প্রথম টেস্টে তাসকিন আহমেদ ও শরিফুল ইসলামকে ছাড়াই মাঠে নামতে হয়েছে বাংলাদেশকে। তবে স্বস্তির খবর দুই পেসারই পুরোপুরি প্রস্তুত আছেন সাদা বলের ক্রিকেটের জন্য। তবে এর মধ্যেই আবার পুরনো অস্বস্তিতে বাংলাদেশ। বিমানে ওঠার আগেই আবার ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফর থেকে ছিটকে গেলেন মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে এখন সাইফউদ্দিনের বদলি হিসেবে ওয়েস্ট ইন্ডিজ যাবেন কে? বাংলাদেশের সামনে আছে দুটি বিকল্প।
ওদিকে ওয়ানডে ফরম্যাটে বাংলাদেশের পেস আক্রমণ এখন বেশ গোছানো। সাম্প্রতিক সময়ে ওয়ানডে ম্যাচগুলোতে তাসকিন আহমেদ, শরিফুল ইসলাম ও মুস্তাফিজুর রহমানই দলের পেস আক্রমণ সামলেছেন। এছাড়া অলরাউন্ডার হিসেবে ক্যারিবীয় কন্ডিশনে দলে বাড়তি শক্তি যোগ করতে পারতেন মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন।
এই পেস বোলিং অলরাউন্ডার বাংলাদেশের হয়ে সর্বশেষ ওয়ানডে ম্যাচ খেলেছেন প্রায় এক বছর আগে। এছাড়া বাংলাদেশের হয়ে সর্বশেষ মাঠে নেমেছেনও প্রায় ৮ মাস আগে। তবে ইনজুরির কারণে দীর্ঘ বিরতি কাটিয়ে আবার মাঠে ফেরার অপেক্ষাতেই ছিলেন সাইফউদ্দিন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এই পেসারের অপেক্ষা আরো বাড়লো। তাঁর ফিটনেস নিয়ে পুরোপুরি সন্তুষ্ট হতে পারেননি বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) চিকিৎসকরা।
অথচ, এই শরীর নিয়েই ক’দিন আগে ঢাকা প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লিগ খেলেছেন তিনি। এরপর রাজশাহীতে একটা স্থানীয় টুর্নামেন্টও খেলে এসেছেন। কিন্তু, হঠাৎ করেই যাওয়ার আগ মুহূর্তে ছিটকে গেলেন। তাঁর ফিটনেসে নাকি টিম ম্যানেজমেন্ট সন্তুষ্ট হয়নি।
সাইফউদ্দিনের পিঠের পুরনো ব্যাথাই আবার নাড়াচাড়া দিয়ে উঠেছে। এছাড়া বোলিং এর সময় ব্যাথা অনুভব করায় তাঁকে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে পাঠাতে রাজি হয়নি বিসিবি। ফলে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফেরার জন্য সাইফউদ্দিনকে আরো অপেক্ষা করতে হচ্ছে।
এবার একটু বাংলাদেশ দলের দিকে নজর দেয়া যাক। এই মুহূর্তে ওয়ানডে দলে পেসার আছেন মোট চারজন। এরমধ্যে তিনজন হচ্ছেন তাসকিন, শরিফুল ও মুস্তাফিজ। এছাড়া টেস্ট ক্রিকেটে দারুণ ফর্মে থাকা এবাদতও আছে ওয়ানডে স্কোয়াডে।
এরমধ্যে তাসকিন ও শরিফুল দুজনই সবেমাত্র ইনজুরি থেকে সেরে উঠেছেন। ফলে তাঁদের সবগুলো ম্যাচ খেলানো উচিৎ হবে কিনা সেটাও ভেবে দেখার বিষয়। এছাড়া এই তিনজনের কেউ যদি আবার ইনজুরিতে পড়েন তাহলে কে খেলবেন? একমাত্র বাড়তি পেসার হিসেবে দলে আছেন এবাদত হোসেন।
কিন্তু সাদা বলের ক্রিকেটে এই পেসার কখনো বাংলাদেশের হয়ে মাঠে নামেননি। এছাড়া ঘরোয়া টুর্নামেন্ট গুলোতেও সাদা বলের ক্রিকেটে তিনি খুব বেশি নজর কাড়তে পারেননি। সব মিলিয়ে টেস্ট ক্রিকেটের জন্যই তাঁকে বিবেচনা করা হয়। ফলে হঠাত করেই এবাদতের মত একজন পেসারকে ওয়ানডে ম্যাচে নামিয়ে দিতে পারবে বাংলাদেশ?
ওদিকে টি-টোয়েন্টি সিরিজে অবস্থাটা আরো জটিল। টেস্ট সিরিজের পরেই টি-টোয়েন্টি সিরিজ হওয়ায় সেখানে তাসকিনের খেলাটা এখনো নিশ্চিত না। যদি তাসকিন না খেলতে পারেন তাহলে এই ফরম্যাটের স্কোয়াডে আর পেসার থাকেন মাত্র দুইজন। মুস্তাফিজুর রহমান ও শরিফুল ইসলাম।
সেক্ষেত্রে টি-টোয়েন্টি ম্যাচে কী মাত্র দুইজন পেসার নিয়ে মাঠে নামবে বাংলাদেশ? নাকি তাসকিনের খেলার অপেক্ষায়ই থাকবে। আবার এমনও হতে পারে যে তাসকিনকে পাওয়ার গ্রিন সিগন্যাল পাওয়াতেই হয়তো শেষ মুহূর্তে হাফ ফিট সাইফউদ্দিন বাদ পড়লেন।
এখন পর্যন্ত অবশ্য বদলি হিসেবে কাউকে ওয়েস্ট ইন্ডিজ পাঠানোর খবর শোনা যায়নি। তবে বাংলাদেশ যদি কাউকে পাঠাতে চায় সেক্ষেত্রে সবচেয়ে সহজ সমাধান হতে পারেন হাসান মাহমুদ। এমনকি টেস্ট দলেও তাঁকে যুক্ত করা হয়েছিল। পরে আবার অজানা কারণে তাঁকে বাদ দেয়া হয়। ওদিকে এই পেসারও ইনজুরি কাটিয়ে আবার আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফেরার অপেক্ষায় আছেন। কেউ কেউ তো প্রকাশ্যেই বলেছেন যে স্রেফ টাকা বাঁচাতে তাঁকে পাঠানো হয়নি।
এছাড়া সাইফউদ্দিনের বদলি হিসেবে যদি কোন পেস বোলিং অলরাউন্ডারকেই পাঠাতে চায় সেই দরজাও খোলা আছে বাংলাদেশের সামনে। এই মুহূর্তে হাই পারফর্মেন্সের হয়ে মিরপুরেই ক্যাম্প করছেন সম্ভাবনাময় পেস বোলিং অলরাউন্ডার মৃত্যুঞ্জয় চৌধুরী। এবারের বিপিএল ও ডিপিএলেও দারুণ ছন্দে ছিলেন এই পেসার। এছাড়া ব্যাট হাতেও বেশ কার্যকর হতে পারেন তিনি।
তবে, একটা ব্যাপার পরিস্কার যে – এই মুহূর্তে নতুন করে কোনো বদলি খেলোয়াড় মানসিকতাতে নেই বিসিবি। সেটা খরচ কমানোর জন্য নাকি টিম ম্যানেজমেন্টের চাহিদাহীনতা – তার অবশ্য কোনো সদুত্তর মেলেনি।