূর্ণ।’

সুতরাং স্পষ্ট যে, টপ অর্ডার সফল না হলেও মুশফিকুর রহিমকে আপাতত উপরে তুলে আনার পরিকল্পনা নেই ম্যানেজম্যান্টের। তাই তো দলকে ভাল শুরু এনে দেয়ার দায়িত্ব নিতে হবে লিটন, শান্তকেই।

 

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...