স্টিভ রোডস সম্ভবত বাংলাদেশের ইতিহাসের নিরীহতম কোচ ছিলেন। ফলে তাকে নিয়ে কখনো উচ্ছাসও ছিলো না। আবার তার বিদায়ে খুব শোকগাঁথাও রচনা হয়নি। তবে খেলোয়াড়রা বলেন, তিনি দারুন কোচ ছিলেন। একরকম বিব্রতকর ভাবেই চলে যেতে হয়েছিলো রোডসকে।
এতোদিন পর আবার ফিরে এসেছেন। এবার এসেছেন বিপিএলে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের মেন্টর হয়ে। ফিরে সংবাদ মাধ্যমের সামনে এসে অবশ্য বাংলাদেশ নিয়েই কথা বলতে হলো। আর সেখানে এতোটুকু লুকোছাপা না করে বললেন, বাংলাদেশের খেলা এখনও সেই আগের মতো করেই অনুসরণ করেন।
বাংলাদেশের খেলা কতটা অনুসরণ করেন, সেটা বলতে গিয়ে রোডস বলছিলেন, ‘আপনি জানেন, এটা একটু পাগলাটে কথা মনে হতে পারে, কিন্তু সত্যি হলো, আমি খুব খুব নিবিঢ়ভাবে বাংলাদেশের খেলা ফলো করি। আর আমি আসলে এখানে সময়টা খুব উপভোগ করেছি। আমার জবাব হলো, হ্যা। আমি বাংলাদেশের খেলা ফলো করি। কী হচ্ছে না হচ্ছে, খোজ নেই। আপনারা কী খবর করছেন, তাও নজরে রাখি।’
রোডসের পরের কথায় বোঝা গেলো, আসলে কোনো ফরম্যাটেই বাংলাদেশের খেলা মিস করেন না। একেবারে ধরে ধরে বলছিলেন, ‘আমি তো আসলে আপনাদের লেখা রিপোর্ট পড়ে জানতে পারি। ফলে আপনারা আমার চেয়ে ভালো জানেন। আমি যা পড়ি, তাতে বুঝতে পারি, কোচরা পরিশ্রম করছেন। কিছু ফল হয়তো পক্ষে আসেনি। আবার কিছু দারুন ফলাফল আছে। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে টেস্ট জেতাটা অসাধারন ছিলো। বাংলাদেশে যে দুটো টি-টোয়েন্টি সিরিজ হয়েছে, তাও দারুন ছিলো ‘
যে দেশটার প্রতি এতো টান, সেখানে ফিরতে পেরে যে খুব আনন্দে আছেন, সেটা আর বলতে হয় না। তারপরও রোডস বলছিলেন, ‘ফিরে এসে দারুন লাগছে। কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স আমাকে খুব ভালোভাবে স্বাগত জানিয়েছে। তবে আসলে বাংলাদেশে এলে এখানকার লোকেরা আসশেপাশে থাকলেই মনে হয় তারা খুবই অতিথিপরায়ন এবং বন্ধুত্বভাবাপন্ন। এখানে আবার আসতে পেরে খুবই সম্মানিত বোধ করছি। বাংলাদেশে এই ভালোমানুষদের কাছে আসাটা আমি খুব উপভোগ করি।’
অনুশীলনে এসেই দুই প্রিয় খেলোয়াড় রিয়াদ আর মাশরাফির সাথে দেখা হলো। নিজের সময়ের দুই অধিনায়ক নিয়ে রোডস বলছিলেন, ‘ওদের (মাশরাফি, রিয়াদ) সাথে খুব বন্ধুত্বপূর্ন আলাপ হলো। ওদের লম্বা সময় পর দেখে খুব নভালো লাগলো। তবে আমার এখানে আরও অনেকের সাথে ভালো সম্পর্ক ছিলো। ফলে তেমন বিশেষ কিছু নিয়ে আলাপ হয়নি, কোনো নাটকীয়তাও হয়নি। সবই বন্ধুত্বসূলভ। এদের আবার দেখতে পাওয়াটা তো দারুন ব্যাপার।’
রোডস এখানে খেলোয়াড়দের ভালোবাসা পেলেও বিদায়টা খুব সুখের হয়নি। তবে সে নিয়ে এতোদিন পর আর কথা বলতে চান না এই কোচ, ‘আমি আসলে এই আলোচনা বিসিবি বা সে সময়ের কিছু টেনে আনতে চাই না। সেটা ঠিক হবে না। যা হয়েছে, সেটা ইতিহাস হয়ে গেছে। আমি শুধু বলতে পারি, বিশ্বকাপের (২০১৯) দিকে ফিরে তাকালে দেখবেন, একমাত্র পাকিস্তানের বিপক্ষে ছাড়া প্রতিটা ম্যাচে আমরা ভালো খেলেছি। আমরা ভারত ও ইংল্যান্ডের বিপক্ষে পরাজয়ের মধ্যেও ভালো খেলেছি। আমরা বিশ্বকাপের মাঝে ভালো ক্রিকেট খেলেছি। আমাদের খুব ভালো কিছু জয় ছিলো। আমার মনে হয় না যে, লোকেরা সম্ভবত যতটা খারাপ ভাবে, তত খারাপ পারফরম্যান্স আমরা করেছি। আসলে একটা লোকের চলে যাওয়ার সঙ্গে তো অনেক লোকের সম্পৃক্ততা থাকে। আমি এখন আর সেসব নিয়ে কথা বলতে চাই না।’