শান মাসুদের ব্যাটে প্রভাতের হাতছানি

প্রথম ইনিংসে যে বোলারদের বিপক্ষে দাঁড়াতেই পারেনি পাক ব্যাটারদের, সেই বোলারদের এবার এতটুকু পাত্তা দেননি এই বাঁ-হাতি। একেবারে শুরু থেকে আধিপত্য বিস্তার করে ব্যাট করেছেন তিনি - বুঝিয়ে দিয়েছেন সময়টা স্রেফ তাঁর একারই।

রাতের অন্ধকার যত গাঢ় হয়, প্রভাত তত নিকটে আসে – শান মাসুদের জন্য কথাটা পুরোপুরি সত্য। ওপেনার হিসেবে টানা তিনটা সেঞ্চুরি হাঁকিয়ে তাক লাগিয়ে দিয়েছিলেন তিনি, এরপর থেকেই রানের খরা শুরু হয় তাঁর ব্যাটে। ওপেনিংয়ে খেলা শেষ তেরো ইনিংসে স্রেফ ১৩৪ রান করেছেন তিনি, এর মধ্যে চারবার আউট হয়েছেন শূন্য রানে।

এই ব্যাটারের ফর্ম যখন এতটাই বাজে, তখন পাকিস্তানের অবস্থা আরও খারাপ। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ফলো অন এড়াতে ব্যর্থ হওয়ায় বাধ্য হয়েছে একই দিনে দ্বিতীয়বার মাঠে নামতে হয়েছে তাঁদের। আর দলের এমন বিপদের ক্ষণেই দপ করে জ্বলে উঠলেন তিনি, খেললেন তিন অঙ্কের দারুণ একটা ইনিংস।

জয়-পরাজয় পরের কথা, স্রেফ মান-সম্মান রক্ষা করতেই অসম্ভব সাধন করতে হতো পাকিস্তানকে। অধিনায়ক হিসেবে অসম্ভবকে সম্ভব করার দায়িত্বটা নিয়েছেন শান মাসুদ নিজেই। বাবর আজমকে নিয়ে উদ্বোধনী জুটিতে বোর্ডে যোগ করেছেন দুইশোর বেশি রান। তাতেই ঝড় উঠেছে রেকর্ড বইয়ে।

প্রথম ইনিংসে যে বোলারদের বিপক্ষে দাঁড়াতেই পারেনি পাক ব্যাটারদের, সেই বোলারদের এবার এতটুকু পাত্তা দেননি এই বাঁ-হাতি। একেবারে শুরু থেকে আধিপত্য বিস্তার করে ব্যাট করেছেন তিনি – বুঝিয়ে দিয়েছেন সময়টা স্রেফ তাঁর একারই।

পাকিস্তান এখনও অনেক পিছিয়ে, তবে ইনিংস হারের শঙ্কা পুরোপুরি যায়নি। তবে ৪২১ রানে পিছিয়ে থেকেও যে নতুন করে লড়াই করা যায়, চোখে চোখ রেখে জবাব দেয়া যায় সেটা অন্তত শিখিয়ে দিয়েছেন এই তারকা। তাঁর ব্যাটে যে হার না মানার মানসিকতা ফুটে উঠেছে সেটা নিঃসন্দেহে ড্রেসিংরুমের আত্মবিশ্বাস বাড়িয়ে দিবে কয়েক গুণ।

টেস্ট ক্যারিয়ারের ষষ্ঠ শতক পেয়ে গিয়েছেন শান মাসুদ, তবে ম্যাচ বাঁচাতে কিংবা ঐতিহাসিক কোন মুহূর্তের জন্ম দিতে হলে তাঁকে এগিয়ে যেতে আরো অনেকটা পথ। তাঁর কাছে সেটাই প্রত্যাশা থাকবে সমর্থকদের, শুধু এই একটা ম্যাচ নয় ক্যারিয়ারের বাকি অংশ জুড়েও তাঁর পারফরম্যান্সের গ্রাফ কেবল উপরে উঠুক সেটাই প্রার্থনা ভক্তগোষ্ঠীর।

Share via
Copy link