বাবরের যুতসই স্ট্রাইকরেটেও অতৃপ্তি

তিনি নিজেও হয়ত সেই সমালোচনা থেকে বেড়িয়ে আসতে চান।

প্রায় প্রতিদিনই বাবর আজমকে সহ্য করতে হয় তীর্যক কথার বাণ। তার স্ট্রাইকরেট প্রতিনিয়ত হয় প্রশ্নবিদ্ধ। তিনি নিজেও হয়ত সেই সমালোচনা থেকে বেড়িয়ে আসতে চান। সে প্রয়াশ চোখে পড়েছে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের সর্বশেষ টি-টোয়েন্টি ম্যাচে।

বেন সিয়ার্সের এক দুর্ধর্ষ ইয়োর্কারে আউট হতে হয়েছে বাবর আজমকে। এর আগে নিজের টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারের ৩৪ তম হাফসেঞ্চুরি তুলে নেন। শেষ অবধি ৪৪ বলের একটি ইনিংস খেলে গেছেন তিনি। স্ট্রাইকরেট ছিল প্রায় ১৫৭। চাইলেই তাকে আবারও সমালোচনার টেবিলে তুলে দেওয়া যায়।

কেননা পাওয়ার প্লে শেষে বাবর আজমের স্ট্রাইকরেট ছিল প্রায় ১৭৯। ১৯ বলে ৩৪ রান এসেছিল তার ব্যাট থেকে। কিন্তু ফিফটি অবধি পোঁছাতে বাবরের নামের পাশে যুক্ত হয়ে যায় ৩৫ বল। অর্থাৎ পরবর্তী ১৬ রান যুক্ত করতে বাবর খরচ করেন আরও ১৬টি বল। আবার এরপরের ৯ বলে ১৮ রান নেন। তখন আবার স্ট্রাইকরেট ছিল তার ২০০!

এই যে মাঝের ১৬ বলে ১৬ রান নেওয়াটাই বাবরকে বরং বারবার সমালোচনার পাত্র বানায়। ধারাবাহিকভাবে রান করে গিয়েও নিন্দুকদের যেন চুপ করাতে ব্যর্থ হন বাবর। তেমনটা হওয়ার জন্যে বাবর নিশ্চয়ই দায়ী। অবশ্য সময়কেও দায় দেওয়াটা একেবারেই অবান্তর নয়।

কেননা বর্তমান বিশ্ব ক্রিকেটে একজন ওপেনার প্রায় ২০০ স্ট্রাইকরেটে ব্যাট করবেন টি-টোয়েন্টিতে- সেটাই যেন অলিখিত এক নিয়মে পরিণত হয়েছে সময়ের সাথে সাথে। একজন ওপেনার ৫০ বল খেলে ফেললে তার নামের পাশে শতরান দেখতে চায় দর্শকরা। সেখানেই মূল সমস্যার শুরু হয়।

এই সময়ের অন্যতম সেরা ব্যাটার হিসেবেই ধরা হয় বাবর আজমকে। এমনকি পাকিস্তানের বর্তমান দলের একজন গুরুত্বপূর্ণ সদস্য তিনি। স্রেফ অধিনায়ক বলেই তিনি গুরুত্বপূর্ণ নন। ব্যাটার বাবরের গুরুত্ব অধিনায়ক বাবরের চাইতে ঢের বেশি।


সে প্রয়োজনীয়তা বাবরও নিশ্চয়ই বুঝতে পারেন। তাইতো দায়িত্বশীল সব ইনিংস খেলতে দেখা যায় তাকে। কিন্তু এই দায়িত্ব নেওয়ার ধরণটা বহু লোকের চোখের বালি। তার মূল কারণই হচ্ছে তার স্টাইকরেট। ঠিক সে কারণেই সম্ভবত বাবর নিজেকে খানিকটা হলেও বদলে ফেলতে চাইছেন।

তিনি যেন তার স্ট্রাইকরেটের দিকেও খানিকটা মনোযোগ বাড়াচ্ছেন। পাওয়ার প্লে থেকে মিডল ওভারের মধ্যকার ট্রানজিশনের মধ্যকার সময়ে বাবর এখন খানিকটা থমকে যাচ্ছেন। দলের উইকেট পতনের সাথে সাথে ফিল্ডিং পজিশনের পরিবর্তন তাকে প্রভাবিত করছে। কিন্তু সময়ের সাথে খাপ খাইয়ে নিয়ে তিনি আবার ঠিকই আগ্রাসী ভূমিকায় অবতীর্ণ হচ্ছেন।

অনেকেই হয়ত আবার বলে বসবেন বাবর ব্যক্তিগত অর্জনের জন্যে রান তোলার গতি স্লথ করে দেন। সেটাকেও একেবারে উড়িয়ে দেওয়া যায় না। সেক্ষেত্রে হয়ত বাবরকে এটাও বোঝা প্রয়োজন তিনি যে রান ধারা অব্যাহত রেখেছেন, তা তাকে অন্যতম সেরা হিসেবে বিবেচনা করতে যথেষ্ট।


মাঝে মধ্যে তার নিজের যেই চিরায়ত খেলার ধরণ রয়েহে তা থেকে বেড়িয়ে আসা উচিত। ব্যাকরণের বাইরে গিয়েও রান তোলার চেষ্টা করা উচিত। শুরুতে ব্যর্থ হলেও যে শেষ অবধি সেই সুফল দলের সাথে সাথে তিনিও ভোগ করবেন- সেটা আর বলার অপেক্ষা রাখে না।

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...