চার ওভারের ১৫টা ডট, হজম করেননি কোন বাউন্ডারি। সাকিব আল হাসান যেন সময়কে ধরে রেখেছেন নিজের হাতে। বয়স বাড়ছে ঠিকই। তাতে কি? সাকিব দেখিয়ে যাচ্ছেন বুড়ো হাড়ের ভেলকি।
দুবাই ক্যাপিটালসের মুখোমুখি সাকিবের এমআই এমিরেটস। যে দল জিতবে, তারাই খেলতে পারবে কোয়ালিফায়ার, হারলে এলিমিনেটর। এমন সমীকরণের মাঝে পাওয়ার প্লেতে সাকিব এলেন বল হাতে। ম্যাজিকের শুরুটা তখন থেকেই। প্রথম বলেই তুলে নিলেন সায়ান জাহাঙ্গিরকে। মিডউইকেট দিয়ে উড়িয়ে মারতে গিয়ে পাতা ফাঁদে পা দিলেন তিনি। ওভারটাও সাকিব শেষ করলেন কৃপণতার সাথেই। দিলেন মাত্র দুই রান।
সাকিব বলটা করেন মাথা খাটিয়ে। তাঁর মস্তিস্কের কারুকাজ যে বোঝা বড় দায়। যেমনটা বুঝে উঠতে পারলেন না দুবাইয়ের ব্যাটাররা। একের পর এক ডট বল করে গেলেন, হাত খোলার সুযোগই দিলেন প্রতিপক্ষ ব্যাটারকে। একপ্রান্তে চাপ বাড়িয়ে গেলেন, তা কাজে লাগিয়ে বাকি বোলাররা উইকেট তুলে নিলেন। দ্বিতীয় ওভারে সাকিব খরচা করেন চার রান।

দুই ওভারের সাফল্য তাঁকে টেনে আনল তৃতীয় ওভারেও। আরও একবার ব্যাটারের দম বন্ধ করে রাখলেন যেন। সাকিবের বল তৈরি করল এক ধ্রুম্রজাল। ব্যাটাররা কোন উপায় পেল না হাত খোলার। ওভার শেষ করলেন মাত্র এক রান দিয়ে। শেষ পর্যন্ত সাকিবের বোলিং ফিগার দাঁড়ায় চার ওভারে ১১ রানের বিনিময়ে এক উইকেট। ইকোনমি রেট ২.৭৫।
সাকিবের একেকটা বল যেন গোলকধাঁধা হয়ে এলো ব্যাটারের কাছে। যা ভেদ করা দুঃসাধ্য কাজ। ক্রিজে ব্যাটার কেবল ছটফট করে গেল রানের জন্য, তবে কাজের কাজটা হলো না। সাকিব কতটা আনপ্লেয়েবল, তাঁর একটা পরিসংখ্যান দেখা যাক, সর্বশেষ তিন ম্যাচে বল করেছেন ১০ ওভার, দিয়েছেন মাত্র ৩৫ রান, বিনিময়ে উইকেট নিয়েছেন ৩টি। ইকোনমি রেট অবিশ্বাস্যভাবে ৩.৫০, যা টি-টোয়েন্টির প্রেক্ষাপটে স্রেফ অসাধারণ।
এদিন অবশ্য ব্যাট করা লাগেনি সাকিবের। আট উইকেটের জয় পায় দল। তবে বল হাতেই করেছেন যা করার। সাকিব যেন এক বুড়ো জাদুকর। চাইলেই যা খুশি করতে পারেন তিনি, চাইলেই নিজের সময়কে ফিরিয়ে নিয়ে যেতে পারেন ১০ বছর আগে। চাইলেই ব্যাটারের চরম পরীক্ষা নিতে পারেন। সাকিব আজও তাই ওই বিশ্বসেরাদের কাতারেই।












