কয়েকদিন আগে এক টিভি সাক্ষাৎকারে টি টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ফাইনালের কথা স্মরণ করে শাহীন আফ্রিদির বোলিং কোটা পূর্ণ না করার সমালোচনা করেন সাবেক পেসার শোয়েব আখতার। শোয়েবের মতে মহাগুরুত্বপূর্ণ সে ম্যাচে পেইন কিলার খেয়ে বল করতে পারতেন শাহীন। এবারে শোয়েবের সমালোচনার পালটা জবাব দিয়েছেন পাকিস্তানের সাবেক অধিনায়ক শহীদ আফ্রিদি।
পেসারদের জীবনে ইনজুরি এক নিত্য সঙ্গীর নাম। গোটা ক্যারিয়ার জুড়ে ইনজুরিকে সাথী করেই সামনে এগিয়ে যেতে হয় তাঁদের। ভারতের প্রধান পেসার জাসপ্রিত বুমরাহর কথাই ধরুন, জীবনের সেরা ফর্মে থাকা সত্ত্বেও ইনজুরির কারণে মিস করেছেন টি টোয়েন্টি বিশ্বকাপ।
পাকিস্তানের বাঁহাতি পেসার শাহীন আফ্রিদির গল্পটাও অনেকটা এমন, বিশ্বকাপের মাঝপথে ফিরলেও বিপত্তিটা বাঁধে ফাইনালে।মেলবোর্নে বিশ্বসেরার লড়াইয়ে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে মাত্র দুই ওভার বল করেই উঠে যেতে হয় তাঁকে। নিজের সেরা অস্ত্রকে হারিয়ে সেদিন আর পেরে উঠেনি পাকিস্তান, সন্তুষ্ট থাকতে হয় রানার্স আপ হয়েই।
এক সাক্ষাৎকারে শাহীনের ব্যাপারে কথা বলতে গিয়েই সাবেক পেসার শোয়েব জানান, শাহীনের জায়গায় তিনি থাকলে অবশ্যই পেইন কিলার খেয়ে মাঠে নামতেন। এমনকি প্রতি ডেলিভারির পর যদি ইনজেকশন নিতে হতো তাতেও পিছপা হতেন না তিনি। তাঁর এই মন্তব্যের পর সমালোচনার ঝড় উঠে গোটা পাকিস্তান জুড়ে। সাবেক ক্রিকেটার থেকে শুরু করে সাবেক ক্রিকেটাররা পর্যন্ত সমালোচনা করেছেন শোয়েবের।
এবারে সেই বিষয়েই মুখ খুলেছে শহীদ আফ্রিদি। তাঁর ভাষ্যমতে খেলোয়াড়ি জীবনে শোয়েব এত বেশি ইনজেকশন নিয়েছেন যে এখন তিনি ভালোমতো হাঁটতেও পারেন না।
এছাড়া খানিকটা ব্যঙ্গাত্নক সুরে বলেন কেবল মাত্র শোয়েবের পক্ষেই এটা সম্ভব কেননা পেইনকিলার এবং ইনজেকশন নেয়া সত্ত্বেও ইনজুরি নিয়ে খেলা চালিয়ে যাওয়া কঠিন। তাছাড়া এতে ইনজুরি দীর্ঘায়িত হওয়ার আশংকাও বেড়ে যায়। উল্লেখ্য যে শহীদ আফ্রিদির মেয়ের জামাই শাহীন শাহ আফ্রিদি।
শহীদ আফ্রিদি বলেন, ‘শোয়েব আখতার এত বেশি ইনজেকশন নিয়েছেন যে এখন ঠিকভাবে হাঁটতেও পারেন না। এটা অবশ্যই শোয়েবের দক্ষতা। এটা কঠিন হলেও সে এটা করতে পারতো। তবে সবাই শোয়েব আখতার নন। ইনজেকশন এবং পেইন কিলার নেবার পরও ইনজুরি নিয়ে খেলা কঠিন। কারণ এতে ইনজুরির আশংকা আরো বেড়ে যায়। থাক! শোয়েবকে ওর মতামত নিয়ে থাকতে দিন।’
২০২২ সালের জুলাইতে শ্রীলংকার বিপক্ষে টেস্টে হাঁটুর ইনজুরিতে পড়েন শাহীন শাহ আফ্রিদি। এশিয়া কাপ মিস করলেও বিশ্বকাপের মাঝপথে ফিরেই সেমিফাইনালে দুর্দান্ত এক ম্যাচজয়ী স্পেল উপহার দেন তিনি। যদিও ফাইনালের কোটা শেষ করতে পারেননি। পাকিস্তানের সমর্থকদের দৃঢ় বিশ্বাস শাহীন আফ্রিদি গোটা চার ওভার বল করতে পারলে ১৩৭ রানের ছোট লক্ষ্য নিয়েও সেদিন জিতে যেত পাকিস্তান।
বর্তমানে পিএসএলের দল লাহোর কালান্দার্সের নেতৃত্ব দিচ্ছেন শাহীন। গত মৌসুমে তাঁর অধীনেই প্রথমবারের মতো পিএসএলের শিরোপা জিতেছিল দলটি। এবারেও শিরোপা ধরে রাখার মিশনে শাহীনের উপরেই ভরসা রেখেছে ফ্যাঞ্চাইজিটি।