সৌম্য সরকার, এক বিচিত্র চরিত্র। যে সম্ভাবনার স্লোগান তুলে হাজির হয়েছিলন তিনি, সেটা কখনোই প্রস্ফুটিত হয়নি। এরই মাঝে নতুন এক সম্ভাবনার দুয়ার উন্মোচিত করেছেন সৌম্য সরকার। জাতীয় ক্রিকেট লিগে (এনসিএল) ধারাবাহিক পারফরমার তিনি। সাদা পোশাকে হতে পারে তার ক্যারিয়ারের পুনর্জীবন।
এনসিএলে এখন অবধি ছয়টি রাউন্ডের খেলা অতিবাহিত হয়েছে। এই ছয় ম্যাচের ১২ ইনিংসেই ব্যাট হাতে বাইশ গজে হাজির হয়েছেন সৌম্য। এখন অবধি প্রথম শ্রেণির এই টুর্নামেন্টে সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক সৌম্য। ৪৮.০৮ গড়ে ৫৭৭ রান নিয়ে তার অবস্থান সবার উপরে। একটা দারুণ সময় পার করছেন তিনি লাল বলের ক্রিকেটে।
টেকনিক্যালি সলিড, হাতে রয়েছে শটের বাহার। এমন একজন খেলোয়াড়কে সেই অর্থে টেস্টে ব্যবহারই করেনি বাংলাদেশ দল। ১৬ ম্যাচের টেস্ট ক্যারিয়ার তার থমকে আছে। অথচ, ৩০ ইনিংসে একটা সেঞ্চুরি সহ, আরও চারটি হাফ সেঞ্চুরি রয়েছে। তবে ওই যে প্রত্যাশা আর বাস্তবতার মধ্যে রয়েছে ফারাক।

এমন সলিড ব্যাটারের কাছ থেকে সর্বদাই প্রত্যাশা থাকে আকাশচুম্বী প্রাপ্তির। কিন্তু সৌম্য কখনোই সেই অর্থে ধারাবাহিক হতে পারেননি। সাদা বলের ক্রিকেটে তিনি আসা-যাওয়াদের মিছিলে থেকেছেন ক্যারিয়ারের আদ্যোপান্ত। আর সেই প্রভাবটা পড়েছে তার টেস্ট ক্যারিয়ারেও।
অথচ, একজন ব্যাটার কিংবা বোলারের সামর্থ্য, সক্ষমতা ও দক্ষতা সব কিছুই পরীক্ষা হয় মূলত লাল বলের ক্রিকেটে। কিন্তু সৌম্য সেই অর্থে জাতীয় দলের টেস্ট সেটআপে বিবেচিত হন না সচারচর। টি-টোয়েন্টিতে এই মুহূর্তে জাতীয় দলের ভাবনাতে আসার সুযোগ সৌম্যর জন্য প্রায় অবরুদ্ধ। অন্যদিকে, ওয়ানডেতে দুয়ার খোলা থাকলেও- সুনিশ্চিত নয় কোন কিছুই।
আর এমন পরিস্থিতিতে টেস্ট দল হতে পারে সৌম্যর নতুন লাইফলাইন। বর্তমানে বাংলাদেশের টেস্ট দলের ওপেনিং পজিশনটা রয়েছে সাদমান ইসলাম ও মাহমুদুল হাসান জয়ের দখলে। তৃতীয় ওপেনার হিসেবে সেই অর্থে কেউ নেই ভাবনাতে। এমন সময়ে তৃতীয় ওপেনার হিসেবে সৌম্যর সংযুক্তি ওপেনারদের মধ্যে বাড়াতে পারে প্রতিযোগিতা।

টেস্ট চ্যাম্পিয়নশীপের ফাইনালের আগে অবধি বাংলাদেশের সামনে রয়েছে মোট ১২টি টেস্ট ম্যাচ খেলার সুযোগ। এর মধ্যে অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে দুইটি ও দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতেও রয়েছে দুইটি টেস্ট ম্যাচ। বাউন্স ক্যারি করা উইকেটে সৌম্যর সক্ষমতা তো কারোই অজানা নয়। অতএব, টেস্ট ব্যাটার হিসেবেও সৌম্যকে বিবেচনায় নেওয়ার এটাই মোক্ষম সুযোগ।











