রোম যখন পুড়ছিলো, নিরো তখন বাঁশি বাজাচ্ছিলেন – বাংলাদেশ ক্রিকেটেরও এখন একই অবস্থা, দেশের ক্রিকেট যখন তলানিতে পৌঁছে গিয়েছে, পোস্টার বয় সাকিব আল হাসান তখন নিজেকে কমেডিয়ান প্রমাণে ব্যস্ত। যুক্তরাষ্ট্রের বিপক্ষে দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টির পর সংবাদ সম্মেলনে এসে যেভাবে কথা বলেছেন তিনি, যেভাবে প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন এরপর আর তাঁকে সমর্থকদের প্রতি শ্রদ্ধাশীল ভাবার কোন সুযোগ নেই।
গণমাধ্যমের সামনে এসে এই অলরাউন্ডার একের পর এক রসিকতা করেছেন। কখনো বলেছেন অনুশীলন ঠিকঠাক করতে না পারার কারণেই হেরেছে বাংলাদেশ, কখনো আবার বলছেন দলের সমস্যা কি সেটা জানেনই না তিনি। আবার বিশ্বকাপে এমন পরাজয়ের প্রভাব থাকবে কি না এই প্রশ্নে মুচকি হেসে উত্তর, থাকতেও পারে, নাও পারে – মনে হয় যেন খুশির কিছু বলে ফেলেছেন।
গত এক বছর ধরেই অবশ্য সাকিব এলোপাতাড়ি কথার ফুলঝুরি ছিটিয়েছেন। সতীর্থকে সরাসরি আক্রমণ করে সাক্ষাৎকার দেয়া শুরু করে দ্বিমুখী আচরণ, সবই দেখা গিয়েছে তাঁর কাছে। ক্যালেন্ডারের পিছনে ফিরেই না-হয় সেসব দেখে নেয়া যাক।
২০২২ সালের শেষদিকে সাকিব জানিয়েছিলেন পরের বছর নাকি বাংলাদেশ ক্রিকেট অন্যতম সেরা বছর কাটাবে, অথচ এশিয়া কাপ ও বিশ্বকাপে ভরাডুবি সহ একের পর এক ব্যর্থতা উপহার দিয়েছিল ক্রিকেটাররা। তাছাড়া ওয়ানডে বিশ্বকাপের আগে ধোনির মত করে তিনি বলেছিলেন পুরো ফিট না হয়ে মাঠে নামা দেশের সাথে বেঈমানি, কিন্তু নিজেই বিশ্বকাপে একের পর এক ম্যাচ খেলেছেন চোখের সমস্যা নিয়েই।
সবশেষ জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে তৃতীয় টি-টোয়েন্টির পর এই বাঁ-হাতি দাম্ভিকতার সুরে বলেন, ছোট দলের সাথে খেলা বিশ্বকাপের আদর্শ প্রস্তুতি নয়। মজার ব্যাপার বটে, এমন মন্তব্যের পর জিম্বাবুয়ে ও যুক্তরাষ্ট্রের বিপক্ষে চার ম্যাচ খেলে তিনটিতেই হেরেছে লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা।
সাকিব কে বরাবরই উর্বর ক্রিকেট মস্তিষ্কের একজন মানুষ মনে করা হয়, কিন্তু লজ্জাজনক দুই দুইটি পরাজয়ের পর তাঁর কণ্ঠে ছিল সর্বোচ্চ মাত্রার অপেশাদারিত্ব ও অযৌক্তিক প্রতিক্রিয়া। বাংলাদেশ ক্রিকেটের দুঃসময়ে দাঁড়িয়েও সবচেয়ে বড় তারকাকে এতটুকু বিচলিত মনে হয়নি, ব্যাপারটি সত্যিই নাড়া দেয় বিবেককে। এমন নির্লজ্জ বেহায়াপনা মন থেকে দূর না হলে মাঠের খেলায় কমিটমেন্ট আসবে কিভাবে?