এই তিন নম্বরে ইতিহাস করে এসেছিলেন সাকিব আল হাসান।
২০১৯ বিশ্বকাপে অবিশ্বাস্য ৬০৬ রান করছেন তিন নম্বরে ব্যাট করতে নেমে। এই জায়গাটা অনেক অনুরোধ করে নেওয়ার পর নিজেই প্রমাণ করেছেন তিন নম্বরই তার সেরা জায়গা। কিন্তু বাংলাদেশ টিম ম্যানেজমেন্টের এক ভুতুড়ে সিদ্ধান্তে নিষেধাজ্ঞা থেকে ফেরার পর প্রথম সিরিজেই সাকিবকে তিন নম্বর থেকে সরিয়ে দিয়ে সেখানে খেলানো হয় নাজমুল হাসান শান্তকে। এরপর সাকিব খেলতে না পারায় নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে তিন নম্বরে খেলেন সৌম্য সরকার।
অবশেষে সেই আজগুবি সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসতে যাচ্ছে টিম ম্যানেজমেন্ট। জাতীয় দলের প্রধাণ নির্বাচক মিনহাজুল আবেদীন নান্নু এই খবর নিশ্চিত করেছেন ক্রিকেট বিষয়ক ওয়েবসাইট ক্রিকবাজকে। তিনি বলেছেন, সাকিব শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে তিন নম্বরেই ব্যাট করবেন।
আজ এই খবর নিশ্চিত করে নান্নু ক্রিকবাজকে বলেছেন, ‘সে (সাকিব) শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজে তিন নম্বরেই ব্যাট করবে। এটাই (তিন নম্বর) ওর জন্য সেরা জায়গা। আমরা মনে করছি, ও উইকেটে নিজেকে মেলে ধরার আগে এতে করে একটু থিতু হওয়ার সময় পাবে।’
নান্নু বলেছেন, সাকিব নিজেও এই জায়গাতে ব্যাট করতে চান। তাই তারা এ নিয়ে দ্বিধা করছেন না, ‘ও নিজেও এখানে (তিন নম্বরে) ব্যাট করতে চায়। ফলে আমরা মনে করেছি, এই সুযোগটা ওকে দেওয়া উচিত।’
সাকিব নিজেই বিভিন্ন সাক্ষাতকারে বলেছেন, তিন নম্বর জায়গায় তিনি অনেক দিন ধরেই ব্যাট করতে চাচ্ছিলেন। সেটা টিম ম্যানেজমেন্ট ও সতীর্থদের বোঝাতে তার সময় লেগেছে। একটা পর্যায়ে তিনি সকলকে রাজী করাতে পারেন। এরপর ২০১৯ বিশ্বকাপে সাকিব তিন নম্বরে ব্যাট করেন। অবিশ্বাস্য ৮৬.৫৭ গড়ে এই বিশ্বকাপে তিনি ৬০৬ রান করেন। এর মধ্যে ২টি সেঞ্চুরি ও ৫টি হাফ সেঞ্চুরি ছিলো।
সামগ্রিক ভাবেই তিন নম্বরে সাকিব খুব সফল। সব মিলিয়ে তিনি এই পজিশনে ২৩ ম্যাচে ১১৭৭ রান করেছেন; গড় ছিলো ৫৮.৫৮। ফলে এই জায়গাটার দাবি তিনি করতেই পারেন। কিন্তু ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সিরিজেরেআগে ম্যানেজমেন্ট সাকিবকে চার নম্বরে পাঠায়।
মূলত তাদের বক্তব্য ছিলো যে, দীর্ঘদিন পর ক্রিকেটে ফেরা সাকিবকে একটু স্বস্তি দিতেই তার ব্যাটিং অর্ডারটা পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে। সে সময় অধিনায়ক তামিম ইকবাল বলেছিলেন, ‘তার (সাকিবের) প্রতি আমাদের বার্তা খুব পরিষ্কার ছিলো। আমি নিজে ব্যক্তিগতভাবে এটা নিয়ে তার সাথে কথা বলেছি। সে আমাদের পরিকল্পনা বুঝেছে এবং এটা খুব ইতিবাচকভাবে নিয়েছে।’
তামিম বলেছিলেন, সাকিবকে একটু স্বস্তির জায়গা দিতেই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তারা, ‘এটা তার জন্য একটা ব্রেথিং স্পেস হবে। সে অনেকদিন পর ফিরছে। আমরা জানি ও সচেতন আছি যে, সে তিন নম্বরে কতোটা ভালো। সে চার নম্বরে ব্যাট করা নিয়ে সন্তুষ্ট। সেই সাথে আমরা তাকে বলেছি, সে যে কোনো সময় আবার তিন নম্বরে ফিরে আসতে পারে।’
অবশেষে সাকিব চাওয়ার আগেই ম্যানেজমেন্ট বুঝতে পেরেছে যে, এই কাজটা দ্রুত করা দরকার। নিজেদের স্বার্থেই সাকিবকে তিন নম্বরে দরকার বাংলাদেশ দলের।