শুভমান গিল নামের চূড়া

শুভমান গিল রীতমত ছুটছেন। দুরন্ত গতিতে, দারুণ ছন্দে। সময়টা যে এখন তাঁরই। ক্যারিয়ারে একটুও যেন অপূর্ণতা রাখতে চাইছেন না ২৩ বছর বয়সী এ ওপেনার। ২০২৩ সালেই সব পাওয়া গিলের আক্ষেপ বলতে ছিল, আইপিএলে সেঞ্চুরি না পাওয়া। সানরাইজার্স হায়দ্রাবাদের বিপক্ষে শেষ ম্যাচে শতক হাঁকিয়ে সেই আক্ষেপও মেটালেন।

 

আর এতেই বিরল এক কীর্তি গড়েছেন শুভমান গিল। ক্রিকেট ইতিহাসের তৃতীয় ব্যাটার হিসেবে একই বছর টেস্ট, ওয়ানডে, আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি ও আইপিএলে সেঞ্চুরি করেছেন তিনি। এর আগে যে কীর্তি ছিল দুইজনের। একজন শ্রীলঙ্কার সাবেক অধিনায়ক মাহেলা জয়াবর্ধনে, আর অন্যজন অস্ট্রেলিয়ার ওপেনার ডেভিড ওয়ার্নার।

রাজীব গান্ধী স্টেডিয়ামে আইপিএলে এ সেঞ্চুরির আগে এ বছরেই শুভমান গিল ভারতের হয়ে ৫ টি সেঞ্চুরি করেছেন। যার মধ্যে তিনটি ছিল ওয়ানডেতে। আর বাকি দুই ফরম্যাটে একটি করে সেঞ্চুরি হাঁকিয়েছেন। এর মধ্যে আবার একটি ডাবল সেঞ্চুরিও আছে গিলের। গত জানুয়ারিতে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের প্রথম ওয়ানেডেতে ২০৮ রানের একটি ইনিংস খেলেছিলেন এ ব্যাটার।

 

সাদা পোষাকে শুভমান গিল এ বছরের একমাত্র সেঞ্চুরিটি পেয়েছিলেন গত মার্চে। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সে টেস্টের প্রথম ইনিংসে ১২৮ রানের ইনিংস খেলেছিলেন এ ব্যাটার। আর চলতি বছরে আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে সেঞ্চুরিটি হাঁকিয়েছিলেন নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে। গত ১ ফেব্রুয়ারিতে নরেন্দ্র মোদি স্টেডিয়ামে হওয়া সে ম্যাচে ৬৩ বলে ১২৬ রানের ইনিংস খেলে অপরাজিত ছিলেন গিল।

একই বছর টেস্ট, ওয়ানডে, আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি ও আইপিএলে সেঞ্চুরি করার বিরল কীর্তিতে সবার আগে নাম লেখানো মাহেলা জয়াবর্ধনে এ রেকর্ডটি গড়েছিলেন ২০১০ সালে। সে বছরের শুরুতেই মিরপুরে বাংলাদেশের বিপক্ষে ত্রিদেশীয় সিরিজে সেঞ্চুরি পান জয়াবর্ধনে।

 

এর কয়েক মাস বাদে এপ্রিলে, পাঞ্জাব কিংসের হয়ে কলকাতার বিপক্ষে ৫৯ বলে ১১০ রানের ইনিংস খেলেন তিনি। তার এক মাস পরে মে-তে ওয়েস্ট ইন্ডিজে হওয়া টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সেঞ্চুরির দেখা পান জয়াবর্ধনে তিনি। আর সে বছর একমাত্র টেস্ট সেঞ্চুরিটি তিনি পেয়েছিলেন ভারতের বিপক্ষে।

ডেভিড ওয়ার্নার এই কীর্তিতে নাম লেখানোর ক্ষেত্রে সবার আগে বেছে নিয়েছিলেন আইপিএলকে। ২০১৮ সালে বল টেম্পারিং কেলেঙ্কারিত আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অজি এ ক্রিকেটার দূরেই ছিলেন। তবে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফেরার আগে ২০১৯ এর আইপিএল। আর ঐ আসরেই তিনি রয়্যাল চ্যালঞ্জার্স ব্যাঙ্গালুরুর বিপক্ষে সেঞ্চুরি হাঁকিয়েছিলেন।

 

এরপর আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে নিজের প্রত্যাবর্তন ঘটান জুনে ওয়ানডে বিশ্বকাপ দিয়ে। আর প্রত্যাবর্তনটা রাঙিয়ে ঐ বিশ্বকাপেই তুলে নেন ৩টি সেঞ্চুরি। এরপর অক্টোবরে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সে বছরের একমাত্র টি-টোয়েন্টি সেঞ্চুরি করেন। আর বছরের শেষদিকে পাকিস্তানের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজে করেন টানা দুই সেঞ্চুরি। যার মধ্যে ছিল একটি ত্রিপল সেঞ্চুরিও।

ওয়ার্নারের ৩৩৫ রানের ঐ ইনিংসটা মনে রাখার আলাদা কারণও আছে বটে। একে তো নিষেধাজ্ঞা থেকে ফিরে এসেই ব্যাট হাতে রুদ্রমূর্তি ধারণ করেছিলেন, তার উপর ত্রিশতক পূরণের পর ওয়ার্নার ব্রায়ান লারার রেকর্ডের দিকেও চোখ রেখেছিলেন। তবে সে সময়ের অধিনায়ক টিম পেইন ইনিংসের সমাপ্তি ঘোষণা করলে ৩৩৫ রানে অপরাজিত থেকেই ইনিংস শেষ করতে হয় ওয়ার্নারকে।

লেখক পরিচিতি

বাইশ গজ ব্যাসার্ধ নিয়ে একটি বৃত্ত অঙ্কন করার চেষ্টা করি...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link