বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) ইতিহাসে এখন পর্যন্ত মাত্র ৬ জন ব্যাটারই ২০০০ রানের মাইল ফলক ছুঁয়েছেন। এর মধ্যে একজন হলেন এনামুল হক বিজয়। তবুও সর্বশেষ কয়েকটি আসরে সেভাবে জ্বলে উঠতে দেখা যায়নি এ ব্যাটারকে। ২০ ওভারের ক্রিকেটে তাই ব্রাত্য হতে বসেছিলেন তিনি।
তবে, এবারের খুলনা টাইগার্সের অধিনায়কত্ব পেয়েই যেন পুরোনো ঝলক দেখালেন বিজয়। ফরচুন বরিশালের ছুঁড়ে দেওয়া ১৮৮ রানের লক্ষ্যে চাপ নিয়ে খেললেন ম্যাচ জয়ী ৬৩ রানের অপরাজিত একটি ইনিংস।আর এই ইনিংস দিয়েই তিনি পেছনে ফেললেন সাকিব আল হাসানকে।
বিপিএলের ইতিহাসে সর্বোচ্চ রানের দৌড়ে এ ম্যাচের আগে ২০৯৭ রান নিয়ে ৬ নম্বরে ছিলেন বিজয়। আর ২১৪৪ রান নিয়ে পাঁচে ছিলেন সাকিব। বরিশালের বিপক্ষে ৬৩ রানের এই ইনিংস দিয়েই এ দিন বিজয় বিপিএলের সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহকদের তালিকায় সেরা পাঁচে ঢুকে পড়লেন।
ম্যাচের প্রথম ভাগে ফরচুন বরিশালের জয় ভাগ্যের দিকেই চোখ ছিল সবার। তবে ১৮৭ রানের পুঁজি নিয়েও পাওয়ার প্লে-তেই পথ হারায় তাঁরা। এভিন লুইসের তাণ্ডবেই ম্যাচ থেকে ছিটকে যাওয়ার উপক্রম হয় তাদের। তবে লুইস আউট হওয়ার পর আবারো ম্যাচে ফেরার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছিল বরিশাল শিবিরে।
কিন্তু, লুইসের রেখে যাওয়া কাজটাই শেষ পর্যন্ত করেছেন এনামুল হক বিজয়।শুরুতে লুইসকে যোগ্য সঙ্গ দিয়েছেন। এরপর নিজেই দলের হাল ধরেছেন। লুইসের সাথে ৭৭ রানের জুটি গড়ার পর এ ব্যাটার আফিফের সাথে গড়ে তোলেন ৭৪ রানের আরেকটি জুটি।
এতেই ম্যাচ জয়ের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে যায় খুলনা টাইগার্স। ১৮৮ রানের বড় লক্ষ্য তাড়া করতে নেমেও ২ ওভার আগেই জয় নিয়ে মাঠ ছাড়া এনামুল হক বিজয়ের দল। ৪৪ বলে ৬৩ রানের ইনিংস খেলে এ দিন অপরাজিত থাকেন এ ব্যাটার। যে ইনিংস খেলার পথে তিনি হাঁকিয়েছেন ৩ টি চার ও ৩ টি ছক্কা।
তবে এ ইনিংস সবচেয়ে প্রশংসার দাবি রাখে বিজয়ের দারুণ গেমসেন্সে। শুরু থেকেই সাবলীল ব্যাট করেছেন। খালেদের পেসের সামনে গ্যাপ খুঁজে শুরুতেই বাউন্ডারি বের করেছেন। পাওয়ার প্লে-র দারুণ ব্যবহার যেটাকে বলে, সেটি করে দেখিয়েছেন বিজয়।
পাওয়ার প্লে শেষ হওয়ার পর ইনিংস বিল্ড আপ করেছেন। সিঙ্গেলস নিয়েছেন, ডাবলস নিয়েছেন। আবার বাজে বলগুলোকে অবলীলায় বাউন্ডারির ওপারে পাঠিয়েছেন। আর বিজয়ের এমন দায়িত্বশীল ইনিংসেই বিজয়োল্লাস করতে পেরেছে খুলনা টাইগার্স।
শেষবার পয়েন্ট টেবিলের তলানির দল হিসেবে বিপিএল শেষ করেছিল দলটি। এবার বিজয়ের নেতৃত্বে টানা দুই জয় নিয়ে পয়েন্ট টেবিলের সবার উপরে। দলের ভাগ্য বদলের সাথে এবার নিজের ভাগ্য বদলটাও নিশ্চয় করতে চাইবেন বিজয়।