নানা জল্পনা কল্পনার অবসান ঘটিয়ে সৌদি ক্লাব আল নাসরে যোগ দিয়েছেন পর্তুগিজ তারকা ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো। ইউরোপ এবং আমেরিকার বেশ কয়েকটি ক্লাবে খেলার সুযোগ থাকলেও রোনালদো বেছে নিয়েছেন এশিয়ার ক্লাবটিকে। কাতার বিশ্বকাপ শেষে ছুটি কাটিয়ে নতুন ক্লাবে যোগ দিয়েছেন রোনালদো।
ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডে প্রত্যাবর্তনের পর এবারের মৌসুমের শুরু থেকেই সময়টা ভালো যাচ্ছিল না রোনালদোর। রেড ডেভিলদের নতুন কোচ এরিক টেন হাগের সাথে শুরুতেই দ্বন্দে জড়িয়ে পড়েন। পরবর্তীতে বিশ্বকাপের আগে এক সাক্ষাৎকারে ইউনাইটেড কোচ আর ম্যানেজমেন্টের সমালোচনা করেন। ফলে তাঁর ইউনাইটেড ছাড়া কেবল হয়ে দাঁড়িয়েছিল সময়ের অপেক্ষা। বিশ্বকাপের পর তাই বিশাল অংকের চুক্তিতে আল নাসরে যোগ দেন তিনি।
সৌদি ক্লাবটিতে যোগদানের পর প্রথম সংবাদ সম্মেলনে রোনালদো বলেন, ‘আমার সামনে ইউরোপের বিভিন্ন ক্লাবে খেলার সুযোগ ছিল। ব্রাজিল, যুক্তরাষ্ট্র, অস্ট্রেলিয়া এমনকি পর্তুগালের ক্লাব থেকেও আমাকে প্রস্তাব দেয়া হয়েছিল। কিন্তু আমি আল নাসরকে কথা দিয়েছিলাম।’
স্পোর্টিং লিসবন, ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের হয়ে ২০০৯ সালে বিশাল অংকের ট্রান্সফার ফি’তে রিয়াল মাদ্রিদে যোগ দিয়েছিলেন তরুণ রোনালদো। সেবার ৮০,০০০ দর্শকের সামনে তাঁকে বরণ করে নিয়েছিল সান্তিয়াগো বার্নাব্যু। এক যুগের বেশি সময় বাদে নাসরের হোম স্টেডিয়াম ম্রিসুল পার্কে রোনালদোকে স্বাগত জানাতে এদিন উপস্থিত ছিলেন প্রায় ত্রিশ হাজার দর্শক।
সৌদিতে পা রাখার পর থেকেই দেশটির ফুটবলের প্রধান আকর্ষণ হয়ে উঠেছেন তিনি। ফুটবল বিশ্বের কাছে সৌদি আরবকে তুলে ধরতেই তাঁর শরণাপন্ন হতে হয়েছে ক্লাবটিকে। মধ্যপ্রাচ্যের দেশটিতে রীতিমত নায়কের আসনে অধিষ্ঠিত করে বরণ করে নেয়া হয়েছে তাঁকে। রোনালদো বলেন, ‘ইউরোপে আমার কাজ শেষ। আমি নতুন চ্যালেঞ্জ নিতে মুখিয়ে আছি।’
ঐতিহ্যবাহী নাচ-গানের অনুষ্ঠানের মাধ্যমে নতুন ক্লাবে স্বাগত অভ্যর্থনা পান রোনালদো। এরপর সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘গোটা বিশ্বজুড়ে ফুটবল আগের চাইতে এগিয়েছে। লিগগুলো এখন অনেক বেশি প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ এবং আমি এখানে আসতে পেরে খুশি। আমি মাঠে নামতে মুখিয়ে আছি। কোচ রাজি থাকলে আমি আগামীকালের ম্যাচেই মাঠে নামতে প্রস্তুত।’
ক্লাবের হয়ে মেডিকেল সম্পন্ন করার পর প্রথম বারের মত নতুন ক্লাবের ড্রেসিংরুমে যান রোনালদো। তিনি বলেন, ‘আমি মানুষের কথাকে পাত্তা দিচ্ছি না। আমি এখানে গোল করতে এবং দলকে শিরোপা জেতাতে এসেছি। বিগত ১৫ বছরে সৌদি আরবের ফুটবল ভীষণ উন্নতি করেছে। এবারের বিশ্বকাপেই তারা চ্যাম্পিয়ন আর্জেন্টিনাকে হারিয়েছে। এটা তাঁদের ক্রমাগত উন্নতির নিদর্শন।’
‘আমি সৌদি আরবে গোলের সমস্ত রেকর্ড ভেঙে ফেলতে চাই। আমি এখানে শিরোপা জিততে এসেছি। আমি আরবের সংস্কৃতিকে পছন্দ করি এবং গোটা বিশ্বের সামনে তুলে ধরতে চাই।’, বলেন রোনালদো।
পাশাপাশি ইউরোপে প্রত্যাবর্তনের সম্ভাবনাতেও ইতি টানেন রোনালদো। বলেন, ‘ইউরোপে আমার কাজ শেষ। আমি ইউরোপের সেরা দলগুলোতে খেলেছি এবং সমস্ত শিরোপা জিতেছি। এখন আমি নতুন চ্যালেঞ্জ নিয়ে এশিয়াতে এসেছি এবং নাসর আমাকে সেই সুযোগটি করে দিয়েছে।’
গোটা বিশ্বের মানুষ সমালোচনা করলেও নিজের উচ্চাকাঙ্ক্ষা নিয়ে কথা বলতে ছাড়েননি পর্তুগিজ এই তারকা। তিনি বলেন, ‘এখানে খেলতে আসাটা দারুণ ব্যাপার। আমি ইউরোপে গোলের সমস্ত রেকর্ড ভেঙেছি এবং এখানেও সেটাই করতে চাই।’