লড়াইটা তাঁর নিজের সাথেই

মিরপুর টেস্টের দ্বিতীয় দিন। আকাশ খানিকটা অপরিষ্কার। বাংলাদেশ ঠিক কোথায় থামবে সেটাও স্পষ্ট নয়। সবাই হিসেব কষতে প্রস্তুত বাংলাদেশের ঠিক কোথায় শেষ করা উচিত। তখনও সাকিব আল হাসান খানিকটা আলোচনায় ভাগ বসালেন।

সকাল সকাল মিরপুর একাডেমি মাঠে হাজির সাকিব। তার সম্পূর্ণ ধ্যানজ্ঞান এখন নিজেকে ফিরে পাওয়া। ক্রিকেটার সাকিবের মস্তিষ্ক নিয়ে প্রশ্ন ওঠেনি কখনো। সাকিব সেই সুযোগটা দেননি। এমনকি সাকিবের ফিটনেস নিয়েও প্রশ্ন তোলার সুযোগ খুব একটা মেলেনি।

তবে ক্যারিয়ারের একেবারে শেষ লগ্নে এসে যেন সাকিবের শরীর খানিকটা বিশ্রাম চাইছে। বারবার মাথা নুইয়ে সেই ইঙ্গিতটাই দিচ্ছেন সাকিব। তবে তিনি থেমে যেতে চান না। তিনি নিজের শেষটুকু দিয়ে ফিটনেস ধরে রাখার প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। নিজেকে পূর্ণ ফিট করা তো চাই।

আফগানিস্তানের বিপক্ষে একদিকে মাঠে লড়ছে বাংলাদেশের গোটা দল। সেই বিষয়টি নিশ্চয়ই পোড়ায় সাকিব আল হাসানকে। সেটাও জ্বালানি হিসেবে কাজ করছে হয়ত। টেস্ট দলের নিয়মিত অধিনায়ক রয়েছেন দলের বাইরে। তেমনটা নিঃসন্দেহে খারাপ লাগার মতই।

কিন্তু সাকিব মুখিয়ে আছেন। তিনি আফগানিস্তানের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজ দিয়ে ফিরতে মরিয়া। তিনি নিজেকে অন্তত সে চ্যালেঞ্জের জন্যই প্রস্তুত করছেন। নিয়মিত ফিটনেস নিয়ে কাজ করাটা সেদিকটাই ইঙ্গিত দিচ্ছে। টেস্টের প্রথম দিন মধ্যাহ্ন বিরতির ঠিক আগ মুহূর্তে তিনি কাজ করেছেন নিজের ফিটনেস নিয়ে।

রোদের তীব্রতা কাবু করে দিচ্ছিল তাকে। নিজের সর্বোচ্চটুকু দেওয়ার আগেই ক্লান্তি এসে ভর করছিল সাকিবের উপর। তাইতো দ্বিতীয় দিনে রোদের ঝলকানিতে মিরপুর ছেয়ে যাওয়ার আগেই তিনি হাজির হোম অব ক্রিকেট। স্টপওয়াচ ধরে পরখ করা হচ্ছে তার সক্ষমতা।

মাঠে ছিটিয়ে রাখা প্রতিটা মার্কার যেন ছোট ছোট প্রতিবন্ধকতা। এমন শত প্রতিবন্ধকতাই তো পেরিয়ে এসেছেন সাকিব। এবারও হয়ত পেরিয়ে যাবেন। শরীরের সাথে চলা তার এই লড়াইটা হয়ত এবারও জিতবেন সাকিব আল হাসান। যদিও ফিটনেস জনিত কোন কারণে তিনি নেই দলের বাইরে। তার দলের বাইরে থাকার মূল কারণটা আঙুলের ইনজুরি।

আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে ইংল্যান্ডের মাটিতে ওয়ানডে সিরিজ চলাকালীন সময়ে ইনজুরিতে পড়েছিলেন তিনি। সেই চোট সেরে উঠছে। ধারণা করা যাচ্ছে ঈদের ছুটি শেষে, আবার জাতীয় দলের সাথে যুক্ত হবেন সাকিব। সেই সময়ে দলে থাকা বাকিদের সাথে ফিটনেস প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতেই সাকিবের এই নিরব লড়াই।

কিন্তু একটু যেন অস্বস্তিতে রয়েছেন সাকিব। বয়সটাও যে হয়েছে তার। বয়সের ভারে শারীরিক সক্ষমতায় পড়ে প্রভাব। সেটাই হয়ত সাকিবকে পীড়া দিচ্ছে। তবে সাকিব তো এসব পীড়ার উর্ধ্বে।

সাকিব যখন ফিটনেসের লড়াই নিয়ে ব্যস্ত। তখন বাইশ গজে ধুঁকতে ধঁকতে প্রথম ইনিংসের সমাপ্তি ঘটে বাংলাদেশের।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link