সুরিয়া ‘দ্য গেম চেঞ্জার’

ঠিক সে কারণেই ‘গেমচেঞ্জার’ বলা যেতে পারে সুরিয়াকুমার যাদবকে।

‘ফিফটি ইন স্টাইল উইথ অ্যা ব্যাঙ্গার’ – এমন এক বাক্য হয়ত সাজিয়ে ফেলেছিলেন ধারাভাষ্যকাররা। কিন্তু লং অনে আটকা পড়েন সুরিয়াকুমার যাদব। আকাশ ছুঁতে চাওয়া বলটা বাউন্ডারির ওপারে গিয়ে পড়েনি। একরাশ হতাশাই নিয়ে সুরিয়া সাজঘরে ফিরেছেন বটে। কিন্তু কাজের কাজ করে দিয়েই তিনি ফিরেছেন। তাতে অবশ্য হতাশ হওয়ার কোন বিশেষ কারণ নেই।

সুরিয়াকুমার যাদব, ব্যাট হাতে এবারের বিশ্বকাপে ভারতের অন্যতম সেরা পারফরমার তিনি। প্রায় প্রতিটা ম্যাচেই তিনি রানের দেখা পেয়েছেন। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সেমিফাইনালে সেই ধারা অব্যাহত থেকেছে। ১৩০.৫৫ স্ট্রাইকরেটের একটা ইনিংস খেলে গেছেন তিনি। ৪৭ রানের এই ইনিংসটি কন্ডিশন প্রেক্ষাপটে ভারতের জন্যে ছিল ভীষণ কার্যকর।

কেননা বিরাট কোহলি, ঋষাভ পান্তরা ফিরেছেন দ্রুতই। আগ্রাসনের ভাষা ছাড়া দ্বিতীয় কোন ভাষা জানা নেই রোহিত শর্মার। আগ্রাসন ও দায়িত্ববোধের ব্যালেন্সটা করতে হয়েছে সুরিয়ার। রোহিতের সাথে গুরুত্বপূর্ণ এক পার্টনারশীপ গড়েছেন সুরিয়া। পাশাপাশি নিজেও যে স্লথ গতিতে রান তুলেছেন, তেমনটি নয়।

বৃষ্টিবিঘ্নিত ম্যাচটিতে উইকেটে বল প্রচুর হোল্ড করেছে। তাছাড়া বেশ নিচুও হয়ে গেছে বল। এমন একটা উইকেটে সুরিয়া ৪টা চার ও ২টা ছক্কা মেরেছেন। সেসব তার ব্যাটিং দক্ষতার পূর্ণ প্রতিচ্ছবি হয়েই ধরা দিয়েছে। বৃষ্টির বাঁধাও টলাতে পারেনি সুরিয়ার মনোযোগ। তাতে করে ভারত একটা স্বস্তিদায়ক সংগ্রহের পথেই এগিয়েছে। কন্ডিশন বিবেচনায় তা যথেষ্টও বলা যেতে পারে।

তাছাড়া দ্রুত দুই উইকেট পতনের পরে ইনিংসের হাল ধরার কাজটাও করেছেন সুরিয়া। রোহিতের সাথে তার গড়া ৭৩ রানের জুটিটা ম্যাচের মোমেন্টামই ঘুরিয়ে দিয়েছে। ইংল্যান্ডের বোলিং আক্রমণকে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলবার সুযোগ দেয়নি সেই জুটিই। রোহিতের বিদায়ের পর সুরিয়ার আরেকটু ধৈর্য্য ধরা প্রয়োজন ছিল- এমন মত হয়ত অনেকেই মনে করতে পারে।

কিন্তু বৈরী পরিস্থিতিতে উইকেটে টিকে থাকার চাইতেও প্রয়োজন ছিল যতদ্রুত সম্ভব স্কোরবোর্ডে রান তোলা। ৩৬টি বল খেলে অন্তত সে বিষয়টি সুরিয়ার মত ব্যাটারের বুঝে ফেলার কথা। তাইতো তিনি নিজেকে খোলসবন্দী করে ফেলেননি। বরং দলকে লড়াই করবার পুঁজি এনে দেওয়ার বার্তা দিতে চেয়েছেন। যদিও সফল হতে পারেননি। কিন্তু ‘ইন্টেন্ট’ ছিল পরিষ্কার।

পরবর্তীতে হার্দিক পান্ডিয়ারা সেই বার্তার উপরই আমল করবার চেষ্টা করেছেন। এই ম্যাচের ‘টোন’ ঠিক করে দিয়েছেন সুরিয়া। ঠিক সে কারণেই ‘গেমচেঞ্জার’ বলা যেতে পারে সুরিয়াকুমার যাদবকে। নীল জার্সিতে ১৯৬ রান করেছেন এবারের বিশ্বকাপে। প্রতিটা রানই যে বদলে দিয়েছে ম্যাচের পরিস্থিতি। অবশ্যই তা ভারতের পক্ষে। গেমচেঞ্জার না বলে আর কোন উপায় কি আছে?

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...