‘বৈধ’ ছিল গ্রিনের ক্যাচ!

শুভমান গিলের আউট হওয়া ক্যাচটি নিয়ে বিতর্ক যেন থামছেই না। টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ ফাইনালের চতুর্থ দিনের খেলা শেষ হবার পর শুভমান গিল যখন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নিজেই সেই ক্যাচ নিয়ে পোস্ট করেন তখন যেন বিতর্ক আরো উসকে যায়। ক্যামেরন গ্রিনের ধরা সেই ক্যাচ বৈধ কিনা তা নিয়েই মতামত দিচ্ছেন সাবেক ও বর্তমান ক্রিকেটাররা।

অস্ট্রেলিয়ার সাবেক অধিনায়ক রিকি পন্টিং জানিয়েছেন প্রাথমিকভাবে তিনিও ভাবছিলেন বলটি গ্রিনের হাত থেকে মাটি স্পর্শ করছে। তবে পরে টিভি রিপ্লে দেখার পর পন্টিংয়ের মনে হয়েছে গ্রিনের ক্যাচটি বৈধই ছিলো। এমন কঠিন একটি সিদ্ধান্ত সঠিকভাবে নিতে পারার জন্য তৃতীয় আম্পায়ের প্রশংসাও করেন পন্টিং।

অজিদের দেয়া ৪৪৪ রানের টার্গেটে ব্যাট করতে নেমে রোহিত ও শুভমান গিলের ব্যাটে শুরুটা ভালোই করেছিলো ভারত। তবে শুভমান গিল যখন ব্যক্তিগত ১৮ রানে ব্যাট করছেন তখন স্কট বোল্যান্ডের বলে গালি এরিয়াতে অবিশ্বাস্য এক ক্যাচ ধরেন গ্রিন। ক্যাচ ধরেই গ্রিন উদযাপন শুরু করলেও ক্রিজ ছাড়েননি গিল।

তবে তৃতীয় আম্পায়ার বেশ কয়েকবার রিপ্লে দেখার পর আউটের সিদ্ধান্ত দিলে মাঠ ছাড়েন তিনি। আম্পায়ার রিচার্ড ক্যটেলবোরোর এই সিদ্ধান্তে মাঠেই নাখোশ দেখা যায় ভারত অধিনায়ক রোহিতকে। গ্যালারিতে ভারতীয় দর্শকরাও এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে স্লোগান দিতে থাকেন।

আইসিসিকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে পন্টিং বলেন, ‘যখন আমি সরাসরি এটি দেখছিলাম তখন আমার মনে হচ্ছিলো সে পুরোপুরি বলটি ধরতে পেরেছে। কিন্তু সব রিপ্লে দেখার পর আমি নিশ্চিত ছিলাম না বলটি ধরার পর বলটি মাটি স্পর্শ করেছে কিনা।’

পন্টিং আরও বলেন, ‘আমার আসলে মনে হয়েছিলো বলের কিছু অংশ মাটি স্পর্শ করেছে। কিন্তু বল মাটিতে স্পর্শ করার আগে ফিল্ডার যদি বলের ওপর পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেয় তাহলে আম্পায়ারের দৃষ্টিতে সেটি আউটই হবে। আমার মনে হয় আম্পায়ারও এভাবেই ভেবেছেন এবং এটিই হয়েছে।’

এই ক্যাচ নিয়ে যে ভারতের সমর্থকরা প্রবল সমালোচনা করছেন সেটিও জানেন পন্টিং। তিনি বলেন, ‘এটি নিয়ে আরো কথা হবে তা আমি নিশ্চিত এবং অস্ট্রেলিয়ার চেয়ে এই বিষয়টি নিয়ে ভারতেই বেশি কথা হবে। ভারতের সবাই ভাববে এটি নট আউট এবং অস্ট্রেলিয়ার সবাই ভাববে এটি আউট।’

টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালের আগেই মাঠের আম্পায়ারদের সফট সিগন্যালের নিয়মটি তুলে নিয়েছে আইসিসি। পন্টিং মনে করেন সেই নিয়ম থাকলে আম্পায়ার যদি প্রাথমিক ভাবে নট আউট দিতে তাহলে হয়তো বেঁচে যেতেন গিল।

দুইটি বিশ্বকাপ ট্রফিজয়ী অধিনায়ক পন্টিং বলেন, ‘যদি মাঠে এটিকে আউট দেয়া হতো তাহলে তৃতীয় আম্পায়ারকে যথাযত প্রমাণ বের করতে হতো এটিকে আউট দেবার জন্য। আমার মনে হয় না মাঠের আম্পায়ার আউয় না দিলে তৃতীয় আম্পায়ার তেমন কোনো প্রমাণ খুঁজে পেতেন।’

পন্টিং আরো বলেন, ‘আমি এটি বলছি কারণ সফট সিগন্যাল ছাড়াই তৃতীয় আম্পায়ার মনে করেছেন এটি আউট। দিনশেষে আমার মতে সম্ভবত সঠিক সিদ্ধান্তটাই নেয়া হয়েছে।’

মাঠের আম্পায়ারদের সফট সিগন্যাল দেবার নিয়ম তুলে নেয়ায় খুশি পন্টিং, ‘সফট সিগন্যাল তুলে নেয়ায় আমি খুশি হয়েছি। অনেকেই এখন বলবে সফট সিগন্যাল বাদ হয়ে যাবার পর এখন শুধুমাত্র প্রযুক্তির মাধ্যমেই সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তৃতীয় আম্পায়ারই সিদ্ধান্তটা নেন তিনি কি দেখতে পাচ্ছেন তার ওপর ভিত্তি করে।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link