ভগ্নস্তূপে দাঁড়িয়ে স্মিথের একার লড়াই। আফ্রিকান বোলারদের চোখ রাঙানি উপেক্ষা করে খেললেন ৬৬ রানের ইনিংস। সাদা পোশাকে সংখ্যার বিচারে আহামরি কিছু না হলেও কখনো কখনো এমন ইনিংস শতকের থেকেও বড় হয়ে দাঁড়ায়। স্মিথ যেন সেই প্রমাণটাই করলেন।
যেখানে কিছুই করার থাকে না, সেখানে হার মেনে নেওয়া ছাড়া কোনো উপায়ও থাকে না। তবে একটা বিশ্বাস থাকে যে বিশ্বাসে ভর করে ঘুরে দাঁড়ানোর স্বপ্ন দেখা যায়। আর অস্ট্রেলিয়ার সেই বিশ্বাসটাই যেন স্টিভেন স্মিথ।
সকালের আলো যখন কেড়ে নিয়েছিল রাবাদা এবং মার্কো ইয়ানসেন, সেখানে একা দাঁড়িয়ে গেলেন স্মিথ। অন্য প্রান্তের আসা যাওয়ার মিছিলে অদৃশ্য ঢাল হয়ে দাঁড়ালেন।
৬৭ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে যখন প্রথম সেশন শেষ হয়, ঠিক এরপর স্মিথ পাল্টে ফেললেন নিজের রূপ। দেয়ালে পিঠ ঠেকে যাওয়া অবস্থায় চড়াও হলেন প্রোটিয়া বোলিং অ্যাটাকের বিরুদ্ধে।
সলিড টেকনিক, গেম রিড করার ক্ষমতা সেই সাথে দৃঢ় পরিকল্পনা — স্মিথ যে কেন সময়ের, সেই জানানটাই দিয়ে রাখলেন। ওয়েবস্টারকে সাথে নিয়ে প্রতিরোধ গড়ে তুললেন, ৭৯ রানের পার্টনারশিপে তখন দলের বিপর্যয় অনেকটা কেটে গেছে।
সাউথ আফ্রিকার পরিকল্পনা তখন প্রায় ভেস্তে যেতে বসেছিল স্মিথের ব্যাটিংয়ে। তবে পার্টটাইমার এইডেন মার্করামের শিকার হতে হয় শেষ পর্যন্ত। স্লিপে দাঁড়িয়ে থাকা ইয়ানসেনের হাতে তালুবন্দি হয়ে হয়তো আফসোসে পুড়েছেন।
যেভাবে স্মিথ খেলছিলেন, মনে হচ্ছিল বড় সংগ্রহের দিকে এগোবে তার ব্যক্তিগত ইনিংস। তবে ৬৬ রানে থেমে গেলেও এই ইনিংসের মাহাত্ম্য কোনো শতকের থেকেও কম নয়।
বিশ্বসেরা বোলিং অ্যাটাকের বিরুদ্ধে চোখ রেখে লড়াই করেছেন, দলকে ভগ্নদশা থেকে টেনে তুলেছেন। সবাই যখন হাল ছেড়ে দিয়েছিল তখনই তো ওই স্মিথ নামক ‘বিশ্বাস’ হাল ধরেছিল। তাই তো সংখ্যার মানদণ্ড ছাপিয়ে এই ইনিংসটা একটা প্রতিরোধের গল্প।