চলমান টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে আসলে বাংলাদেশ দল নানা সংকটে জর্জরিত। এর মধ্যে বেশি সংকট অবশ্যই ব্যাটিং নিয়ে। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ম্যাচটা নিয়ে তো কথাই নেই, এমনকি নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে জয় পাওয়ার ম্যাচেও ব্যাটাররা টি-টোয়েন্টির বিবেচনায় ছিলেন ব্যর্থই।
আর ব্যাটিং সংকটের কথা বলতে গেলে আলাদা করে বলতে হয় মিডল অর্ডারে সংকটের কথা। সেখানে আরেক দফা কাঠগড়ায় উঠবে দুই ব্যাটার – কাজী নুরুল হাসান সোহান ও ইয়াসির আলী চৌধুরী রাব্বি। তাদের নামের আয়তন যতই বড় হোক না কেন, টি-টোয়েন্টিতে এই বিশ্বকাপে এখন অবধি বড় কোনো প্রভাব তাঁরা রাখতে পারছেন না।
আর শেষ ম্যাচে তো একাদশের কম্বিনেশন সাজাতে গিয়ে ইয়াসির আলীকে বাদই পড়তে হয়। ব্রিসবেনে তিনি আদৌ ফিরবেন কি না – সে নিয়ে কোনো নিশ্চয়তা নেই। তবে, ব্যাটিং কোচ জেমি সিডন্স গ্যাবায় ম্যাচের আগেরদিন অনুশীলনে বেশি সময় দিলেন এই দু’জনকেই।
এদের দু’জনের মধ্যে সোহানের ভয়ডরহীন ক্রিকেট বরাবরই প্রশংসিত। তবে, এই বিশ্বকাপে যেন একেবারেই পারছেন না নিজেকে মেলে ধরতে। সেজন্য সোহান সেই পুরনো বিদ্যাটাই আবারও ঝালিয়ে নিলেন কোচের সাথে। খেলা ৭১-এর ক্যামেরায় ধরা পড়ল সেই দৃশ্য। অজি কোচের কাছ থেকে পাওয়ার হিটিংয়ের দীক্ষা নিলেন সোহান।
চলতি বছরে বাংলাদেশি ব্যাটারদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ছক্কা হাঁকান এই সোহান। বলা যায় এটাই সোহানের এক্স ফ্যাক্টর। তবে, বিশ্বকাপের মঞ্চে নিজের স্বভাবসুলভ ব্যাটিংটা যেন ভুলেই গিয়েছেন তিনি। ছক্কা হাঁকানো তো দূরের কথা, দুই ম্যাচে করেছেন যথাক্রমে ১৩ ও দুই রান। তার চেয়েও বড় কথা হল এর জন্য খেলেছেন ২৪ টি ডেলিভারি। এই পরিসংখ্যান টি-টোয়েন্টির সাথে মানানসই নয় একদমই।
ব্যাটিংটা দুই ম্যাচেই ভুগিয়েছে বাংলাদেশকে। আর সেই দায়ভার সোহানকেও নিতে হচ্ছে। এবার প্রতিপক্ষ যখন সামনে জিম্বাবুয়ে, তখন সোহানদের জ্বলে ওঠার কোনো বিকল্প নেই। সোহান অবশ্য জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে বেশ সফল।
তাঁর ক্যারিয়ার সেরা ইনিংস ২৬ বলে ৪২ রানের, যেটা এসেছিল ওই জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে, তাঁদেরই মাঠে। তাই অতীত ইতিহাস থেকে সোহান চাইলে ফেরার রসদ খুঁজে পেতেই পারেন।
যদিও, সেই জিম্বাবুয়ের সাথে এবারের জিম্বাবুয়ের পার্থক্য অনেক। চলতি আসরে জিম্বাবুয়ে যেন নিজেদের হারানো সুদিন ফিরিয়ে এনেছে। ভয়ডরহীন ক্রিকেট খেলে হারিয়েছে পাকিস্তানকে। এর আগে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ম্যাচ থেকে বৃষ্টির বদান্যতায়।
এবার চোখ রাখছে সেমিফাইনালের দিকে। তাই, তাদের সামনে সাকিব-সোহানদের জিততে হলে নিজেদের উজাড় করে দিয়েই খেলতে হবে।