বায়ো বাবলের যে ধরণটা ম্যানচেস্টার, সাউদাম্পটনে চালু হয়েছিলো, তা এ বার আইপিএল যে ধরে রাখতে পারেনি, তাতে কোনো সন্দেহ নেই।
বায়ো বাবলকে একেবারে লখিন্দরের বাসরঘর বানানোর জন্য চাই মাঠের সাথে হোটেল। অন্ততপক্ষে বিমান ভ্রমণ তো এড়াতেই হবে। এবার আইপিএলে এর কোনোটাই ছিলো না। এমনকি গত বছর আরব আমিরাতে আইপিএলে যে কঠোর বায়ো বাবল ছিলো, তাও এবার ছিলো না। এখন অনেক খেলোয়াড়ই বলছেন, আরব আমিরাতের তুলনায় ঠুনকো ছিলো এবার ভারতের বায়ো বাবল। আর সে জন্যই দারুনভাবে দলগুলোর মধ্যে ছড়িয়ে পড়েছে সংক্রমণ।
এবার আইপিএলে দলগুলোকে অনুশীলন করতেও ভ্রমণ করতে হয়েছে বেশ দূরে। প্রায় ম্যাচের পর বিমানে চড়তে হয়েছে। আর নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ক্রিকেটার আনন্দবাজার পত্রিকাকে বলেছেন, এই ফাঁক থেকেই করোনা হানা দিয়েছে হয়তো।
এই ক্রিকেটার বলেছেন, ‘প্রতিটি দল এবং বোর্ড প্রচণ্ড চেষ্টা করলেও বলতে বাধ্য হচ্ছি, আমিরশাহিতে জৈব সুরক্ষা বলয় অনেক কঠিন ছিল। এখানে আলাদা আলাদা তলায় থাকা সত্ত্বেও যাতায়াতে কোনও বাধা ছিল না। অনেককে পুল ব্যবহার করতেও দেখেছিলাম। অনুশীলনের কেন্দ্রগুলিও ছিল অনেক দূরে।’
তবে বাংলার ক্রিকেটার শ্রীবৎস গোস্বামী আনন্দবাজারকেই বলেছেন, তিনি বায়ো বাবলে কোনো সমস্যা দেখতে পাননি। তিনি বলেছেন, ‘বলয়ের ভেতরে আমাদের নিরাপত্তা অটুট ছিল। কেউ সেটা ভাঙেনি। কিন্তু ভাইরাস একবার প্রবেশ করার পর সবাই ভয় পেয়ে গিয়েছিল, বিশেষত বিদেশিরা। আমরা খেলোয়াড়। আজ যদি আমাদের করোনা হয় তাহলে হয়তো সেরে উঠব। কিন্তু যদি আমাদের উপসর্গ না থাকে এবং সেটা পরিবারের মধ্যে ছড়িয়ে দিই তখন কী হবে? বেশিরভাগ ক্রিকেটারই এই ভয়টাই করছিল। পরিবারের কেউ আক্রান্ত হোক সেটা ওরা চায়নি।’
তারপরও তাহলে করোনা সংক্রমণ হলো কেমন করে?
এই বিষয়টি ভাবাচ্ছে খোদ বোর্ড সভাপতি সৌরভকেও। তিনিও বুঝতে পারছেন না যে, কোত্থেকে সংক্রমন হলো। তিনি গতকাল বলেছেন, ‘আমরাও বুঝতে পারছি না যে, বায়ো বাবলে কোনো ভাঙন ধরেছিলো কি না। কেনো এতো সংক্রমণ হলো, এটা তো কেউ বুঝতে পারছে না।’
তবে এখানে একটা যুক্তি হলো, গতবার আইপিএলের বায়ো বাবল দেখার জন্য যে প্রতিষ্ঠানটা দায়িত্বে ছিলো, তারা এবার ছিলো না। আরব আমিরাতের বাইরে ওই প্রতিষ্ঠানটির অবকাঠামো নেই বলে এবার নতুন প্রতিষ্ঠানের কাছে গিয়েছে ভারতীয় বোর্ড।
অনেকে বলছেন, নতুন এই প্রতিষ্ঠানটি যথেষ্ঠ দক্ষ না হওয়ায় এই ঘটনা ঘটেছে। তবে সৌরভ এটাও স্বীকার করছেন না। তিনি বলছেন, ‘তাঁরা সকলেই পেশাদার ছিল। বিশ্ব জুড়ে যারা পেশাদার তারাও এটি নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না। ইংল্যান্ডে যখন সংক্রমণ হয়েছিল তখন ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে প্রবেশ করে ছিল। ম্যানচেস্টার সিটি, আর্সেনালের খেলোয়াড়রা সংক্রমিত হয়েছে। ম্যাচ গুলো পুনরায় অনুষ্ঠিত হয়। কারণ তাদের মৌসুমটি ছয় মাস দীর্ঘ, তারা এটি করতে পারে। তবে আমাদের মৌসুম ছোট। যেহেতু আমাদের খেলোয়াড়দের তাদের নিজ নিজ দেশে পাঠাতে হবে, তাই পুনরায় আয়োজন খুব কঠিন ছিল।’