এক ওভার, ছয় উইকেট: হিমালয়ী কীর্তি

ছয় বলে ছয় ছক্কার সাক্ষী ক্রিকেট দুনিয়া বেশ কয়েকবার সাক্ষী হয়েছে। কিন্তু ছয় বলে ছয় উইকেট পড়ার ঘটনা আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে কখনোই ঘটেনি। ক্লাব ক্রিকেটে তৃতীয়বারের মত সাক্ষী হয়েছে ক্রিকেটবিশ্ব। নেপালের প্রো ক্লাব টি-টোয়েন্টি চ্যাম্পিয়নশিপে এই কীর্তি গড়েছেন মালয়েশিয়ার তারকা স্পিনার বিরানদ্বীপ সিং। রীতিমত অভিনব আর অবিস্মরণীয় এক কীর্তি।

গ্রুপ ‘এ’-এর এক ম্যাচে পুশ স্পোর্টস দিল্লীর বিপক্ষে মালয়েশিয়া ক্লাব ইলেভেনের হয়ে এই কীর্তি গড়েন বিরানদ্বীপ। ইনিংসের ২০ তম ওভারের আগে দিল্লীর রান তখন ৩ উইকেটে ১৩০। সেখান থেকে বিরানদ্বীপের অবিশ্বাস্য এক ওভারে পালটে যায় সবকিছু। ইনিংস শেষে দিল্লীর রান তখন ৯ উইকেটে ১৩২। এক ওভারে পাঁচ উইকেট শিকার করেন মাত্র ২ রানের বিনিময়ে। আর এর মাঝে একটি ছিল রান আউট। সব মিলে উইকেট পড়েছে ছয়টি।

প্রথম বলটি ছিল ওয়াইড। এরপর প্রথম বৈধ বলে ম্রিগাঙ্ক পাঠককে ৩৯ রানে ফেরান বিরানদ্বীপ। দ্বিতীয় বলে রান আউট হয়ে ফিরেন ইশান পান্ডে রান আউট হন ১৯ রানে। এরপর টানা চার বলে চার উইকেট নেন বিরানদ্বীপ সিং। তৃতীয় বলে দুর্দান্ত এক টার্নারে বোল্ড হয়ে ফিরেন অনিন্দ্য নাহারে।

চতুর্থ বলে মিড উইকেটের উপর দিয়ে মারতে গিয়ে বল মিস করায় বোল্ড হন বিশেষ সারোহা। এরপর জাতিন সিংহালকে নিজের বলেই নিজেই ক্যাচ নিয়ে ফেরানোর মধ্যে দিয়ে পূর্ণ করেন দুর্দান্ত এক হ্যাটট্রিক! সাথে সাথেই দুই হাত উঁচিয়ে পাকিস্তানি পেসার শাহীন আফ্রিদির মত উদযাপন করেন বিরানদ্বীপ।

ইনিংসের শেষ বলে স্পার্শকে বোল্ড করে ওভারে পাঁচ উইকেট শিকার করেন বিরানদ্বীপ সিং। ২ ওভারে মাত্র ৯ রানের বিনিময়ে শিকার করেন ৫ উইকেট। এর মধ্যে দিয়ে ক্রিকেট ইতিহাসে প্রথমবার ছয় বলে ছয় উইকেট পড়ার এক অনন্য দৃশ্য দেখলো ক্রিকেট দুনিয়া।

দিল্লি পুশ স্পোর্টসের দেওয়া ১৩৩ রানের জবাবে ব্যাট করতে নেমে সাত উইকেট ও ১৫ বল হাতে রেখেই জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় মালোয়শিয়া ক্লাব ইলেভেন। বল হাতে দাপটের পর ব্যাট হাতে ওপেনিংয়ে নেমে মাত্র ১৯ বলে ৩৩ রানের ঝড়ো ইনিংসে দলকে জয়ের ভিত গড়ে দেন বিরানদ্বীপ সিং। অনবদ্য অলরাউন্ড পারফরম্যান্সে ম্যাচ সেরা নির্বাচিত হন মালয়েশিয়ার এই তারকা অলরাউন্ডার।

২০১৭ সালে অস্ট্রেলিয়ার ক্লাব ক্রিকেটে এক ওভারে ৬ উইকেটে নেওয়ার অনন্য কীর্তি গড়েন অ্যালেড ক্যারি। গোল্ডেন পয়েন্ট ক্লাবের হয়ে ইস্ট বল্লারত ক্রিকেট ক্লাবের বিপক্ষে এই কীর্তি গড়েন ক্যারি। ক্যারি প্রথম ক্রিকেটার হিসেবে ৬ বলে শিকার করেন ৬ উইকেট। একই সাথে এক ওভারে সর্বোচ্চ উইকেট শিকারের প্রথম কীর্তিও এটি।

এরপর ২০২১ সালে দুবাইয়ে এক ওভারে ছয় উইকেট নেন দিল্লীতে জন্ম নেওয়া সংযুক্ত আরব আমিরাতের ক্রিকেটর হারষিত শেঠ। গ্লোবাল টি-টোয়েন্টি লিগে দুবাই ক্রিকেট কাউন্সিল স্কারলেটসের হয়ে খেলতে নামা হারষিত এই কীর্তি গড়েন হায়দ্রাবাদ হকস অ্যাকাডেমির বিপক্ষে। সেই ম্যাচে চার ওভার বোলিং করে মাত্র চার রান দিয়ে আট উইকেট নেন হারষিত। টি-টোয়েন্টিতে সেটাই এক ওভারে ছয় উইকেট নেওয়ার নজীর।

নেপাল টি-টোয়েন্টি টুর্নামেন্টে ওভারে ৬ উইকেট নিয়ে সব রকমের ক্রিকেটে এক ওভারে ছয় উইকেটের কীর্তিতে তৃতীয় স্থানে আছেন মালয়শিয়ার বিরানদ্বীপ সিং। যদিও অ্যালেড ক্যারি এটি করেছেন প্রথম শ্রেণির ফরম্যাটে। তাই বলা যায়, টি-টোয়েন্টিতে বিরানদ্বীপ দ্বিতীয় বোলার হিসেবে ৬ বলে ৬ উইকেটের পতন ঘটিয়েছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link