একটা সময় ছিল, যখন মনে হচ্ছিল — দুবাইয়ে এ যেন রিশাদ হোসেনের রাত। দুবাইয়ের আলো ঝলমলে স্টেডিয়ামে, সব আলোই যেন তার দিকে! ব্যাটিং, বোলিং, ফিল্ডিং—সবখানেই নিজের ছাপ রাখলেন, কিন্তু দিন শেষে কি কোনো লাভ হল? গল্পের শেষটা তাঁর জন্য লেখা ছিল ট্র্যাজিক হিরোর মতোই।
বলের গল্প দিয়েই শুরু করা যাক। বিরাট কোহলির বিপক্ষে একটা পরিকল্পনা ছিল, আর সেই পরিকল্পনার কেন্দ্রবিন্দুতে ছিলেন রিশাদ। স্ক্রিপ্ট মেনে লেগ স্পিনের জালে ফাঁসালেন কোহলিকে। সে মুহূর্তে গ্যালারি নিশ্চুপ, প্রতিপক্ষের ড্রেসিংরুম স্তব্ধ।
তারপর অক্ষর প্যাটেলকে ফিরিয়ে দলের প্রত্যাশার পালকে আরেকটি পালক যোগ করলেন। আরেকটি শিকার, আরেকটি শূন্যতা ভারতীয় ডাগআউটে। কিন্তু, ক্রিকেট কি কখনো একক নায়কের খেলা?
এর ব্যাট হাতেও দলের প্রয়োজনে ছুটেছেন তিনি। সময়ের চাহিদা মিটিয়েছেন। শেষের দিকে নেমে ১২ বলে ১৮ রানের এক ঝোড়ো ক্যামিও খেললেন। টানা দুই ছক্কা হাঁকালেন, দৌড়ে রান নিলেন, বাংলাদেশকে এগিয়ে নিতে চাইলেন। থামলেন হার্ষিত রানার বিপক্ষে।
ফিল্ডিংয়েও চূড়ান্ত নিষ্ঠার পরিচয় দিলেন। ধরলেন দুটি ক্যাচ। মাঠে নিজের শরীরটা উজাড় করে দিলেন, যেন আজ তার অস্তিত্ব প্রমাণের দিন! তবু গল্পের শেষটা নিষ্ঠুর থেকে যায়।
দিন শেষে ক্রিকেটের অঙ্ক বড় কঠিন। কিছু রাত থাকে, যেখানে একা নায়ক যথেষ্ট নন, যেখানে একার প্রচেষ্টা দিয়ে গল্পের ভাগ্য লেখা যায় না। রিশাদ সব করেও সফল নন। ব্যক্তিগত অর্জনের ট্রফি যতই ঝলমলে হোক, পরাজয়ের গ্লানি সেটাকে ঢেকে দেয়।
তবে, একটা কথা নিশ্চিত—রিশাদ হোসেন বড় মঞ্চের খেলোয়াড়! ২০২৪ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে যেখানে শেষ করেছিলেন, ঠিক সেখান থেকেই ২০২৫-এর আরেকটি আইসিসি ইভেন্ট শুরু করলেন। সংগ্রামের রং বদলায়নি। সাফল্যের জন্য, দলের জন্য আজও তিনি হন্যে থাকেন। একদিন, এই একই বড় মঞ্চে, নিশ্চয়ই বিজয়ীর গল্পও লিখবেন তিনি!