মেঘ দেখে করিসনে ভয়, আড়ালে তার সূর্য হাসে। বাংলা এই প্রবাদের ঠিক বিপরীত দিকে অবস্থান করছেন সাকিব আল হাসান। ক্যারিয়ারের শেষ প্রান্তে এসে নিজেকে যেন বানিয়ে ফেলেছেন ‘ডেড রাবার’। ক্রমশ টেনেই চলেছেন ক্যারিয়ারকে। মাঝেমধ্যে ফিনকি দিয়ে পারফমেন্স উঁকি দেয়। কিন্তু সেসব কেবলই মরীচিকা।
মেজর লিগ ক্রিকেটে যাচ্ছেতাই পারফর্ম করেছেন সাকিব। বিশ্বকাপেও ছিলেন নিজের সবচেয়ে অন্ধকার ছায়া হয়ে। এরপর গ্লোবাল টি-টোয়েন্টি খেলতে গিয়েও সাকিব ধুঁকছেন বটে। তবে অভিজ্ঞতার জোরে অবশ্য তিন খানা উইকেটের দেখা পেয়েছেন তিনি শেষ ম্যাচে।
সব ধরণের ম্যাচ মিলিয়ে প্রায় নয় ম্যাচ পর একাধিক উইকেটের দেখা পেয়েছেন সাকিব আল হাসান। সেটাই বরং প্রমাণ করে ফুরিয়ে যাওয়া জ্বালানির গাড়ি চালক এখন তিনি। এক সময় তিনিই বলেছিলেন যে, যখন মনে হবে তিনি গাড়ির চালক নন, যাত্রী, তখন বিদায় জানাবেন ক্রিকেটকে।
সম্ভবত যাত্রী হতেই চাইছেন না সাকিব। তিনি ঠেলেই চালিয়ে যাবেন ক্রিকেট ক্যারিয়ার নামক গাড়ি। ব্যাটিংয়ের প্রদীপ যে তার নিভে গেছে বহু আগেই। বিরল, বিস্ময় জাগানিয়া এক চোখের অসুখ তার। সে অসুখের সমাধান আপাতত চিকিৎসা বিজ্ঞানে সম্ভবত নেই। অস্ত্রপচারে ঠিক হওয়ার সম্ভাবনাও প্রায় অর্ধেক। তাইতো তিনি ঝুঁকি নিতে চাইছেন না।
তাতে করে যা হচ্ছে, তার পুরোটাই দৃষ্টিকটু। দলের উপর বোঝা হয়ে যাচ্ছেন তিনি ক্রমশ। হোক সেটা জাতীয় দল কিংবা ফ্রাঞ্চাইজি লিগ। গেল দশ ম্যাচে সাকিব সর্বোচ্চ ৩৫ রান করেছেন। বলাবাহুল্য এই সবগুলো ম্যাচই ছিল টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটের। শেষ দশ ম্যাচে তার ব্যাটিং গড় ছিল মাত্র ১০। ঠিক কি পরিমাণ ভয়বহ সময় পার করছেন তিনি, তা আন্দাজ করতে বিশেষ জ্ঞানের বিশেষ প্রয়োজন নেই।
হয়ত এই তিন উইকেট, কিংবা ৩৫ রানের ইনিংস কালেভদ্রে সাকিব উপহার দেবেন। তিনি ফুরিয়ে যাননি সেই বার্তা দেওয়ার প্রয়াশই হয়ত করবেন। কিন্তু সেটা হবে কেবলই মরীচিকা। তাইতো সাকিবের উচিৎ তার ক্যারিয়ারের পরবর্তী পদক্ষেপের একটা স্পষ্ট চিত্র অংকন করা।
বাংলাদেশের ক্রিকেটের প্রেক্ষাপটে সাকিব নাম একটা ‘ফ্যাক্টর’। তাকে ঘিরেই অধিকাংশ পরিকল্পনার ছক আঁকা হয়েছে বিগত সময়গুলোতে। এখনও হয় সম্ভবত। তাইতো সাকিবের নিজের অবস্থান পরিষ্কার করা উচিত। তিনি যতটা কালক্ষেপণ করবেন, ততই তা বাংলাদেশ ক্রিকেটের জন্য অমঙ্গল।