ইয়ান বোথাম, কপিল দেব, জ্যাক ক্যালিসদের সাথে তার তুলনা হয় অহরহ। এমনকি কোনো কোনো ছোট্ট বিচারে গ্যারি সোবার্সের সাথেও নাম উচ্চারণ হয় তার। তাই বলে রজার ফেদেরার কিংবা সেরেনা উইলিয়ামস!
হ্যাঁ, বিশ্বাস করুন আর নাই করুন, রোজ নানান রেকর্ড করতে থাকা সাকিব একটা জায়গায় এই দুই টেনিস কিংবদন্তিকেও পেছনে ফেলে দিয়েছিলেন। ক্রিকেট ও টেনিস মিলিয়েও কোনো খেলোয়াড় সাকিবের মতো এতোদিন ধরে এক নম্বরে থাকতে পারেননি।
২০০৯ সালে আজকের দিনে প্রথম ওয়ানডে র্যাংকিংয়ে এক নম্বর অলরাউন্ডার হয়েছিলেন। এই উপলক্ষে পুরোনো সেই ঘটনাটার স্মৃতিচারণ করা যাক। সেটা অবশ্য শুধু ওয়ানডের নয়; ক্রিকেটের বা বলা চলে খেলাধুলার জগতের সামগ্রিক একটা ঘটনা।
ঘটনা ২০১৭ সালের।
শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে কলম্বো টেস্টে সেঞ্চুরি করেছিলেন এবং সাথে দ্বিতীয় ইনিংসে ৪ উইকেট তুলে নিয়েছিলেন। ফলে তিন সপ্তাহের মধ্যে তৃতীয়বারের মতো টেস্টে এক নম্বর অলরাউন্ডার হয়েছিলেন সাকিব আল হাসান। রবিচন্দন অশ্বিনকে হটিয়ে আবার টেস্টের সেরা অলরাউন্ডার হিসেবে আরও একটা সপ্তাহ পার করলেন।
ফলে সে সময় পর্যন্ত ক্যারিয়ারের ৩৮টি সপ্তাহ সাকিব সব ফরম্যাটের এক নম্বর হিসেবে সময় কাটিয়েছিলেন। সাথে সাথে বিচিত্র কিছু রেকর্ড যোগ হয়ে গেলো সাকিবের পালকে। ক্রিকইনফো সেইসব রেকর্ড নিয়ে সাকিবের জন্মদিনে একটি বিশেষ আয়োজন করেছিলো।
সাকিবের আগে-পরে আর কেউ ক্রিকেটের তিন ফরম্যাটেই এক নম্বরে থাকতে পারেনি। ক্রিকেটের তিন ফরম্যাটেই এক সাথে এক নম্বর হওয়া একমাত্র অলরাউন্ডার সাকিব। এই কাজটা সাকিব করেছেন তিন বার। এর মধ্যে ৩৮ সপ্তাহ তিন ফরম্যাটেই এক নম্বর অলরাউন্ডার ছিলেন। সবচেয়ে বেশী ৩২৪ সপ্তাহ ওয়ানডের এক নম্বর অলরাউন্ডার ছিলেন। পাশাপাশি ১৬৪ সপ্তাহ টেস্টের এক নম্বর অলরাউন্ডার ও ১০৫ সপ্তাহ টি-টোয়েন্টির এক নম্বর অলরাউন্ডার হিসেবে সময় কাটিয়েছেন।
এই ৩২৪ সপ্তাহ ওয়ানডের এক নম্বরে কাটাতে গিয়েই হয়েছে বিচিত্র রেকর্ড। এখানে তিনি অনেক আগেই ক্রিকেটের সবাইকে পেছনে ফেলেছেন। এর আগে জ্যাক ক্যালিস ওয়ানডের এক নম্বর অলরাউন্ডার ছিলেন ২০৩ সপ্তাহ এবং শন পোলক ছিলেন ১৩৮ সপ্তাহ।
মজার তথ্য হলো শুধু ক্রিকেট নয়, র্যাংকিংয়ের জন্য আরেক আলোচিত খেলা টেনিসকে বিবেচনায় নিলেও সাকিব সবার ওপরে। সেরেনা উইলিয়ামস এক নম্বরে ছিলেন ৩১৬ সপ্তাহ এবং রজার ফেদেরার ছিলেন ২৩৭ সপ্তাহ। টেনিস ও ক্রিকেট ছাড়া আর কোনো খেলায় এতো গুরুত্ব নেই ব্যক্তিগত র্যাংকিংয়ের। ফলে এই দুটো খেলা মিলিয়ে সবচেয়ে বেশীদিন এক নম্বরে থাকায় একটা আলাদা গৌরব বোধ করতে পারেন সাকিব।
টেস্টেও সাকিবের আশেপাশে কেউ নেই। সাকিব ১৬৪ সপ্তাহ টেস্টে এক নম্বর হিসেবে সময় পার করেছেন। কাছাকাছি অশ্বিন ছিলেন ১০২ সপ্তাহ।
ফেদেরার বা সেরেনা হয়তো ক্রিকেট খেলাটা খুব ভালো বোঝেন না। তাদের কাছে হয়তো ক্যালিস, সোবার্সের আলাদা কোনো গুরুত্ব নেই। কিন্তু রেকর্ডটা জানতে পারলে সাকিব আল হাসানকে নিশ্চয়ই আলাদা একটা গুরুত্ব দেবেন। যে কাজটা তারাও করতে পারেননি, ক্রিকেটে সেই কাজটাই করে ফেলেছেন সাকিব।
তাহলে সেরেনাদের খবরটা জানো যাক, নাকি?