স্পিন আক্রমণ, ভারতের এক্স ফ্যাক্টর

চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ভারত এবং পাকিস্তানের মধ্যকার দ্বৈরথে স্পিনারদের গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব পুরনো সময় থেকেই আছে। অনিল কুম্বলে, সাকলাইন মুশতাক, সাঈদ আজমল কিংবা হরভজন সিংয়ের মত কিংবদন্তি স্পিনাররা এই প্রতিদ্বন্দ্বিতাকে অনন্য মাত্রা দিয়েছেন – দুই দেশের স্পিনারদের লড়াইটাও হতো সমানে সমান।

কিন্তু বর্তমানে পাকিস্তানের স্পিন বিভাগ বড্ড দুর্বল। বিশেষ করে ভারতের সঙ্গে তুলনা করা হলে পাক স্পিনারদের গড়পড়তাই মনে হবে প্রায় সবার। ক্রিকেটীয় সামর্থ্য কিংবা সাম্প্রতিক ফর্ম সব দিক দিয়েই শাদাব, নওয়াজদের চেয়ে অনেক এগিয়ে আছেন জাদেজা, কুলদীপরা। এছাড়া অশ্বিনের কাছাকাছি অভিজ্ঞতা সম্পন্ন কেউই নেই দেশটির স্পিন আক্রমণে।

পিচের সাহায্য ছাড়াই ব্যাটারদের ওপর চেপে বসতে জানেন জাদেজা; আর পিচের সাহায্য পেলে একাই ধ্বসিয়ে দিতে পারবেন যেকোনো দলকে। অন্যদিকে, কুলদীপ যাদব আগের চেয়ে বেশি ধারালো হয়ে উঠেছেন; এবং অশ্বিন নিজের বোলিং ভান্ডারে যোগ করেছেন ক্যারম, রিভার্স ক্যারম, ফ্লিপারের মত অস্ত্র।

সেই তুলনায় শাদাব খানরা অনেকটাই সাদামাটা। এই বিশ্বকাপের কথাই ভাবা যাক – প্রতি ৪৮ বলে একটি করে উইকেট পেয়েছেন নওয়াজ, এছাড়া একটা উইকেটের জন্য শাদাবকে করতে হয়েছে ৩৯ বল। অথচ প্রতি ৩৩ বলে একবার করে উদযাপনের উপলক্ষ পেয়েছে স্বাগতিক স্পিনাররা।

আবার প্রতি ওভারে পাকিস্তানি স্পিনাররা খরচ করেছেন ৬.০৩ রান; যেখানে ভারতীয়রা ওভার প্রতি ৩.৭২ রান দিয়েছে। পার্থক্যটা স্পষ্ট; তাই তো বলা যায়, যেকোনো পিচে যেকোনো সময় স্পিন আক্রমণের দিক দিয়ে ভারত যোজন যোজন এগিয়ে থাকবে পাকিস্তান থেকে।

গত কয়েক বছরে ক্রিকেটের রূপরেখা অনেকটা পরিবর্তন হয়েছে। এখন আর রক্ষণাত্বক পরিকল্পনা তেমন কেউই করে না, সেজন্যই মাঝের ওভার গুলোতে রান আটকানোর চেয়ে উইকেট তোলার দিকেই বেশি নজর দেয় বড় দলগুলো।

কিন্তু ভারত অন্য যে কোনো দলের চেয়ে বেশি সফল হয়েছে এই জায়গায়। ১১তম থেকে ৪০তম ওভার পর্যন্ত তাঁদের স্ট্রাইক রেট (২৮.০৯) সবচেয়ে সেরা। বিপরীত চিত্র বাবর আজমদের, ম্যাচের এই সময়ে একটি উইকেটের জন্য ৪৩.৬২ বল অপেক্ষা করতে হয়েছে তাঁদের।

এমন পরিস্থিতি থেকে ঘুরে দাঁড়াতেই হবে শাদাব খানদের; নিজের সেরাটা দিতে হবে যেকোনো মূল্যে। তা না হলে বিশ্ব মঞ্চে ভাল কিছু করার স্বপ্ন স্বপ্নই থেকে যাবে বাবর আজমের দলের জন্য।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link