হেটমায়ার তাণ্ডবে রাজস্থানের জয়

ক্যারিবিয়ান পাওয়ার হাউজ বুঝি একেই বলে! প্রায় অসম্ভব একটা সমীকরণের পথে দাঁড়িয়েছিল রাজস্থান। কিন্তু সেই সমীকরণই শেষে গিয়ে সহজ সাধ্য হয়ে উঠলো শিমরন হেটমায়ারের ব্যাটিংয়ে। গুজরাট টাইটান্সের অনুকূলে বেশিরভাগ সময়ে ম্যাচের ভাগ্য এগোতে থাকা ম্যাচটা হেটমায়ার তাণ্ডবে ৩ উইকেট জিতে নিল  রাজস্থান রয়্যালস।

অবশ্য মাঝের সময়ে আশা নিরাশার দোলাচলে দুলতে থাকা ম্যাচটাতে প্রথম প্রতাপ দেখিয়েছিল রাজস্তান রয়্যালসই। টসে হেরে এ দিন ব্যাটিং করতে নেমে শুরুটা মোটেই ভাল হয়নি গুজরাট টাইটান্সের। শুরুতেই ঋদ্ধিমান সাহাকে হারায় তাঁরা। ঋদ্ধিমান সাহার পর কিছুক্ষণ বাদে সাজঘরে ফিরে যান সাঁই সুদর্শনও। দারুণ শুরুর পরও ইনিংস বড় না করার আক্ষেপে পুড়েছেন এ ব্যাটার।

অবশ্য এরপর উইকেটে এসে ওপেনার শুভমান গিলকে ভালই সঙ্গ দিতে শুরু করেন অধিনায়ক হার্দিক পান্ডিয়া। এ দুই ব্যাটারের ৫৯ রানের জুটিতে দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়ায় গুজরাট। ব্যক্তিগত ২৮ রানে চাহালের বলে শিকার হয়ে পান্ডিয়া ফিরে গেলে উইকেটে আসেন ডেভিড মিলার।

তবে মিলারের সাথে সে জুটি আর দীর্ঘস্থায়ী হয়নি শুভমান গিলের। ব্যক্তিগত অর্ধশতকের পিছনে ছুটেছিলেন। তবে ফিরে যান ৩৪ বলে ৪৫ রানের ইনিংস খেলে। গিলের মতো চল্লিশের ঘরে ধরা দেন মিলারও। ৩ চার আর ২ ছক্কায় ৩০ বলে ৪০ রানের ইনিংস খেলে বিদায় নেন এ ব্যাটার।

তবে ততক্ষণে লড়াই করার মতো পুঁজি পেয়ে যায় গুজরাট টাইটান্স। শেষ দিকে অভিনব মনোহরের ২৭ রানের ছোট্ট এক ক্যামিওতে ১৭৭ রানের সংগ্রহ পায় গুজরাট।

১৭৮ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে এ দিন রাজস্থান রয়্যালসও শুরুতে ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়েছিল। দলীয় ৪ রানের মাঝেই দুই ওপেনারকে হারিয়ে ফেলে রাজস্থান। ইয়াশভি জেসওয়াল নিজের নামের পাশে ১ রান যোগ করতে পারলেও ফর্মে থাকা আরেক ওপেনার এ দিন ফিরে যান শূন্য রানেই।

জেসওয়াল, বাটলারের এ দিন ব্যাটিং ব্যর্থতায় শামিল হন দেবদূত পাদিক্কাল আর রায়ান পরাগও। ১১ ওভারের মাঝে ৫৫ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে তখন একপ্রকার ম্যাচ থেকে ছিটকে পড়ে রাজস্থান।

তবে গুজরাটের বেঁধে দেওয়া লক্ষ্যে ঠিক চোখ রেখেছিলেন অধিনায়ক সাঞ্জু স্যামসন। দলের ব্যাটিং বিপর্যয় কাটিয়ে এ উইকেটরক্ষক ব্যাটার পরবর্তীতে পাল্টা আক্রমণও শুরু করেন। সে যাত্রায় ২৯ বলেই তুলে নেন নিজের ফিফটি। তবে ফিফটি পূরণের কিছুক্ষণ বাদেই লং অনে ক্যাচ দিয়ে ফিরে যান তিনি। তখনও জয় থেকে রাজস্থান বেশ খানিকটা দূরে।

শেষ ৫ ওভারে ৬৪ রানের লক্ষ্য। স্যামসনকে হারিয়ে সেই সমীকরণটা তখন বেশ কঠিন রাজস্থানের জন্য। তবে তখনও উইকেটে ছিলে শিমরন হেটমায়ার। আর এই ক্যারিবিয়ান ব্যাটারের ব্যাটিং ঝড়েই অবিশ্বাস্যভাবে ঘুরে দাঁড়ায় রাজস্থান।

উইকেটের অপর প্রান্ত থেকে ধ্রুভ জুরেলের সঙ্গটাও ম্যাচে মোড় ঘুরিয়েছিল। রাজস্থানের ম্যাচ জয়ের পথে জুরেলের সেই সময়ের ১৮ রানের ক্যামিও দারুণভাবে ম্যাচ ঘুরিয়ে দেয়। আর হেটমায়ার বাকি কাজটা সারেন দুর্দান্ত ব্যাটিং দক্ষতায়। ২৫ বলে পৌঁছে যান ব্যক্তিগত অর্ধশতকে। আর ছক্কা মেরে শেষ করেন ম্যাচ। তাঁর ২৬ বলে ৫৬ রানের ইনিংসেই ৪ বল হাতে রেখে জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় রাজস্থান রয়্যালস।

লেখক পরিচিতি

বাইশ গজ ব্যাসার্ধ নিয়ে একটি বৃত্ত অঙ্কন করার চেষ্টা করি...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link