নিজেকে বঞ্চিত ভাবতেই পারেন স্যামসন!

ঘরের মাঠে ক্রিকেটের বিশ্ব আসর; তাই তো বিশ্বকাপ নিয়ে ভারতের স্বপ্নটাও এবার অনেক বড়। আর সেই স্বপ্ন পূরণের দায়িত্ব পাচ্ছেন কোন পনেরো জন সেটা ইতোমধ্যে জানিয়ে দিয়েছে বোর্ড অব কন্ট্রোল ফর ক্রিকেট ইন ইন্ডিয়া (বিসিসিআই)। এশিয়া কাপের দল থেকেই বেছে নেয়া হয়েছে বিশ্বকাপ স্কোয়াড; বাদ পড়েছেন তিলক ভার্মা, প্রসিদ্ধ কৃষ্ণা।

তবে এদের ছাপিয়ে আলোচনায় এখন সাঞ্জু স্যামসন। মিডল অর্ডার এই ব্যাটসম্যানকে স্কোয়াডে না রাখায় সমালোচনা করছেন অনেকে; বিশেষ করে ওয়ানডে ক্রিকেটে মানিয়ে নিতে না পারা সুরিয়াকুমার জায়গা পাওয়ায় অসন্তোষ দেখা গিয়েছে ক্রিকেটাঙ্গনে।

সাম্প্রতিক ফর্ম বিবেচনা করলে অবশ্য সাঞ্জু স্যামসনই এগিয়ে আছেন সুরিয়াকুমারের চেয়ে। চলতি বছর দুই ম্যাচ খেলে একটা হাফসেঞ্চুরি করেছেন স্যামসন, এর আগের বছর দশ ম্যাচে দুই ফিফটি এসেছে তাঁর ব্যাট থেকে। সবমিলিয়ে ১৩ ম্যাচের ক্যারিয়ারে ৫৫.৭১ গড়ে ৩৯০ রান করেছেন তিনি; স্ট্রাইকরেটও বেশ মানানসই, ১০৪!

অন্যদিকে স্যামসনের দ্বিগুণ ম্যাচ খেলেও সুরিয়াকুমারের সংগ্রহ মাত্র ৫১১ রান। অর্ধশতকের দেখা পেয়েছেন মাত্র দুইবার, গড় পঁচিশেরও কম। শুধু ২০২৩ সালের হিসেব করলে সুরিয়ার পরিসংখ্যান আরো অপ্রত্যাশিত। টি-টোয়েন্টিতে রাজ করা এই ব্যাটার এই বছর ১০ ওয়ানডেতে করেছেন মাত্র ১২৭ রান; গড় পনেরোও ছুঁতে পারেনি। এমনকি নেই কোন পঞ্চাশ রানের ইনিংস।

স্বাভাবিকভাবেই সাঞ্জু স্যামসনের জায়গায় সুরিয়াকুমারের সুযোগ পাওয়ায় বিতর্কের জন্ম হয়েছে। ব্যাকআপ মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যান হিসেবে রাজস্থান রয়্যালসের অধিনায়ককে পছন্দ প্রায় সবার; তাছাড়া উইকেটকিপিং করতে পারাটাও স্যামসনকে এগিয়ে রেখেছে সুরিয়ার চেয়ে। তবু কোন এক রহস্যময় কারণে বিশ্বকাপে খেলার সুযোগ হলো না স্যামসনের।

সম্ভবত টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে সুরিয়াকুমার যাদবের দুর্দান্ত ফর্ম আর আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিজ্ঞতার কারণেই তাঁকে রেখেছে বিসিসিআই। একাদশে জায়গা পেলে কাউন্টার এটাক করে হয়তো ম্যাচের মোমেন্টাম বদলে দিতে পারবেন এমনটাই বিশ্বাস তাঁদের।

এছাড়া টপ অর্ডারে একজন বামহাতি ব্যাটসম্যানের অভাব বারবার ফুটে উঠলেও কোন ব্যবস্থা নেয়নি টিম ইন্ডিয়া। অভিজ্ঞ শিখর ধাওয়ান কিংবা তরুণ যশস্বী জসওয়াল, তিলক ভার্মাদের বিশ্বকাপের আগে বাজিয়ে দেখলে হয়তো বহুদিনের এই সমস্যার সমাধান খুঁজে পেতো রোহিত শর্মার দল।

শুধু তাই নয়, দলে কোন ডানহাতি অফ স্পিনারও রাখেনি নির্বাচকরা। রবিচন্দ্রন অশ্বিন, ওয়াশিংটন সুন্দরদের তাই ঘরের মাঠে বিশ্বকাপ দেখতে হবে ঘরে বসেই। ফলে দলটির স্পিন বিভাগ খানিকটা একমুখী হয়ে গিয়েছে বলেই ধারণা ক্রিকেট বিশ্লেষকদের। বৈচিত্র্যয়ের জন্য একমাত্র কুলদীপ যাদবকেই ভরসা করতে হবে ভারতকে।

স্পিন বিভাগ আর টপ অর্ডারের টুকটাক সমস্যা বাদ দিলে ভারতের স্কোয়াড নিয়ে প্রশ্ন তোলার খুব একটা জায়গা নেই। তবে সাঞ্জু স্যামসনকে বাদ দিয়ে সুরিয়াকুমারকে নেয়া নিশ্চিতভাবেই কপাল কুঞ্চিত করেছে দেশটির সমর্থকদের।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link