ব্যাঙ্গালুরুর দুর্ভাবনা মিডল অর্ডারে

অম্ল মধুর এক আইপিএল মৌসুম কাটাচ্ছে রয়েল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালুরু। নয় ম্যাচে পাঁচ জয়ে শেষ চারে ওঠার দৌড়ে ভালোভাবেই টিকে আছে ফাফ ডু প্লেসির দল। কিন্তু টুর্নামেন্টের শেষদিকে এসেও এখনো মিডল অর্ডারে ভারসাম্য খুঁজে পায়নি দলটি। 

টুর্নামেন্টের শুরু থেকেই ব্যাঙ্গালুরুর ব্যাটিং লাইন আপকে টানছেন তাঁদের টপ অর্ডারের তিন তারকা ফাফ ডু প্লেসি, বিরাট কোহলি এবং গ্লেন ম্যাক্সওয়েল। নয় ম্যাচে ৪৬৬ রান নিয়ে টুর্নামেন্টের সর্বোচ্চ রানসংগ্রাহক অধিনায়ক ডু প্লেসি।

এছাড়া বিরাট কোহলির ৩৬৪ রানের পাশাপাশি ম্যাক্সওয়েলের সংগ্রহ ২৬২ রান। ব্যাঙ্গালুরুর মোট রানের সিংহভাগই এসেছে এই তিনজনের ব্যাট থেকে। মূলত মৌসুম শুরুর আগে রজত পাতিদারের ইনজুরির দলটার মিডল অর্ডারের ভারসাম্য নষ্ট করে দিয়েছে। 

এছাড়া দীনেশ কার্তিকের ফর্মহীনতাও ব্যাঙ্গালুরুর মিডল অর্ডারে পথ হারাবার বড় কারণ। অথচ গত মৌসুমে দুর্দান্ত ফর্মে ছিলেন এই উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান। ১৬ ম্যাচে ১৮৩ স্ট্রাইকরেটে ৩৩০ রান করে ক্যারিয়ারের শেষবেলায় জায়গা করে নিয়েছিলেন ভারতের বিশ্বকাপ স্কোয়াডে। কিন্তু এবারের মৌসুমে ব্যাট হাতে বড্ড বিবর্ণ লাগছে কার্তিককে, আট ম্যাচে সংগ্রহ করেছেন সাকুল্যে ৮৩ রান। স্ট্রাইকরেটটাও কমে গেছে অনেক, মাত্র ১৩১। 

বেশিরভাগ ম্যাচেই দেখা গেছে টপ অর্ডার দুরন্ত সূচনা এনে দিলেও মিডল অর্ডারের ব্যর্থতার কারণে মাঝারি মানের সংগ্রহ নিয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হচ্ছে ব্যাঙ্গালুরুকে। এছাড়া রান তাড়া করতে নেমেও শেষ পাঁচ ওভারের ব্যর্থতায় বেশ কয়েক ম্যাচে পরাজিত হয়েই থাকতে হয়েছে ব্যাঙ্গালুরুকে।

 কেবল অভিজ্ঞ কার্তিক নন, মিডল অর্ডারে তরুণ যারাই সুযোগ পেয়েছেন কেউই কাজে লাগাতে পারেননি। মহিপাল লোমরর, শাহবাজ আহমেদ, সুয়াশ প্রভুদেশাইরা সুযোগ পেয়েও এখনো পর্যন্ত আস্থার প্রতিদান দিতে পারেননি। 

ভারতের সাবেক পেসার ইরফান পাঠান তাই সরাসরি সমালোচনা করেছেন ব্যাঙ্গালুরুর মিডল অর্ডারের। তিনি বলেন, ‘রয়েল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালুরুর মিডল অর্ডারকে ভীষণ দুর্বল লাগছে। দীনেশ কার্তিক নিজের নামের প্রতি সুবিচার করতে পারছেন না। গত আট ম্যাচে বড় সংগ্রহ হোক কিংবা রান তাড়ার লক্ষ্যে যখনই দলের তাঁকে প্রয়োজন হয়েছে, তিনি নিজের সেরাটা দিতে ব্যর্থ হয়েছেন। ব্যাঙ্গালুরু ম্যানেজমেন্টকে তাই এই সমস্যার সমাধান দ্রুত খুঁজে বের করতে হবে।’

তিনি আরো বলেন, “ফাফ, কোহলি কিংবা ম্যক্সওয়েলরা প্রতিদিন আপনাকে রান এনে দেবে না। ব্যাঙ্গালুরুকে তাই ভাবতে হবে এই তিনজনের অফফর্মের দিনে তাঁরা কাকে ভরসা করবে। দীনেশ কার্তিক কিংবা মহিপাল লোমররের মাঝে একজনকে আরো দায়িত্বশীল হতে হবে।” 

ব্যাঙ্গালুরু ম্যানেজমেন্ট অবশ্য সমস্যার সমাধানে চেষ্টার কমতি রাখছে না। মিডল অর্ডারে সমস্যার সমাধানে ইতোমধ্যেই ডেভিড উইলির পরিবর্তে দলে ভিড়িয়েছে অভিজ্ঞ কেদার যাদবকে। কিন্তু দুশ্চিন্তার ব্যাপার হলো কেদার যাদবের অভিজ্ঞতার ভান্ডার অফুরন্ত হলেও তিনি অনেকদিন যাবত খেলার বাইরে। 

এছাড়া আগের মৌসুমগুলোতে তাঁকে বয়সের ভারে ন্যুব্জ এক ব্যাটসম্যান বলেই মনে হয়েছে যিনি কিনা নিজের সেরা সময়টা পেছনে ফেলে এসেছেন। এখন দেখার বিষয় ব্যাঙ্গালুরুর মিডল অর্ডারের সমস্যা সমাধানে কেদার কতটা কার্যকরী হতে পারেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link