নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজ দিয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফিরেছেন সাকিব আল হাসান। শুধু কি ফিরেছেন; একেবারে রাজকীয় ভাবে ফিরেছেন। প্রত্যাবর্তনের সিরিজে ব্যাট হাতে ১১৩ রান ও বল হাতে ৬ উইকেট নিয়ে হয়েছেন ম্যাচ সেরা।
সাকিব দ্রুত নিজের চেনা ছন্দে ফিরে আসাতে সবাই যখন স্বত্বির নিশ্বাস ফেলছে তখনই কয়েকটা গনমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হয় আগামী মার্চে নিউজিল্যান্ড সফরে যাচ্ছেন না সাকিব। তৃতীয় সন্তান জন্মের সময় স্ত্রীর পাশে থাকতে এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি। তবে সাকিব গতকাল জানিয়েছেন বোর্ডকে এখনো আনুষ্ঠানিক ভাবে কিছুই জানাননি তিনি। সেই সাথে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন দলের ভিতরের কথা বাইরে যাওয়া নিয়েও।
আপাতত সাকিবের পূর্ণ মনযোগ ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজ নিয়ে। সাকিব জানিয়েছেন নিউজিল্যান্ড সফর নিয়ে সিদ্বান্ত হবে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজ শেষে। সাকিব বলেন, ‘দেখুন এ বিষয়টা নিয়ে টেস্ট সিরিজের পরেই ভালোভাবে বোঝা যাবে। এগুলো আসলে ভেতরের কথা, বাইরে কিভাবে এতো আসে সেটাও আমি জানি না। এগুলো আসলে টিম ম্যানেজম্যান্ট এবং আমার যখন একান্ত কথা হবে, তখনই বোঝা যাবে।’
এই সিরিজে সাকিবকে বড় একটা স্যাক্রিফাইসও করতে হয়েছে। যে তিন নম্বর পজিশনে বাংলাদেশের ইতিহাস সেরা ব্যাটসম্যান তিনি, সেটা ছেড়ে দিয়েছেন। এ নিয়ে আগেও সাকিব বলেছেন যে, দলের প্রয়োজন মতো যে কোনো জায়গায় ব্যাট করতে সমস্যা নেই তার। গতকালও বলেছেন, ‘আমি সবসময়ই বলেছি যে, সবকিছু যে আমার পছন্দমত হতে হবে সেটা নয়। গুরুত্বপূর্ণ হলো দলের প্রয়োজনে কোন কাজটা আমি করতে পারি? তো সেটা করতে পেরে আমি খুশি।’
এই সিরিজে সাকিবের ব্যাটিং ধরণ নিয়ে অবশ্য কিছু প্রশ্ন তোলার চেষ্টা করেছেন অনেকে। কারো কারো কাছে মনে হয়েছে, তিনি খুব স্বচ্ছন্দে রান করতে পারছেন না। সাকিব বলছেন, তিনি যেভাবে ব্যাট করেছেন আগে, সেভাবেই এই সিরিজেও করতে পেরেছেন, ‘(ব্যাটিং কম ছন্দ থাকা) আমার কাছে মনে হয়নি। আমি যেভাবে ব্যাটিং করি সেভাবেই করতে পেরেছি। খুব একটা নিজের কাছে কষ্ট মনে হয়নি। হ্যাঁ প্রতিটা জিনিসেই কষ্ট আছে। প্রতিদিন রান করা কঠিন, ধারাবাহিক খেলাও সহজ নয়। দুইটা ম্যাচ খুব ভালো ব্যাটিং করেছি। সেদিক থেকে আমি খুব খুশি।’
ওয়ানডেতে সিরিজ সেরা হয়ে আরো একটি রেকর্ড গড়েছেন সাকিব। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে সবচেয়ে বেশি ম্যান অব দ্যা সিরিজ পাওয়া ক্রিকেটারদের তালিকায় সাকিবের অবস্থান এখন তৃতীয়। সাকিবের সমান ১৪ টি সিরিজ সেরার খেতাব নিয়ে ক্যালিসও রয়েছেন সাকিবের পাশেই। তবে ১৪ বার সিরিজ সেরা হতে সাকিবের লেগেছে ৩৪১ ম্যাচ আর ক্যালিসের খেলতে হয়েছে ৫১৯ ম্যাচ।
এই তালিকায় সবার উপরে আছেন শচীন টেন্ডুলকার। ১৯ বার ম্যান অফ দ্যা সিরিজ নিয়ে শীর্ষে আছেন তিনি। আর দুইয়ে থাকা আরেক ভারতের বর্তমান অধিনায়ক বিরাট কোহলি সিরিজ সেরা হয়েছেন ১৬ বার।
ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজ শেষে মার্চে নিউজিল্যান্ড সফরে যাবে বাংলাদেশ। নিউজিল্যান্ড সফরে ৩ টি ওয়ানডের সাথে ৩ টি টি-টুয়েন্টি খেলবে টাইগাররা।
সিরিজের সূচি:
১৩ মার্চ : ১ম ওয়ানডে – ডানেডিন
১৭ মার্চ : ২য় ওয়ানডে – ক্রাইস্টচার্চ
২০ মার্চ : ৩য় ওয়ানডে – ওয়েলিংটন
২৩ মার্চ : ১ম টি-টোয়েন্টি – নেপিয়ার
২৬ মার্চ : ২য় টি-টোয়েন্টি – অকল্যান্ড
২৮ মার্চ : ৩য় টি-টোয়েন্টি – হ্যামিল্টন